কুমিল্লার চান্দিনা ও
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সম্প্রতি ধরা পড়া জঙ্গিরা বান্দরবানের
নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারি ইউনিয়নে বৌদ্ধভিক্ষু হত্যাসহ তিনটি ঘটনায় জড়িত থাকতে
পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে
উপজেলার বাইশারি ইউনিয়নে দুটি হত্যাকাণ্ডসহ তিনটি ঘটনা ঘটে। এর পরপরই এলাকা
ছেড়েছিলেন তিন তরুণসহ পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে সম্প্রতি তিনজন ধরা পড়েছেন আর
দুজন আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বাইশারি বাজারে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে পুলিশের এক সদস্য আহত হন। এর তিন মাস পর ১৩ মে রাতে বাইশারির দুর্গম উপর চাকপাড়ার একটি বিহারে বৌদ্ধভিক্ষু ধাম্মা ওয়াসাকে (উ গাইন্দ্যা) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার দেড় মাস পর ২৯ জুন রাতে বাইশারি বাজারের পাশে ধাবনখালি মারমা পাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মংশৈলু মারমাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে দুটি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
ওই তিনটি ঘটনার পর কাছাকাছি সময়ে সুরত আলম ওরফে হাসান (৭ মার্চ চান্দিনায় পুলিশকে বোমা ছুড়ে মারতে গিয়ে আরেক জঙ্গিসহ গ্রেপ্তার হন), জহিরুল ওরফে জসিম (১৫ মার্চ সীতাকুণ্ডের জঙ্গি আস্তানায় বোমা, বিস্ফোরকসহ সস্ত্রীক গ্রেপ্তার) ও কামাল (স্ত্রী-সন্তানসহ সীতাকুণ্ডের ছায়নীড় বাড়িতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত) এলাকা ছাড়েন বলে জানান বাইশারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর এলাকায় ঘটে যাওয়া তিনটি বড় ঘটনার সঙ্গে ওই তিন জঙ্গি জড়িত থাকতে পারে। তাদের এসব ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান তিনি।
বৌদ্ধভিক্ষু ধাম্মা ওয়াসা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই কক্সবাজারের পরিদর্শক মুঠোফোনে মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
এদিকে সীতাকুণ্ডে ধরা পড়া জঙ্গি জহিরুলের বড় ভাই জিয়াবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ছবি দেখে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন কুমিল্লায় গ্রেপ্তার হওয়া হাসানের বাড়ি বাইশারির লম্বাবিল এলাকায়। তার প্রকৃত নাম সুরত আলম। জিয়াবুলের দাবি, তাঁর ভাই (জহিরুল) ও ভগ্নিপতিকে (কামাল) জঙ্গি হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে হাসান। বাইশারি বাজারে হাসানের পানের দোকান ছিল। সেখানে জহিরুল ও কামাল নিয়মিত যেত। হাসানের কাছে বাইরের লোকজনেরও আনাগোনা ছিল। তারা কেউ সাত মাস, কেউ নয় মাস আগে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে।
হাসানের (সুরত) মা ফাতেমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা আগে কক্সবাজারের মহেশখালীতে থাকতেন। সেখান থেকে ২০ বছর আগে লম্বাবিলের গ্রামে আসেন। তাঁর স্বামী নূর হোসেন কৃষিকাজ করেন। তিনি বলেন, সুরত মাদ্রাসায় পড়ত। বেশি দূর এগোতে পারেনি। ছয়-সাত মাস আগে সুরত তাঁকে জানায়, পানের দোকানের আয়ে সংসার চলছে না। চকরিয়ায় ব্যবসা করবে। এরপর বাড়ি ছাড়ে। মাসখানেক আগে একবার ফোন করে বলেছে, ভালো আছে, ধর্মের কাজ করছে। তার জন্য চিন্তা না করতে বলে।
বাইশারি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, তাঁর ওয়ার্ডের দুই বাসিন্দা দুই বছর আগে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা বলে চলে যায়। এরপর আর তাঁদের কোনো হদিস নেই। আরেকজন ছয় মাস আগে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ছেড়েছেন। তিনি মাঝেমধ্যে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোথায় থাকেন তা নির্দিষ্ট করে বলছেন না।
তথ্যসূত্রঃ প্রথমঅালো, বুদ্ধজ্যোতি চাকমা | ২০ মার্চ ২০১৭, ০১:০৭
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বাইশারি বাজারে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে পুলিশের এক সদস্য আহত হন। এর তিন মাস পর ১৩ মে রাতে বাইশারির দুর্গম উপর চাকপাড়ার একটি বিহারে বৌদ্ধভিক্ষু ধাম্মা ওয়াসাকে (উ গাইন্দ্যা) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার দেড় মাস পর ২৯ জুন রাতে বাইশারি বাজারের পাশে ধাবনখালি মারমা পাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মংশৈলু মারমাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে দুটি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
ওই তিনটি ঘটনার পর কাছাকাছি সময়ে সুরত আলম ওরফে হাসান (৭ মার্চ চান্দিনায় পুলিশকে বোমা ছুড়ে মারতে গিয়ে আরেক জঙ্গিসহ গ্রেপ্তার হন), জহিরুল ওরফে জসিম (১৫ মার্চ সীতাকুণ্ডের জঙ্গি আস্তানায় বোমা, বিস্ফোরকসহ সস্ত্রীক গ্রেপ্তার) ও কামাল (স্ত্রী-সন্তানসহ সীতাকুণ্ডের ছায়নীড় বাড়িতে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত) এলাকা ছাড়েন বলে জানান বাইশারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর এলাকায় ঘটে যাওয়া তিনটি বড় ঘটনার সঙ্গে ওই তিন জঙ্গি জড়িত থাকতে পারে। তাদের এসব ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান তিনি।
বৌদ্ধভিক্ষু ধাম্মা ওয়াসা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই কক্সবাজারের পরিদর্শক মুঠোফোনে মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
এদিকে সীতাকুণ্ডে ধরা পড়া জঙ্গি জহিরুলের বড় ভাই জিয়াবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ছবি দেখে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন কুমিল্লায় গ্রেপ্তার হওয়া হাসানের বাড়ি বাইশারির লম্বাবিল এলাকায়। তার প্রকৃত নাম সুরত আলম। জিয়াবুলের দাবি, তাঁর ভাই (জহিরুল) ও ভগ্নিপতিকে (কামাল) জঙ্গি হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে হাসান। বাইশারি বাজারে হাসানের পানের দোকান ছিল। সেখানে জহিরুল ও কামাল নিয়মিত যেত। হাসানের কাছে বাইরের লোকজনেরও আনাগোনা ছিল। তারা কেউ সাত মাস, কেউ নয় মাস আগে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে।
হাসানের (সুরত) মা ফাতেমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা আগে কক্সবাজারের মহেশখালীতে থাকতেন। সেখান থেকে ২০ বছর আগে লম্বাবিলের গ্রামে আসেন। তাঁর স্বামী নূর হোসেন কৃষিকাজ করেন। তিনি বলেন, সুরত মাদ্রাসায় পড়ত। বেশি দূর এগোতে পারেনি। ছয়-সাত মাস আগে সুরত তাঁকে জানায়, পানের দোকানের আয়ে সংসার চলছে না। চকরিয়ায় ব্যবসা করবে। এরপর বাড়ি ছাড়ে। মাসখানেক আগে একবার ফোন করে বলেছে, ভালো আছে, ধর্মের কাজ করছে। তার জন্য চিন্তা না করতে বলে।
বাইশারি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, তাঁর ওয়ার্ডের দুই বাসিন্দা দুই বছর আগে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা বলে চলে যায়। এরপর আর তাঁদের কোনো হদিস নেই। আরেকজন ছয় মাস আগে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ছেড়েছেন। তিনি মাঝেমধ্যে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোথায় থাকেন তা নির্দিষ্ট করে বলছেন না।
তথ্যসূত্রঃ প্রথমঅালো, বুদ্ধজ্যোতি চাকমা | ২০ মার্চ ২০১৭, ০১:০৭
No comments
Post a Comment