চট্টগ্রাম মুসলিম হলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত




বিগত ১৯ বছরেও পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। সরকারে ১০ শতাংশ সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি থাকার কথা কিন্তু সংখ্যা লঘু হিসেবে সরকারে সে অনুপাতে সংখ্যা লঘুদের প্রতিনিধিত্ব নেই।
গতকাল ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম মুসলিম ইনিষ্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর ও দক্ষিণ জেলা শাখার আয়োজনে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্ভোধনী বক্তব্যে এ সব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। তিনি তার দীর্ঘ বক্তৃতায পার্বত্য এলাকার সুখ-দুখের কথা উপস্থাপন করে বলেন, আমাদের দেশে অনেক ভাষা-ভাষী মানুষেরা বসবাস করে। এখানে অনেক ধর্মের লোকেরও বসবাস। তাই শুধুমাত্র বাঙ্গালীরা যদি দেশ, সরকার পরিচালনা করে, নেতৃত্ব দেয়,তবে আমরা সংখ্যালঘুরা, আমরা পাহাড়ী আদিবাসীরা কোথায় যাব আর কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?
সন্ত লারমা আরো বলেন, কেন বাঙ্গালী হিন্দুরা ভারতে আর বৌদ্ধরা মিয়ানমারে আশ্রয় নিচ্ছে? এ সব কারনে ১৪ দলীয় সরকারকে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক,গনতান্ত্রিক সরকার বলতে পারি না। তিনি আরো বলেন, আমরা অধিকার নিয়ে, মানুষের মত মানুষ হিসেবে দেশে বাস করতে চাই। আজ দেশে কোথাও না কোথাও সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন হচ্ছে, অত্যাচার হচ্ছে। কিন্তু কেন? কেন পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন হয় নি ? কেন সংখ্যালঘুরা আজ পদদলিত? এ সব প্রশ্ন রেখে সন্তু লারমা মাওলানা ভাষানীকে স্মরণ করে বলেন, এক সময় মাওলানা ভাষানীর সাথে আমি দেখা করলে তিনি আমাকে বলেন- লারমা তোমার অধিকার তোমাকে আদায় করতে হবে। তিনি মাওলানা ভাষানীর কথা স্মরণ করে আরো বলেন, আজ মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে।
অধ্যাপক ড. জিন বোধি ভিক্ষুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এড.সুলতানা কামাল,প্রধান বক্তা ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক এড. রানা দাশ, বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুগ্ন সম্পাদক নিতাই ঘোষ, চসিক কাউন্সিলর নিলু নাঘ,অধ্যাপক রনজিত কুমার, প্রিয় বালা সাহা,নির্মল চ্যার্টাজী,শ্যামল কুমার পালিত প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এড.সুলতানা কামাল বলেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। পাকিস্তান থেকে দেশকে আলদা করে আরেকটি পাকিস্তান সৃষ্টি করা আমাদের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশ হবে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ প্রগতিশীল রাষ্ট্র। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ গোটা বিশ্বে একজন অন্যতম রাষ্ট্র প্রধান। দেশের উন্নয়নে তিনি আজ চমক সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু কিছু কিছু কারনে উন্নয়নের ধারা ব্যহত হচ্ছে।
প্রধান বক্তার বক্তৃতায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক এড. রানা দাশ বলেন, আওয়ামী লীগ যদি আওয়ামী মুসলিম লীগ হয়ে যায় আর বিএনপি যদি জামাত হয়ে যায় তবে আমরা আড়াই কোটি মানুষ কোথায় যাব। তিনি আরো বলেন,পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পাহাড়ী ক্ষুদে নৃত্য শিল্পীদের পাহাড়ী গানের একক ও যৌথ নৃত্য পরিবেশিত হয়। এতে চট্টগ্রামের স্বনামধন্য বিভিন্ন শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
তথ্যসূত্র:http://shadhinotabd.com/

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.