ডক্টর জাকির নায়ক কর্তৃক বুদ্ধ ধর্মের নির্বাণ তত্বকে তৃষ্ণা যুক্ত বলা প্রসঙ্গে ভুল সংশোধন :
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ডক্টর জাকির নায়ক মহান বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্ব প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন ফেইসবুক এর মাধ্যমে আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে -
''তথাগত বুদ্ধ বলেছেন , প্রাণী গণ তৃষ্ণার কারণে বার বার জন্ম গ্রহন করে
এবং দুঃখ ভোগ করে থাকে। তৃষ্ণা বলতে বুঝানো হয় কোনো কিছু কামনা করা। অর্থাৎ
লোভ, দ্বেষ এবং মোহ । যদি তাই হয়, তবে নির্বাণ লাভ করার ইচ্ছা কি তৃষ্ণা
নয় ? নির্বাণ কামনা কি বার বার জন্মের কারণ নয় ?
বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ ৪২ টি বছরের অধ্যয়ন, গবেষণা এবং ধ্যান চর্চার মাধ্যমে যেই প্রত্যকখ অভিজ্ঞতা ও উপলব্দি আমার হয়েছে, তাতে প্রতিয়মান হয়েছে যে , বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্ব নিয়ে ডক্টর জাকির নায়েকের ধারণা টি যথার্থ নহে। তাই তিনি নির্বাণ কামনাকে তৃষ্ণার অন্তরগত করে দিয়েছেন। বাংলা ভাষায় তৃষ্ণা বলতে জল পানের ইচ্ছাকে বুঝায়। কিন্তু এই তৃষ্ণা শব্দটির পালি পারিভাষিক শব্দ তানহা। অর্থ হচ্ছে পাওয়ার আকাংখা ও ভোগের আকাংখা মিলেই হয় তৃষ্ণা। এই তৃষ্ণা তিন প্রকার যথা কামতৃষ্ণা, ভব তৃষ্ণা , ভিব তৃষ্ণা। কামতৃষ্ণা আবার দুই প্রকার , বস্তু কাম ও ক্লেশ কাম। বস্তু কাম হচ্ছে চোখ, কান, নাক, জিহ্বা ও দেহ এই পাঁচটি Sense orgen দ্বারা যেই কামনা বাসনার উত্পত্তি হয়, তা বস্ত কামের অন্তর গত।
অপরদিকে মনে মনে ভাবনা চিন্তা কল্পনাদির মাধ্যমে যেই কামনা বাসনার উত্পত্তি হয় তা ক্লেশ কামের অন্তর গত। ভব তৃষ্ণাকে অভিধর্মের চিত্ত চৈত্সিক বিচারে প্রাণীর চিত্ত বৃত্তির উপাদান নামক প্রবল আসক্তি বশে গ্রহনকে বুঝানো হয়েছে। ইহা কাম ভব, রূপ ভব, অরূপ ভব এই ত্রিভাগে বিভক্ত।
কিন্তু বিভব তৃষ্ণা নিয়ে যে সকল ব্যখ্যা তিনি দিয়েছেন, তা বুদ্ধের দর্শনের সাথে অসমঁজস পূর্ণ। বিভব তৃষ্ণা কে যদি নির্বাণ কামনার ইচ্ছা বলে ধরা হয়, তা ডক্টর জাকির নায়কের উক্তিকেই সমর্থন করা হয়। মূলত : বিভব তৃষ্ণা হচ্ছে উচ্ছেদ বাদের প্রতিশব্দ। উচ্ছেদ বাদের অভিমত হচ্ছে মরণের পর এই দেহ মনের আর কোন অস্তিত্ব থাকে না।
অতএব, স্বর্গ নরক এসব কাল্পনিক ভাওতা মাত্র। বুদ্ধের নির্বাণ তত্বটি এইধরনের কোনো উচ্ছেদ বাদ নহে। ইহা একান্তই সমীক্ষণ মূলক মনবিজ্ঞানের গবেষণা এবং বিচার বিশ্লেষণ ধর্মী ব্যক্তি নির্ভর উপলব্দি। তাই মনো বৃত্তির যেই লোভ দ্বেষ ও মোহ নামক তিনটি উপাদান ,তৎ দ্বারা জীবনে যাবতীয় দুঃখ ভোগান্তির জন্ম যে হয় এসম্পর্কে প্রত্যকখ অভিজ্ঞতা বুদ্ধ বিশ্ববাসীকে প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন সেই লোভের স্থলে অলোভ প্রবৃত্তি, দ্বেষের স্থলে মহামৈত্রীর প্রেম প্রবৃত্তি এবং মোহের স্থলে নির্মোহ প্রজ্ঞা প্রবৃত্তির স্থায়ী প্রতিষ্ঠা দান দ্বারা আপন মনে যেই অপার সুখ, অপার শান্তি লাভ হয়, তারই নাম নির্বাণ। প্রত্যেক বুদ্ধ অনুরাগী ও গবেষক, আশাকরি, এভাবেই বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্বকে বুঝতে চেষ্টা করা উচিত।
লিখেছেন :- শ্রীমৎ প্রজ্ঞাবংশ মহাথের, প্যারিস, ফ্রান্স।
বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘ ৪২ টি বছরের অধ্যয়ন, গবেষণা এবং ধ্যান চর্চার মাধ্যমে যেই প্রত্যকখ অভিজ্ঞতা ও উপলব্দি আমার হয়েছে, তাতে প্রতিয়মান হয়েছে যে , বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্ব নিয়ে ডক্টর জাকির নায়েকের ধারণা টি যথার্থ নহে। তাই তিনি নির্বাণ কামনাকে তৃষ্ণার অন্তরগত করে দিয়েছেন। বাংলা ভাষায় তৃষ্ণা বলতে জল পানের ইচ্ছাকে বুঝায়। কিন্তু এই তৃষ্ণা শব্দটির পালি পারিভাষিক শব্দ তানহা। অর্থ হচ্ছে পাওয়ার আকাংখা ও ভোগের আকাংখা মিলেই হয় তৃষ্ণা। এই তৃষ্ণা তিন প্রকার যথা কামতৃষ্ণা, ভব তৃষ্ণা , ভিব তৃষ্ণা। কামতৃষ্ণা আবার দুই প্রকার , বস্তু কাম ও ক্লেশ কাম। বস্তু কাম হচ্ছে চোখ, কান, নাক, জিহ্বা ও দেহ এই পাঁচটি Sense orgen দ্বারা যেই কামনা বাসনার উত্পত্তি হয়, তা বস্ত কামের অন্তর গত।
অপরদিকে মনে মনে ভাবনা চিন্তা কল্পনাদির মাধ্যমে যেই কামনা বাসনার উত্পত্তি হয় তা ক্লেশ কামের অন্তর গত। ভব তৃষ্ণাকে অভিধর্মের চিত্ত চৈত্সিক বিচারে প্রাণীর চিত্ত বৃত্তির উপাদান নামক প্রবল আসক্তি বশে গ্রহনকে বুঝানো হয়েছে। ইহা কাম ভব, রূপ ভব, অরূপ ভব এই ত্রিভাগে বিভক্ত।
কিন্তু বিভব তৃষ্ণা নিয়ে যে সকল ব্যখ্যা তিনি দিয়েছেন, তা বুদ্ধের দর্শনের সাথে অসমঁজস পূর্ণ। বিভব তৃষ্ণা কে যদি নির্বাণ কামনার ইচ্ছা বলে ধরা হয়, তা ডক্টর জাকির নায়কের উক্তিকেই সমর্থন করা হয়। মূলত : বিভব তৃষ্ণা হচ্ছে উচ্ছেদ বাদের প্রতিশব্দ। উচ্ছেদ বাদের অভিমত হচ্ছে মরণের পর এই দেহ মনের আর কোন অস্তিত্ব থাকে না।
অতএব, স্বর্গ নরক এসব কাল্পনিক ভাওতা মাত্র। বুদ্ধের নির্বাণ তত্বটি এইধরনের কোনো উচ্ছেদ বাদ নহে। ইহা একান্তই সমীক্ষণ মূলক মনবিজ্ঞানের গবেষণা এবং বিচার বিশ্লেষণ ধর্মী ব্যক্তি নির্ভর উপলব্দি। তাই মনো বৃত্তির যেই লোভ দ্বেষ ও মোহ নামক তিনটি উপাদান ,তৎ দ্বারা জীবনে যাবতীয় দুঃখ ভোগান্তির জন্ম যে হয় এসম্পর্কে প্রত্যকখ অভিজ্ঞতা বুদ্ধ বিশ্ববাসীকে প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন সেই লোভের স্থলে অলোভ প্রবৃত্তি, দ্বেষের স্থলে মহামৈত্রীর প্রেম প্রবৃত্তি এবং মোহের স্থলে নির্মোহ প্রজ্ঞা প্রবৃত্তির স্থায়ী প্রতিষ্ঠা দান দ্বারা আপন মনে যেই অপার সুখ, অপার শান্তি লাভ হয়, তারই নাম নির্বাণ। প্রত্যেক বুদ্ধ অনুরাগী ও গবেষক, আশাকরি, এভাবেই বুদ্ধের নির্বাণ তত্ত্বকে বুঝতে চেষ্টা করা উচিত।
লিখেছেন :- শ্রীমৎ প্রজ্ঞাবংশ মহাথের, প্যারিস, ফ্রান্স।
No comments
Post a Comment