বৌদ্ধ ধর্মকে নিয়ে তথাকথিত বামপন্থীয় দৃষ্টিভঙ্গীতে সমালোচনার প্রসঙ্গে কিছু ক্যাচাল
উপতিষ্য ভিক্ষু
কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুর দিকে মার্ক্সীয় দর্শন তথা পাশ্চাত্য দর্শনের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। তখন রাশিয়ার প্রগতি প্রকাশন ও রাদুগা প্রকাশনের প্রকাশিত "সামাজিক রাজনৈতিক জ্ঞানের অ আ ক খ" বইগুলো আমার পকেটে, ব্যাগে থাকত সবসময়। বাংলাদেশের সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বদরুদ্দীন উমর, আনু মুহাম্মদ, দাউদ হোসেন, হায়দার আকবর খান রনোসহ বাম ধাচের লেখকদের লেখা বই বা প্রবন্ধসমূহ আমি সাগ্রহে সংগ্রহ করতাম আর সময় পেলে পড়তাম। থার্ড ইয়ারে উঠে দাউদ হোসেনের লেখা "বঙ্গীয় মার্ক্সবাদের স্বরূপ" বইটি পড়ে বুঝতে পারি বাংলাদেশের তথাকথিত বামদের চরিত্র সম্পর্কে। এরপর থেকে সংশয়ী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পড়া শুরু করি। এ কারণে বড় ভান্তেদের কাছে "লাল বই অনুরাগী বস্তুবাদীর" আখ্যা পেয়েছিলাম। পরে আমার এক সতীর্থ বড় ভাইয়ের সংস্পর্শে আসায় আমার ব্যাক্তিগত দর্শনে পরিবর্তন আসে। আসতে আসতে বৌদ্ধ দর্শন নিয়ে সময় পেলে পড়ি আর ভান্তেদের সাথে আলোচনা করি। একজন চাকমা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক বাস্তবতা আমাকেও ভাবায়। সেই জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবন আমি কিভাবে কাটিয়েছি সেটা আমার সমকালীন বন্ধুরা সবাই জানে। সেসব বলে নিজের ঢোল নিজে পিঠাতে চাই না। কিন্তু এভাবে সমালোচলার নামে গণহারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নামে দুর্নাম রটানো আমার কাছে কখনই গ্রহণ যোগ্য নয়। কারণ আমি জেনেছি ঠিক এভাবেই একসময় ভান্তেদের মহৎ উদ্দেশ্যকে বিরোধিতা করা হয়েছিল। বিরোধিতার কারণে অনেক জাতীয় মহৎ কাজ আটকে গিয়েছিল। যে কোন সমাজে ভালো মন্দ দুটো দিক থাকে। ভিক্ষু সমাজেও থাকবে না তা নয়। বুদ্ধের সময়েও এসব ছিল। কিন্তু তাই বলে এভাবে ভিক্ষু জীবনকে লাভজনক জীবন......লাভের যুদ্ধ এসবের মানে কি? চাকমা সমাজে প্রব্রজ্জিত অবস্থায় যারা পড়াশুনা করে বা করেছে তারা জানে কোন ধরণের তিক্ত অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে যেতে হয়। অথচ এই চাপের মধ্যে বড় হয়ে যারা সমাজ তথা জাতির জন্য কিছু একটা করে দাড় করায় সেই প্রতিষ্ঠানের উপর একশ্রেণীর শকুনের দৃষ্টি পড়ে!! এই ধর্মের আশ্রয়ের মাধ্যমেই আমার মত যারা প্রান্তিক পর্যায়ের সন্তান তারা উঠে আসার সুযোগ পায় কোন তথাকথিত নাস্তিক ত্বত্তের মাধ্যমে নয়। নাস্তিকতার ফ্যাশান মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কিছু অংশের একটা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়। একজনের যদি সমালোচনার অধিকার থাকে তো আরেকজনের কি প্রতিসমালোচনা করার অধিকার নেই ? সমালোচনার নামে ইচ্ছেমত শব্দ প্রয়োগ করবেন অথচ তার প্রতিসমালোচনা করলে দলবেঁধে তেড়ে এসে ঠাট্টা মস্কারা করা হবে- এটাই কি প্রগতিশীলতার লক্ষণ?? গণহারে না বলে যারা ধর্মের নামে শিক্ষার বিরোধিতা করেছে, আশ্রমের বিরোধিতা করেছে, প্রতিবাদ সমাবেশের বিরোধিতা করেছে, অরহত সাজতেছে তাদেরকে নির্দিষ্ট করে সমালোচনা করুন যদি সত্যিকারে সমাজের প্রগতি চান। কই তাদের সমালোচনা তো করেনই না বরং তাদের সাফাই গাইতে দেখা যায়!! চাকমা ভাষায়- "শিং মাচ্ছ হাং ঝুলান ন হাং " জাতীয় আচরণ করে ঐসব পুদ্গলদের সমর্থন করেন অথচ তার/তাদের করে যাওয়া আচরণসমূহকে শুধুমাত্র "ঠিক ছিলনা" বলেই দায় সারা ভাব দেখান!! প্রগতিশীলতার এরকম ডাবলস্টান্ডার আচরণ কি সমতলের তথাকথিত বঙ্গীয় বাম পন্থা থেকে আমদানি করা???
কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুর দিকে মার্ক্সীয় দর্শন তথা পাশ্চাত্য দর্শনের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। তখন রাশিয়ার প্রগতি প্রকাশন ও রাদুগা প্রকাশনের প্রকাশিত "সামাজিক রাজনৈতিক জ্ঞানের অ আ ক খ" বইগুলো আমার পকেটে, ব্যাগে থাকত সবসময়। বাংলাদেশের সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বদরুদ্দীন উমর, আনু মুহাম্মদ, দাউদ হোসেন, হায়দার আকবর খান রনোসহ বাম ধাচের লেখকদের লেখা বই বা প্রবন্ধসমূহ আমি সাগ্রহে সংগ্রহ করতাম আর সময় পেলে পড়তাম। থার্ড ইয়ারে উঠে দাউদ হোসেনের লেখা "বঙ্গীয় মার্ক্সবাদের স্বরূপ" বইটি পড়ে বুঝতে পারি বাংলাদেশের তথাকথিত বামদের চরিত্র সম্পর্কে। এরপর থেকে সংশয়ী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পড়া শুরু করি। এ কারণে বড় ভান্তেদের কাছে "লাল বই অনুরাগী বস্তুবাদীর" আখ্যা পেয়েছিলাম। পরে আমার এক সতীর্থ বড় ভাইয়ের সংস্পর্শে আসায় আমার ব্যাক্তিগত দর্শনে পরিবর্তন আসে। আসতে আসতে বৌদ্ধ দর্শন নিয়ে সময় পেলে পড়ি আর ভান্তেদের সাথে আলোচনা করি। একজন চাকমা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক বাস্তবতা আমাকেও ভাবায়। সেই জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবন আমি কিভাবে কাটিয়েছি সেটা আমার সমকালীন বন্ধুরা সবাই জানে। সেসব বলে নিজের ঢোল নিজে পিঠাতে চাই না। কিন্তু এভাবে সমালোচলার নামে গণহারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নামে দুর্নাম রটানো আমার কাছে কখনই গ্রহণ যোগ্য নয়। কারণ আমি জেনেছি ঠিক এভাবেই একসময় ভান্তেদের মহৎ উদ্দেশ্যকে বিরোধিতা করা হয়েছিল। বিরোধিতার কারণে অনেক জাতীয় মহৎ কাজ আটকে গিয়েছিল। যে কোন সমাজে ভালো মন্দ দুটো দিক থাকে। ভিক্ষু সমাজেও থাকবে না তা নয়। বুদ্ধের সময়েও এসব ছিল। কিন্তু তাই বলে এভাবে ভিক্ষু জীবনকে লাভজনক জীবন......লাভের যুদ্ধ এসবের মানে কি? চাকমা সমাজে প্রব্রজ্জিত অবস্থায় যারা পড়াশুনা করে বা করেছে তারা জানে কোন ধরণের তিক্ত অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে যেতে হয়। অথচ এই চাপের মধ্যে বড় হয়ে যারা সমাজ তথা জাতির জন্য কিছু একটা করে দাড় করায় সেই প্রতিষ্ঠানের উপর একশ্রেণীর শকুনের দৃষ্টি পড়ে!! এই ধর্মের আশ্রয়ের মাধ্যমেই আমার মত যারা প্রান্তিক পর্যায়ের সন্তান তারা উঠে আসার সুযোগ পায় কোন তথাকথিত নাস্তিক ত্বত্তের মাধ্যমে নয়। নাস্তিকতার ফ্যাশান মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কিছু অংশের একটা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়। একজনের যদি সমালোচনার অধিকার থাকে তো আরেকজনের কি প্রতিসমালোচনা করার অধিকার নেই ? সমালোচনার নামে ইচ্ছেমত শব্দ প্রয়োগ করবেন অথচ তার প্রতিসমালোচনা করলে দলবেঁধে তেড়ে এসে ঠাট্টা মস্কারা করা হবে- এটাই কি প্রগতিশীলতার লক্ষণ?? গণহারে না বলে যারা ধর্মের নামে শিক্ষার বিরোধিতা করেছে, আশ্রমের বিরোধিতা করেছে, প্রতিবাদ সমাবেশের বিরোধিতা করেছে, অরহত সাজতেছে তাদেরকে নির্দিষ্ট করে সমালোচনা করুন যদি সত্যিকারে সমাজের প্রগতি চান। কই তাদের সমালোচনা তো করেনই না বরং তাদের সাফাই গাইতে দেখা যায়!! চাকমা ভাষায়- "শিং মাচ্ছ হাং ঝুলান ন হাং " জাতীয় আচরণ করে ঐসব পুদ্গলদের সমর্থন করেন অথচ তার/তাদের করে যাওয়া আচরণসমূহকে শুধুমাত্র "ঠিক ছিলনা" বলেই দায় সারা ভাব দেখান!! প্রগতিশীলতার এরকম ডাবলস্টান্ডার আচরণ কি সমতলের তথাকথিত বঙ্গীয় বাম পন্থা থেকে আমদানি করা???
No comments
Post a Comment