চন্দনাইশে বৌদ্ধ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড : মূল্যবান বুদ্ধমূর্তিসহ গুরুত্বপূর্ণ পান্ডুলিপি ভস্মীভূত


লিখেছেনঃ শ্যামল চৌধুরী বড়ুয়া

চন্দনাইশ পৌরসভার পূর্ব জোয়ারা এলাকায় সদ্ধম্ম বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র নামে একটি বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান (মন্দির) পুড়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এতে ছোট বড় বেশ কিছু মূল্যবান বুদ্ধমূর্তিসহ প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভাবনা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।

গত ২২ জানুয়ারি বুধবার রাত সাড়ে ৮টার সময় মোমবাতির আগুন থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক ভদন্ত জিনপাল ভিক্ষু জানিয়েছেন সম্ভবত বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ভাবনা প্রশিক্ষণার্থী এক শ্রমণ চৌকির উপর মোমবাতি জ্বালায় এবং পরে বিদ্যুৎ আসলেও তা না নেভানোতে এ ঘটনা ঘটে। পুরো ভাবনা কেন্দ্রে আগুন জ্বলে মুহূর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মূল ভাবনা কেন্দ্র, হল ঘর, গেস্ট রুম, স্টোর রুমসহ পুরো প্রতিষ্ঠানটি ভস্মীভূত হয়। ফলে বুদ্ধমূর্তিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই-পান্ডুলিপি ও ভাবনাকারীদের দানকৃত অষ্টউপকরণাদি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এলাকাবাসী জানায়, এ সময় আগুনের ভয়াবহতায় ভাবনাকেন্দ্রটি থেকে কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। পটিয়া দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই পুরো প্রতিষ্ঠানটি পুড়ে ছাই হয়। সেখানে রক্ষিত ১০ লক্ষাধিক টাকা দামের একটি মূল্যবান মূর্তি ও অন্যান্য মালামাল পুড়ে যায়। এতে প্রায় ২৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। বর্তমানে এর পাশে নির্মাণাধীন এক কক্ষে পরিচালক জিনপাল ভিক্ষুসহ আরো ৩ জন ভিক্ষু ও ৪ জন শ্রমণ (ভাবনা প্রশিক্ষণার্থী) কোন রকমে অবস্থান করছেন। ২০০৩ সালে স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে ধর্মপ্রাণ ভাবনাকারীদের অন্যতম ধর্মচর্চা কেন্দ্র হিসেবে প্রসারতা লাভ করেছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার নবনির্বাচিত সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত রেজা, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশা, পৌর মেয়র মোহাম্মদ আইয়ুব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তাঁরা নতুনভাবে ভাবনা কেন্দ্র নির্মাণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। গতকাল শুক্রবারও দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে এ ভাবনা কেন্দ্রের অবস্থা দেখতে সেখানে ছুটে গেছেন।

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.