নেত্তি প্রকরণের মূল আলোচ্য বিষয়
** নেত্তি প্রকরণের মূল আলোচ্য বিষয় আলোচনা ?
উত্তর : প্রারম্ভিকা ঃ পালি সাহিত্যে ত্রিপিটকের বর্হিভূত অত্যন্ত মূল্যবান গ্রন্থ নেত্তি প্রকরণ। এটি আয়ুস্মান মহাকচ্চায়ন ভাষণ করেছেন এবং ভগবান বুদ্ধ স্বয়ং অনুমোদন করেছেন। এটি বুদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে জানার, বুঝার, অনুধাবন করার, সুত্র ব্যাখ্যাতে সঠিক শব্দ ব্যবহার করার এবং সর্বোপরি বুদ্ধের নির্দেশিত ধর্ম সঠিক ভাবে অনুশীলন করার বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্য। নিম্নে এর মূলবিষয়বস্তু আলোচনা করা গেল:
মূল আলোচ্য বিষয় ঃ নেত্তি প্রকরণ অর্থকথার পূর্ববতী পালি সাহিত্যে মিলিন্দ প্রশ্নের মত অথচ ভিন্ন ধরনের একটি গ্রন্থ। এর রচনাকাল ও রচয়িতার সম্পর্কে পন্ডিতদের যথেষ্ট মতবিরোধ আছে। গ্রন্থ শেষে এরুপ উক্তি আছে - এরুপে নেত্তি সমাপ্ত হল যা আয়ুস্মান মহাকচ্চায়ন ভাষণ করেছেন এবং ভগবান বুদ্ধ স্বয়ং অনুমোদন করেছেন এবং সংগীতিতে সংগীতি কারকগণ আবৃত্তি করেছেন। উক্ত উল্লেখ থেকে আমরা জানতে পারি নেত্তিপকরণ ত্রিপিটকের প্রাচীনতম গ্রন্থগুলোর মধ্য একটি। অর্থাৎ ইহা ত্রিপিটকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। আর্চায ধর্মপাল এর মতে নেত্তি শব্দের অর্থ শব্দের বিচার সদ্ধর্মের বিচার বা বিশ্লেষণ। উপযুক্ত গুরু ব্যতীত বুদ্ধের ধর্ম হৃদয়ঙ্গম করা দুষ্কর বা কঠিন। নেত্তি পকরন বিবিধ ভাবে বুদ্ধের ধর্ম বিশ্লেষণ করে পাঠকদের নির্বাণভিমূখে পরিচালিত করা হয়েছে। বুদ্ধের ধর্ম জ্ঞান লাভের পথ পরিচালিত করার উদ্দেশ্য গ্রন্থটি রচিত হয়েছে। ইহাতে বুদ্ধের সমগ্র উপদেশ ধারাবাছিক ভাবে সংক্ষিপ্তাকারে আলোচনা করা হয়েছে।
ভিক্ষু ঞান মালির মতে নেত্তি শব্দের অর্থ পথ প্রর্দশক বা পথ নিদের্শক। ইংরেজী অনুবাদে গ্রন্থটির নাম দেওয়া হয়েছে- ঞযব এঁরফব। সর্বাস্তিকাদের অভিধর্ম গ্রন্থ জ্ঞানপস্থানের সাতে নেত্তি পকরনের বহু সাদৃশ্য আছে। নেত্তি প্রকরনের রচনার পদ্ধতি সুশৃঙ্খল এবং বিষয় বস্তু ত্রুমশঃ উচ্চতর। এ গ্রন্থে প্রারম্ভে সঙগবার বা সারাংশ তারপর বিভাগ বারো। এভাবে গ্রন্থের আনুক্রমিক সুচী দেওয়া হয়েছে।
এই বিভাগবার তিনপ্রকার যথা- উদ্দেশবার, নিদ্দেশবার, পটিনিদ্দেশবার। উদ্দেশবার বিষয় সমূহ ষোড়শ প্রকার হার বিবিধ ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। পটিনিদ্দেশবার ষোড়শ প্রকার হারের বিশ্লেষণ বা সংযোগর বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
আচার্য ধর্মপাল হার সম্পাতে অর্থকথার বহু নতুন তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। বক্তব্য বিষয় আরো পরিস্ফুট করার জন্য ত্রিপিটক হতে বহু উদৃতি দিয়েছেন এবং মধ্য বিষয় সমূহ পূনঃ বিন্যাস করেছেন।
পটিনিদ্দেশবারো পাঁচ প্রকার নয় সমুট্ঠান এবং নেতিতে নয় প্রকার কুশল এবং নয় প্রকার অকুশল মোট আটারটি মুলপদ আলোচনা করা হয়েছে। গ্রন্থের শেষে সংক্ষিপ্তাকারে সাসন পট্ঠান বর্ণিত হয়েছে। গ্রন্থটি শ্রীমৎ শান্তরক্ষিত এবং ডা: সিতাংসু বিকাশ বড়–য়া মূল্যবান পূর্বাবাস লিখেছেন।
উপরোক্ত আলোচনায় দেখা যায় নেত্তিপ্রকরণ বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভের একটি যথাযথ সার্থক গ্রন্থ।
সাধনাজ্যোতি ভিক্ষু
বি.এ (অনার্স) এম.এ, এম. এড.
No comments
Post a Comment