তাইন্দং হামলার প্রতিবাদে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিক্ষোভ
সিউল: জুম্ম পিপলস নেটওয়ার্ক কোরিয়া আজ সোমবার সকালে তাইন্দং সেটলার
হামলার প্রতিবাদে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে
এক বিক্ষোভের আয়োজন করেছে। এ সময় তারা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার
প্রদর্শন করে ও শ্লোগান দেয়।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন জেপিএনকের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রনেল
চাকমা, ছোট চাকমা, শান্তি জীবন চাকমাসহ আরো অনেকে। এছাড়া কোরিয়ার বিভিন্ন
সংগঠনের প্রতিনিধিরা সংহতি বক্তব্য দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় সব কটি
টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিরা প্রেস কনফারেন্স নাম দিয়ে
আহুত এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন।
পরে তারা বাংলাদেশ
দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়।
এতে তাইন্দং হামলাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত মানবাধিকার লঙ্ঘনের
ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, ‘এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। একজন
বাঙালিকে অপহরণের গুজব শুনে সেটলাররা এই আক্রমণ শুরু করে। এ বিষয়ে অবগত
থাকা সত্বেও বিজিবি ও পুলিশ জুম্মদের রক্ষার জন্য আগাম কোন ব্যবস্থা
নেয়নি, যদিও তারা এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র
মতে, এই হামলা ছিল মাটিরাঙ্গা এলাকায় ২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত জুম্ম
জনগণের উপর পঞ্চম হামলা।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, এ্যমনেস্টি
ইন্টারন্যাশন্যাল, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ
মানবাধিকার রিপোর্ট ২০১২ এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো স্বীকার করেছে
যে, ‘১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির আগে জুম্মদের উপর ১৩ বার সংগঠিত
সাম্প্রদায়িক হামলা বা গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং চুক্তির পর ছোট বড় অসংখ্য
হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় হাজার হাজার জুম্ম নিহত ও তাদের শত শত
ঘরবাড়ি পুড়ে যায়।
‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে,
বাংলাদেশ সরকার ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামে
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ করতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে, যদিও তারা এ বিষয়ে
অবগত যে, জুম্ম ও অজুম্মদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সাম্প্রদায়িক সংঘাতে পরিণত
হতে পারে। হামলাকারীদের কাউকে শাস্তি দেয়া হয়নি। অপরাধীদের দায়মুক্তির
সংস্কৃতি বাংলাদেশে এমন এক কাঠামোগত সমস্যার সৃষ্টি করেছে, যা অপরাধীদেরকে
বিনা বিচারে পার পেতে ও অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে
সাহায্য করে।’
শেষে তারা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো
অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের উপর সহিংসতা বন্ধের জন্য যথাযথ
ব্যবস্থা গ্রহণ; সাম্প্রদায়িক হামলার সাথে জড়িতদের শাস্তি দেয়া ও
ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া; পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী
প্রত্যাহার করা ও বাঙালি সেটলারদেরকে সরিয়ে এনে সমতলে সম্মানজনকভাবে
পুনর্বাসন করা; এবং জাতিসংঘের আদিবাসী অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণার প্রতি
সম্মান প্রদর্শন করা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগেণর
আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করা।
যেসব সংগঠন
স্মারকলিপিটি অনুমোদন করে সেগুলো হলো Jumma People’s Network-Korea(JPNK),
Buddhist Solidarity for Reform(BSR), Engaged Buddhist Monks and Nuns
Association in Korea), Gimpo Immigrant Center, Maha Council for
Supporting Migrants, Imagination For International Solidarity, Advocate
for Public Interest Law(APIL), People's Solidarity for Participatory
Democracy(PSPD), Buddhist Coalition for Economic Justice, Eco-Buddha,
Indramang, The Good Friends, The Korean monks group for clean sangga,
Korea Youth Buddhist Association, Human Asia, Share The World , Buddhist
Academy, Korea Institute For Religious Freedom, Gyujassi Church, The
refuge PNAN.
No comments
Post a Comment