:: তাইন্দংয়ে পাহাড়ি গ্রামে হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তার দাবিতে খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ ::

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নে গত ৩ আগস্ট পাহাড়ি গ্রামে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও নিরাপত্তার দাবিতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ আজ ২৮ আগস্ট বুধবার খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর এলাকার ঠিকাদার সমিতির ভবনের সামনে থেকে সকাল ১১টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি উপজেলা, চেঙ্গী স্কোয়ার হয়ে মহাজন পাড়ার সূর্যশিখা ক্লাবের সামনে ঘুরে চেঙ্গী স্কোয়ারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি নিকোলাস চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি সদর ইউনিটের সংগঠক চরণসিং তঞ্চঙ্গ্যা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য জিকো ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিখা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক অংকন চাকমা সমাবেশ পরিচালনা করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, তাইন্দং সাম্প্রদায়িক হামলার ২৬ দিন পার হলেও সরকার এখনো ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এছাড়া সরকারীভাবে ক্ষতিগস্তদের জন্য এ পর্যন্ত যেসব ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে তাও নিতান্ত অপ্রতুল।

বক্তারা আরো বলেন, হামলায় বইপত্র, কাপড়-চোপড় ও শিক্ষা সামগ্রী পুড়ে গিয়ে যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে না। যার ফলে তাদের শিক্ষা জীবন প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, হামলার সাথে সংশ্লিষ্টদের রক্ষা করতে প্রশাসন নানা তালবাহানা করছে। কিছুদিন আগে হামলা বিষয়ে বিজিবি একপেশে বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের সংশ্লিষ্টতাকে আড়াল করার চেষ্টা চালিয়েছে। অথচ হামলার দিন বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়া হামলাকারীদের মধ্যে এ পর্যন্ত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও অনেককে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পাহাড়িরা এখনো নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।

বক্তারা অবিলম্বে তাইন্দংয়ে পাহাড়ি গ্রামে হামলার সাথে জড়িত সকলকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপুরণ, পুনর্বাসন ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান, হামলার ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মাটিরাঙ্গা থানায় দায়েরকৃত মামলাটি চট্টগ্রামে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ, ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা দেয়া, পাহাড়িদের নিরাপত্তায় নিজস্ব গ্রাম প্রতিরক্ষা দল গঠনের অনুমতি প্রদান ও সেটলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসনের দাবি জানান। (সূত্র: সিএইচটি নিউজ বাংলা)

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.