ভিক্ষুদের বর্ষাবাসের গুরুত্ব
সাধনাজ্যোতি ভিক্ষু
বি, এ (অনার্স) এম. এ, এম. এড,
ভগবান দীর্ঘ ছয় বৎসর কঠোর তপস্যার পর গয়ার বোধিবৃক্ষের নিচে বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করেন। মানব জাতি তথা অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ভারতবর্ষে আনাচে-কানাচে তিনি ৪৫ বৎসর তাঁর সদ্ধর্ম প্রচার করেছেন। তাঁর প্রচারিত ৮৪ হাজার ধর্ম স্কন্ধ সমূহের মাঝে দেখতে পাই, জন্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যুকে রোধ করা সম্ভব। যারা জন্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যুকে রোধ করেন। তাঁর আর সংসারে আর্বতন বা জন্ম গ্রহন করতে হবেনা। তাঁর ধর্ম প্রচার জীবনে গৃহী ও ভিক্ষুদের জন্য বিভিন্ন বিধি বিধান দিয়ে গেছেন, এদের মধ্যে ভিক্ষুদের বর্ষাবাস অন্যতম। তিনি বর্ষাবাসের সময়ে ভিক্ষুগণকে সাধনা, অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার মাঝে ব্যাপৃত থাকতে বলেন এবং বর্ষাবাস সমাপনান্তে ভিক্ষুদের প্রতি বুদ্ধের নির্দেশ হল।
চরথ ভিক্খবে চারিকাং বহুজন হিতায় বহুজন সুখায়
লোকানু কম্পায় অথায় হিতায় সুখায় দেব মনুস্সনং
হে ভিক্ষুগণ বহুজনের হিতের জন্য এবং বহুজনের সুখের জন্য তোমরা দিকে দিকে বিচরণ কর, জগতের প্রতি অনুকম্পা পরবশতঃ হয়ে দেব-মনুষ্যের সুখ স¦াচ্ছন্দ্য বিধানের জন্য তোমরা বিচরণ কর।
বুদ্ধে এই বাণীতে উজ্জীবিত হয়ে বর্ষাবাসের পর বাংলাদেশের ভিক্ষু সংঘরা প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বুদ্ধে সেই বাণী গুলোকে জনসাধারণের মাঝে প্রচার করে লোভ-দ্বেষ-মোহ, হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে অবিদ্যা অন্ধকার বিদুরিত করে দুঃখ মুক্তির পথে অগ্রসর হয়ে নির্বাণ লাভ করতে সক্ষম হয়। আমি বড়–য়া সমাজে দেখেছি বড়–য়ারা যে ভাবে বর্ষাবাস সময়ে অমাবস্যা. অষ্টমী, পূর্ণিমা তিথি গুলোতে গুরুত্বসহকারে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা অষ্টশীল পালনের মাধ্যমে বুদ্ধ পূজা সহকারে প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে পালন করে থাকে। কিন্তু আমাদের পাহাড়ি বৌদ্ধ সমাজে সেরুপ দেখা যায় না। পাহাড়ে এত বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার, প্রসার সত্বেও কেন এরুপ পরিলক্ষিত হবে ভাবতে অবাক লাগে। তবে এর দায় ধর্ম গুরুরা এড়াতে পারে না। হয়তো তাঁদেকে বুঝাতে অক্ষমতা নয়তো অতি ধর্মান্ধতা কারণে নানা বিধি নিষেধের জন্য। আমাদের সমাজে এক শ্রেণী বৌদ্ধ ভিক্ষু অতি ধর্মান্ধতা কারণে নিজেকে জাহির করতে মার্গলাভী, ধুতাঙ্গধারী, অর্হৎ, ষড়াভিজ্ঞা অর্হৎ, অনুবুদ্ধ বলে প্রচার করে। শুধু পারে না যে সম্যকসম্বুদ্ধ লাভী পরিচয় দিতে। এ শ্রেণী বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই সমাজে তথা ধর্মে নিত্য নতুন নানা বিধি নিষেধ করে সমাজে দ্বিধা বিভক্তি সৃষ্টি করে ধর্মের পরিহানি সাধন করে থাকে। আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধি উদয় হবে।
বর্ষাবাস কি?
বর্ষাবাস বৌদ্ধ ভিক্ষ-ভিক্ষুনী, উপাসক ও উপাসিকাদের একটি স্মরণীয় উৎসব। এটি প্রতিটি বৌদ্ধ দেশে আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে সমারোহে পালিত হয়। শাক্যসিংহ বুদ্ধের প্রতিসন্ধি, সংসারত্যাগ, পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের নিকট ধম্মচক্র প্রবর্তন, ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত অধিষ্টান এদিনে সংগঠিত হয়। বর্ষাবাস, প্রবারণা, কঠিন চীবরদান এই তিনটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। কারণ বর্ষাবাস না করলে কোন ভিক্ষু কঠিন চীবর গ্রহন করতে পারে না। কঠিন চীবর গ্রহন না করলে ভিক্ষুগণ বহুপ্রকার সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়। এই কারণে ভিক্ষু ও গৃহীদের নিকট এটি খুব প্রয়োজনীয় ব্রত। এই বর্ষাব্রত গগণা করে ভিক্ষুদের বয়স স্থিত করা হয়। এই বর্ষাব্রতকে উপলক্ষ করে উপযুক্তবাস স্থান, অন্ন-বস্ত্রের সংস্থান, শিক্ষা, ঔষধ-পথ্যের ইত্যাদি নানাপ্রকার সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা গুলোর সমাধান করতে গিয়ে বুদ্ধকে বহু নতুন নতুন রীতি-নীতির প্রবর্তন ও পুরাতন নীতির সংস্কার সাধন করতে হয়।
মহাব¹ে ভিক্ষুদের বর্সাবাস সম্পর্কে অনেক প্রকার নিয়ম-নীতি উল্লেখ রয়েছে।বিনয় মতে, বৎসরকে চার ভাগে ভাগ করা হত। যথা- গ্রীষ্ম (চৈত্র, বৈশাখ,), বর্ষা (জৈষ্ঠ আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র), শরৎ (আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ), হেমন্ত ঋতু (পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন)। বিনয়ের নিয়মানুসারে ২৭ দিনে এক নক্ষত্র মাস। সুর্য মাস চন্দ্র মাসের তুলনায় বড়। সৌর বৎসের সাথে মিল রাখার জন্য প্রত্যেক মাস অন্তর একটি মল মাস হয়। অর্থাৎ যে বৎসর মলমাস হয়, সে বৎসর ১২ মাসের পরিবর্তে ১৩ মাসে বৎসর হয়।
ভগবান বুদ্ধ প্রবর্তিত আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিন মাস কাল একই বিহারে অবস্থান করে বষাৃব্রত পালন করেন। কোন কাজে যেতে হলে সকাল হওয়র পূর্বে বিহারে আসতে হয়। জুরুরী কাজ ছাড়াও বাসস্থানে বন্যজন্তু, সাপ, দুস্য, ডাকাতের উপদ্রব অথবা বাসস্থান জল, আগুন অথবা ঝটিকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হলে বর্ষাবাস ভঙ্গ করা যেতে পারে। বিহারের উপাসক-উপাসিকা অথ্যাধিক ঝগড়াটে ও তর্কপ্রিয় হলে বিহার ত্যাগ করা কোন দোষের নয়। সংঘের উদ্দেশ্য নি¤েœ যে কোন একটি নির্মাণ জন্য ১) বিহার ২) অড্চযোহ ৩) প্রাসাদ ৪) হর্ম ৫) উপাট্ঠানশালা ৬) অ¹িশাল ৭) কপ্পিয় কুটি ৮) চঙ্ক্রমণ কুটি ৯) গুহা ১০) পরিবেণ ১১) কোষ্টাগার ১২) চঙ্ক্রমণ শালা ১৩) কূপ ১৪) কূপৃহ ১৫)পৃষ্করিণী ১৬) ম-প ১৭) আরাম ১৮) আরাম নির্মাণে স্থান। গৃহস্থগণ নিজেদের ব্যবহারের জন্য পূর্বোক্তরুপ স্তান গুলো নির্মাণ করার সময় ভিক্ষুদের উপস্থিতি কামানা করলেও “সচে মে কোচি অন্তরায়ো সত্তম্ভন্তরে পুন নিবুত্তি সামি” এই অধিষ্ঠান করে এক সপ্তাহের জন্য বাহিরে থাকতে পারেন। কিন্তু পাহাড়ি বৌদ্ধদের বদ্ধমূল ধারণা ভিক্ষুরা বর্ষাবাস যাপন করলে আর বাহিরে থাকতে পারে না। বর্ষাবাসকে গুরুত্ব দিয়ে দায়ক সংঘ, ভিক্ষুসংঘ কায়ের দ্বারা বাক্যের দ্বারা ও মনের দ¦ারা সংযম অবলম্বনের মাধ্যমে দান, শীল, ভাবনা এবং বিভিন্ন প্রকার কুশল কর্ম সম্পাদন করে থাকেন। এ তিন মাসে ভিক্ষুরা ধ্যান, সাধনা, সমাধি, অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার মাধ্যমে তাঁদের চিত্ত পরিশুদ্ধ করে এবং তারা স্রোতাপত্তি, সকৃদাগামি, অনাগামী ও অর্হত্বফলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়কে বর্ষাবাস বলা হয়ে থাকে।
বর্ষাবাস এর বিধান ঃ
মানবপুত্র তখনকার সময়ে রাজগৃহে অবস্থান করেছিলেন রাজা বিম্বিসারের কলন্দক নিবাহে। তখন পর্যন্ত বুদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য বর্ষাবাস বিধান করেননি। তাই ভিক্ষুসংঘ সকলে এদিক ওদিক পর্ষ্যটন করিতেছিল। ভিক্ষুদের এমন অবস্থা দর্শন করে লোকেরা আন্দোলন, নিন্দা এবং প্রকাশ্য দুর্নাম প্রচার করতে লাগলেন, কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণগণ হেমন্ত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষার ও সবুজ তৃন পদ দলিত একেন্দ্রিয় বিশিষ্ট ভাব (বৃক্ষাদি) নিপীড়িত ক্ষুদ্র প্রানী সমূহ পদদলিত করে পর্যটন করতেছেন। অথচ অন্যতীর্থিক পরিব্রাজকগন যাদের ধম্ম দুবাখ্যাত, তাঁরা বর্ষাবাসে নিরত থাকেন। স্থায়ী ভাবে এক জায়গায় অবস্থান করে না পক্ষীরা বৃক্ষের উপর বাসা প্রস্তুত করে বর্ষাবাসে এক জায়গায় নিরত থাকে। অথচ শাক্যপুত্রীয় শ্রমণগণ, কি হেমন্তে, কি গ্রীষ্ম, কি বর্ষায় সবুজ তৃণ পদদলিত করে পর্যটন করতেছে। এ ভাবে যখন লোকেরা নিন্দা ও দুর্নাম করতে লাগলেন। অতপর ভিক্ষুগণ ভগবান কে এটি জানালেন, ভগবান ভিক্ষু গণের উদ্দেশ্য ধর্ম্ম কথা উত্থাপন করে বললেন হে, ভিক্ষুগণ আমি অনুজ্ঞা করতেছি তোমরা বর্ষাবাস করবে । তখন হতে ভিক্ষুগণ বর্ষাবাস পালন করে থাকেন।
বর্ষাবাসের অযোগ্য স্থান নিধারন ঃ
যে সময় ভিক্ষুগণ! বৃক্ষ কোটরে বর্ষবাস করছিলেন, তা দর্শনে জনসাধারণ নিন্দা ও প্রকাশ্য দুর্নাম প্রচার করল। কেন শ্রমণগণ বৃক্ষ কোটরে বর্ষাবাস করছিলেন। ভিক্ষুগণ, এটি ভগবান বুদ্ধকে জানালেন। বুদ্ধ বললেন, হে ভিক্ষুগণ! বৃক্ষ কোটরে বর্ষাবাস করবেনা। যে করবে তাঁর দুক্ক অপরাাধ হবে।
২. তখনকার সময়ে ভিক্ষুগণ বৃক্ষ শাখায় বর্ষাবাস করতেছিল। জন সাধারণ এটি অবলোকন করে আবার নিন্দা ও অপবাধ করতে লাগল। কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণ বৃক্ষ বিটপে বর্ষাবাস করতেছে? যেন তাঁরা শিকারি। ভিক্ষুগণ, ভগবানকে এটি অবগত করলে, ভগবান বললেন, ভিক্ষুগণ, তোমরা বৃক্ষ বিটপে বর্ষাবাস করতে পারবে না। যে করবে তার দুক্কুট অপরাধ হবে।
৩. তখন ভিক্ষুগণ উন্মুক্ত স্থানে বর্ষাবাস করতেছিল। তাঁরা বারিবর্ষনের সময় বৃক্ষ মূলে ছাঁেদর দিকে ধাবিত হলেন। ভিক্ষুগণ ভগবানকে এটি জানালে, ভগবান বললেন, হে ভিক্ষুগণ তোমরা উন্মুক্ত স্থানে বর্ষাবাস করতে পারবে না। যে করবে তার দুক্কুট আপত্তি হবে।
৪. সে সময়ে ভিক্ষুগণ শষ্যাসন ব্যতীত বর্ষাবাস করতে ছিল। এই জন্য তারা শীতোষ্ণ দ¦ারা অভিভূত হয়ে পড়লেন। ভিক্ষুগণ ভগবানকে অবগত করলেন, তখন বুদ্ধ বললেন, তোমরা শষ্যাসন ব্যতীত বর্ষাবাস করতে পারবে না, যে করবে তার দুক্কুট অপরাধ হবে।
৫. সে সময়ে ভিক্ষুগণ মুর্দ্দাখানায় বর্ষাবাস করতেছিল। এটি দেখে জন সাধারন, নিন্দা এবং প্রকাশ্যে দুর্নাম করতে লাগলেন, কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণগণ মুর্দ্দা খানায় বর্ষাবাস করতেছে যেন তারা শবগহক মুর্দ্দাবাস । ভিক্ষুগণ এটি ভগবানকে জানালে, ভগবান বললেন, হে ভিক্ষুগণ, মুর্দ্দা খানায় তোমরা বর্ষাবাস করতে পারবে না, করলে দুক্কুট অপরাধ হবে।
৬. সে সময়ে ভিক্ষুগণ ছত্র-তলে বর্ষাবাস করেছিলেন, জন সাধারণ তা দেখে আন্দোলন, নিন্দা, আর প্রকাশ্যে দুর্নাম করতে লাগলেন । কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণ ছত্র-তলে বর্ষাবাস করতেছিলেন। যেন তারা রাখাল বালক, ভিক্ষুগণ এটি অবগত করলে, বুদ্ধ বললেন হে ভিক্ষুগণ, ছত্র-তলে বর্ষাবাস করবেনা, যে করবে তার দুক্কুট অপরাধ হবে।
৭. সে সমযে ভিক্ষুগণ চাটিতে বর্ষাবাস করতেছিলেন, জন সাধারণ এটি অবগত হয়ে প্রকাশ্যে দুর্নাম অপবাদ আর নিন্দা করতে লাগলেন, কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণগণ, জালায় বর্ষাবাস করতেছেন, যেন তারা অন্য তীর্থিক। ভিক্ষুগণ এটি ভগবানকে জানালে, ভগবান বললেন, হে ভিক্ষুগণ জালায় বর্ষাবাস করতে পারবেনা, যে করবে তার দুক্কুট,অপরাধ হবে।
বুদ্ধ ভিক্ষুগণকে উপযুক্ত স্থানে বর্ষাবাস করার জন্য পূনঃ পূনঃ উপদেশ দিয়েছেন। মহাব¹ে বলা হয়েছে, যেখানে উপযুক্ত দায়ক বর্তমান, পড়া-শুনা, ধ্যানভ্যাসের যেখানে সুবিধা সেখানে বর্ষাবাস করা উচিত। নিকায়ের বিভিন্ন স্থানের উল্লেখ আছে গয়া, উরুবেলা, রাজগৃহ, নালন্দা, পাটলিপুত্র, একনালা, শাবস্তী, সাকেত, উজ্জয়িনী, ইত্যাদি স্থান বর্ষাবাস যাপনের উপযোগী।
গুহা আবাসের মধ্যে গৃধ্রকুট, চোরপ্রপাত, ইসিগিলি, সপ্তপর্ণী, সীতবন, সপ্পসো-ক পভার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বর্ষাবাসের সময় সমাধি করার উপযুক্ত স্থান গোতমক কন্দর, তিন্দুক, তপোদরাম, তপোদাকন্দর,ও ইন্দ্রশালা। বর্ষাবাসের জন্য অন্যান্য উপযুক্ত সংঘরামের মধ্যে জেতবন, অন্ধবন, অঞ্জনবন, কারকারাম, সুভগবন, ঘোসিতরাম এবং ন্যাগ্রোধারাম উল্লেখযোগ্য।
উপসংহার ঃ উপরের আলোচনায় আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনতী হতে পারি যে বর্ষাবাস ভিক্ষুগণের জীবনে ও দায়ক সংঘের অতিব দরকারী। কেননা সংযম, দান, শীলে ও ভাবনার মাধ্যমে মানুষেরা তার জীবনের উন্নতির দিকে ধাবিত করতে পারে। আর যেভাবে বুদ্ধ বর্ষাবাসের অযোগ্য স্থান নিধার্রন করেছেন তা থেকে বিরত থাকলে ভিক্ষুগণ দুক্কট অরপাধ থেকে পরিত্রাণ পাবে।
বি, এ (অনার্স) এম. এ, এম. এড,
ভগবান দীর্ঘ ছয় বৎসর কঠোর তপস্যার পর গয়ার বোধিবৃক্ষের নিচে বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করেন। মানব জাতি তথা অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ভারতবর্ষে আনাচে-কানাচে তিনি ৪৫ বৎসর তাঁর সদ্ধর্ম প্রচার করেছেন। তাঁর প্রচারিত ৮৪ হাজার ধর্ম স্কন্ধ সমূহের মাঝে দেখতে পাই, জন্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যুকে রোধ করা সম্ভব। যারা জন্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যুকে রোধ করেন। তাঁর আর সংসারে আর্বতন বা জন্ম গ্রহন করতে হবেনা। তাঁর ধর্ম প্রচার জীবনে গৃহী ও ভিক্ষুদের জন্য বিভিন্ন বিধি বিধান দিয়ে গেছেন, এদের মধ্যে ভিক্ষুদের বর্ষাবাস অন্যতম। তিনি বর্ষাবাসের সময়ে ভিক্ষুগণকে সাধনা, অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার মাঝে ব্যাপৃত থাকতে বলেন এবং বর্ষাবাস সমাপনান্তে ভিক্ষুদের প্রতি বুদ্ধের নির্দেশ হল।
চরথ ভিক্খবে চারিকাং বহুজন হিতায় বহুজন সুখায়
লোকানু কম্পায় অথায় হিতায় সুখায় দেব মনুস্সনং
হে ভিক্ষুগণ বহুজনের হিতের জন্য এবং বহুজনের সুখের জন্য তোমরা দিকে দিকে বিচরণ কর, জগতের প্রতি অনুকম্পা পরবশতঃ হয়ে দেব-মনুষ্যের সুখ স¦াচ্ছন্দ্য বিধানের জন্য তোমরা বিচরণ কর।
বুদ্ধে এই বাণীতে উজ্জীবিত হয়ে বর্ষাবাসের পর বাংলাদেশের ভিক্ষু সংঘরা প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বুদ্ধে সেই বাণী গুলোকে জনসাধারণের মাঝে প্রচার করে লোভ-দ্বেষ-মোহ, হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে অবিদ্যা অন্ধকার বিদুরিত করে দুঃখ মুক্তির পথে অগ্রসর হয়ে নির্বাণ লাভ করতে সক্ষম হয়। আমি বড়–য়া সমাজে দেখেছি বড়–য়ারা যে ভাবে বর্ষাবাস সময়ে অমাবস্যা. অষ্টমী, পূর্ণিমা তিথি গুলোতে গুরুত্বসহকারে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা অষ্টশীল পালনের মাধ্যমে বুদ্ধ পূজা সহকারে প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে পালন করে থাকে। কিন্তু আমাদের পাহাড়ি বৌদ্ধ সমাজে সেরুপ দেখা যায় না। পাহাড়ে এত বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার, প্রসার সত্বেও কেন এরুপ পরিলক্ষিত হবে ভাবতে অবাক লাগে। তবে এর দায় ধর্ম গুরুরা এড়াতে পারে না। হয়তো তাঁদেকে বুঝাতে অক্ষমতা নয়তো অতি ধর্মান্ধতা কারণে নানা বিধি নিষেধের জন্য। আমাদের সমাজে এক শ্রেণী বৌদ্ধ ভিক্ষু অতি ধর্মান্ধতা কারণে নিজেকে জাহির করতে মার্গলাভী, ধুতাঙ্গধারী, অর্হৎ, ষড়াভিজ্ঞা অর্হৎ, অনুবুদ্ধ বলে প্রচার করে। শুধু পারে না যে সম্যকসম্বুদ্ধ লাভী পরিচয় দিতে। এ শ্রেণী বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই সমাজে তথা ধর্মে নিত্য নতুন নানা বিধি নিষেধ করে সমাজে দ্বিধা বিভক্তি সৃষ্টি করে ধর্মের পরিহানি সাধন করে থাকে। আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধি উদয় হবে।
বর্ষাবাস কি?
বর্ষাবাস বৌদ্ধ ভিক্ষ-ভিক্ষুনী, উপাসক ও উপাসিকাদের একটি স্মরণীয় উৎসব। এটি প্রতিটি বৌদ্ধ দেশে আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে সমারোহে পালিত হয়। শাক্যসিংহ বুদ্ধের প্রতিসন্ধি, সংসারত্যাগ, পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের নিকট ধম্মচক্র প্রবর্তন, ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত অধিষ্টান এদিনে সংগঠিত হয়। বর্ষাবাস, প্রবারণা, কঠিন চীবরদান এই তিনটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। কারণ বর্ষাবাস না করলে কোন ভিক্ষু কঠিন চীবর গ্রহন করতে পারে না। কঠিন চীবর গ্রহন না করলে ভিক্ষুগণ বহুপ্রকার সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়। এই কারণে ভিক্ষু ও গৃহীদের নিকট এটি খুব প্রয়োজনীয় ব্রত। এই বর্ষাব্রত গগণা করে ভিক্ষুদের বয়স স্থিত করা হয়। এই বর্ষাব্রতকে উপলক্ষ করে উপযুক্তবাস স্থান, অন্ন-বস্ত্রের সংস্থান, শিক্ষা, ঔষধ-পথ্যের ইত্যাদি নানাপ্রকার সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা গুলোর সমাধান করতে গিয়ে বুদ্ধকে বহু নতুন নতুন রীতি-নীতির প্রবর্তন ও পুরাতন নীতির সংস্কার সাধন করতে হয়।
মহাব¹ে ভিক্ষুদের বর্সাবাস সম্পর্কে অনেক প্রকার নিয়ম-নীতি উল্লেখ রয়েছে।বিনয় মতে, বৎসরকে চার ভাগে ভাগ করা হত। যথা- গ্রীষ্ম (চৈত্র, বৈশাখ,), বর্ষা (জৈষ্ঠ আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র), শরৎ (আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ), হেমন্ত ঋতু (পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন)। বিনয়ের নিয়মানুসারে ২৭ দিনে এক নক্ষত্র মাস। সুর্য মাস চন্দ্র মাসের তুলনায় বড়। সৌর বৎসের সাথে মিল রাখার জন্য প্রত্যেক মাস অন্তর একটি মল মাস হয়। অর্থাৎ যে বৎসর মলমাস হয়, সে বৎসর ১২ মাসের পরিবর্তে ১৩ মাসে বৎসর হয়।
ভগবান বুদ্ধ প্রবর্তিত আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিন মাস কাল একই বিহারে অবস্থান করে বষাৃব্রত পালন করেন। কোন কাজে যেতে হলে সকাল হওয়র পূর্বে বিহারে আসতে হয়। জুরুরী কাজ ছাড়াও বাসস্থানে বন্যজন্তু, সাপ, দুস্য, ডাকাতের উপদ্রব অথবা বাসস্থান জল, আগুন অথবা ঝটিকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হলে বর্ষাবাস ভঙ্গ করা যেতে পারে। বিহারের উপাসক-উপাসিকা অথ্যাধিক ঝগড়াটে ও তর্কপ্রিয় হলে বিহার ত্যাগ করা কোন দোষের নয়। সংঘের উদ্দেশ্য নি¤েœ যে কোন একটি নির্মাণ জন্য ১) বিহার ২) অড্চযোহ ৩) প্রাসাদ ৪) হর্ম ৫) উপাট্ঠানশালা ৬) অ¹িশাল ৭) কপ্পিয় কুটি ৮) চঙ্ক্রমণ কুটি ৯) গুহা ১০) পরিবেণ ১১) কোষ্টাগার ১২) চঙ্ক্রমণ শালা ১৩) কূপ ১৪) কূপৃহ ১৫)পৃষ্করিণী ১৬) ম-প ১৭) আরাম ১৮) আরাম নির্মাণে স্থান। গৃহস্থগণ নিজেদের ব্যবহারের জন্য পূর্বোক্তরুপ স্তান গুলো নির্মাণ করার সময় ভিক্ষুদের উপস্থিতি কামানা করলেও “সচে মে কোচি অন্তরায়ো সত্তম্ভন্তরে পুন নিবুত্তি সামি” এই অধিষ্ঠান করে এক সপ্তাহের জন্য বাহিরে থাকতে পারেন। কিন্তু পাহাড়ি বৌদ্ধদের বদ্ধমূল ধারণা ভিক্ষুরা বর্ষাবাস যাপন করলে আর বাহিরে থাকতে পারে না। বর্ষাবাসকে গুরুত্ব দিয়ে দায়ক সংঘ, ভিক্ষুসংঘ কায়ের দ্বারা বাক্যের দ্বারা ও মনের দ¦ারা সংযম অবলম্বনের মাধ্যমে দান, শীল, ভাবনা এবং বিভিন্ন প্রকার কুশল কর্ম সম্পাদন করে থাকেন। এ তিন মাসে ভিক্ষুরা ধ্যান, সাধনা, সমাধি, অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার মাধ্যমে তাঁদের চিত্ত পরিশুদ্ধ করে এবং তারা স্রোতাপত্তি, সকৃদাগামি, অনাগামী ও অর্হত্বফলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়কে বর্ষাবাস বলা হয়ে থাকে।
বর্ষাবাস এর বিধান ঃ
মানবপুত্র তখনকার সময়ে রাজগৃহে অবস্থান করেছিলেন রাজা বিম্বিসারের কলন্দক নিবাহে। তখন পর্যন্ত বুদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য বর্ষাবাস বিধান করেননি। তাই ভিক্ষুসংঘ সকলে এদিক ওদিক পর্ষ্যটন করিতেছিল। ভিক্ষুদের এমন অবস্থা দর্শন করে লোকেরা আন্দোলন, নিন্দা এবং প্রকাশ্য দুর্নাম প্রচার করতে লাগলেন, কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণগণ হেমন্ত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষার ও সবুজ তৃন পদ দলিত একেন্দ্রিয় বিশিষ্ট ভাব (বৃক্ষাদি) নিপীড়িত ক্ষুদ্র প্রানী সমূহ পদদলিত করে পর্যটন করতেছেন। অথচ অন্যতীর্থিক পরিব্রাজকগন যাদের ধম্ম দুবাখ্যাত, তাঁরা বর্ষাবাসে নিরত থাকেন। স্থায়ী ভাবে এক জায়গায় অবস্থান করে না পক্ষীরা বৃক্ষের উপর বাসা প্রস্তুত করে বর্ষাবাসে এক জায়গায় নিরত থাকে। অথচ শাক্যপুত্রীয় শ্রমণগণ, কি হেমন্তে, কি গ্রীষ্ম, কি বর্ষায় সবুজ তৃণ পদদলিত করে পর্যটন করতেছে। এ ভাবে যখন লোকেরা নিন্দা ও দুর্নাম করতে লাগলেন। অতপর ভিক্ষুগণ ভগবান কে এটি জানালেন, ভগবান ভিক্ষু গণের উদ্দেশ্য ধর্ম্ম কথা উত্থাপন করে বললেন হে, ভিক্ষুগণ আমি অনুজ্ঞা করতেছি তোমরা বর্ষাবাস করবে । তখন হতে ভিক্ষুগণ বর্ষাবাস পালন করে থাকেন।
বর্ষাবাসের অযোগ্য স্থান নিধারন ঃ
যে সময় ভিক্ষুগণ! বৃক্ষ কোটরে বর্ষবাস করছিলেন, তা দর্শনে জনসাধারণ নিন্দা ও প্রকাশ্য দুর্নাম প্রচার করল। কেন শ্রমণগণ বৃক্ষ কোটরে বর্ষাবাস করছিলেন। ভিক্ষুগণ, এটি ভগবান বুদ্ধকে জানালেন। বুদ্ধ বললেন, হে ভিক্ষুগণ! বৃক্ষ কোটরে বর্ষাবাস করবেনা। যে করবে তাঁর দুক্ক অপরাাধ হবে।
২. তখনকার সময়ে ভিক্ষুগণ বৃক্ষ শাখায় বর্ষাবাস করতেছিল। জন সাধারণ এটি অবলোকন করে আবার নিন্দা ও অপবাধ করতে লাগল। কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণ বৃক্ষ বিটপে বর্ষাবাস করতেছে? যেন তাঁরা শিকারি। ভিক্ষুগণ, ভগবানকে এটি অবগত করলে, ভগবান বললেন, ভিক্ষুগণ, তোমরা বৃক্ষ বিটপে বর্ষাবাস করতে পারবে না। যে করবে তার দুক্কুট অপরাধ হবে।
৩. তখন ভিক্ষুগণ উন্মুক্ত স্থানে বর্ষাবাস করতেছিল। তাঁরা বারিবর্ষনের সময় বৃক্ষ মূলে ছাঁেদর দিকে ধাবিত হলেন। ভিক্ষুগণ ভগবানকে এটি জানালে, ভগবান বললেন, হে ভিক্ষুগণ তোমরা উন্মুক্ত স্থানে বর্ষাবাস করতে পারবে না। যে করবে তার দুক্কুট আপত্তি হবে।
৪. সে সময়ে ভিক্ষুগণ শষ্যাসন ব্যতীত বর্ষাবাস করতে ছিল। এই জন্য তারা শীতোষ্ণ দ¦ারা অভিভূত হয়ে পড়লেন। ভিক্ষুগণ ভগবানকে অবগত করলেন, তখন বুদ্ধ বললেন, তোমরা শষ্যাসন ব্যতীত বর্ষাবাস করতে পারবে না, যে করবে তার দুক্কুট অপরাধ হবে।
৫. সে সময়ে ভিক্ষুগণ মুর্দ্দাখানায় বর্ষাবাস করতেছিল। এটি দেখে জন সাধারন, নিন্দা এবং প্রকাশ্যে দুর্নাম করতে লাগলেন, কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণগণ মুর্দ্দা খানায় বর্ষাবাস করতেছে যেন তারা শবগহক মুর্দ্দাবাস । ভিক্ষুগণ এটি ভগবানকে জানালে, ভগবান বললেন, হে ভিক্ষুগণ, মুর্দ্দা খানায় তোমরা বর্ষাবাস করতে পারবে না, করলে দুক্কুট অপরাধ হবে।
৬. সে সময়ে ভিক্ষুগণ ছত্র-তলে বর্ষাবাস করেছিলেন, জন সাধারণ তা দেখে আন্দোলন, নিন্দা, আর প্রকাশ্যে দুর্নাম করতে লাগলেন । কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণ ছত্র-তলে বর্ষাবাস করতেছিলেন। যেন তারা রাখাল বালক, ভিক্ষুগণ এটি অবগত করলে, বুদ্ধ বললেন হে ভিক্ষুগণ, ছত্র-তলে বর্ষাবাস করবেনা, যে করবে তার দুক্কুট অপরাধ হবে।
৭. সে সমযে ভিক্ষুগণ চাটিতে বর্ষাবাস করতেছিলেন, জন সাধারণ এটি অবগত হয়ে প্রকাশ্যে দুর্নাম অপবাদ আর নিন্দা করতে লাগলেন, কেন শাক্য পুত্রীয় শ্রমণগণ, জালায় বর্ষাবাস করতেছেন, যেন তারা অন্য তীর্থিক। ভিক্ষুগণ এটি ভগবানকে জানালে, ভগবান বললেন, হে ভিক্ষুগণ জালায় বর্ষাবাস করতে পারবেনা, যে করবে তার দুক্কুট,অপরাধ হবে।
বুদ্ধ ভিক্ষুগণকে উপযুক্ত স্থানে বর্ষাবাস করার জন্য পূনঃ পূনঃ উপদেশ দিয়েছেন। মহাব¹ে বলা হয়েছে, যেখানে উপযুক্ত দায়ক বর্তমান, পড়া-শুনা, ধ্যানভ্যাসের যেখানে সুবিধা সেখানে বর্ষাবাস করা উচিত। নিকায়ের বিভিন্ন স্থানের উল্লেখ আছে গয়া, উরুবেলা, রাজগৃহ, নালন্দা, পাটলিপুত্র, একনালা, শাবস্তী, সাকেত, উজ্জয়িনী, ইত্যাদি স্থান বর্ষাবাস যাপনের উপযোগী।
গুহা আবাসের মধ্যে গৃধ্রকুট, চোরপ্রপাত, ইসিগিলি, সপ্তপর্ণী, সীতবন, সপ্পসো-ক পভার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বর্ষাবাসের সময় সমাধি করার উপযুক্ত স্থান গোতমক কন্দর, তিন্দুক, তপোদরাম, তপোদাকন্দর,ও ইন্দ্রশালা। বর্ষাবাসের জন্য অন্যান্য উপযুক্ত সংঘরামের মধ্যে জেতবন, অন্ধবন, অঞ্জনবন, কারকারাম, সুভগবন, ঘোসিতরাম এবং ন্যাগ্রোধারাম উল্লেখযোগ্য।
উপসংহার ঃ উপরের আলোচনায় আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনতী হতে পারি যে বর্ষাবাস ভিক্ষুগণের জীবনে ও দায়ক সংঘের অতিব দরকারী। কেননা সংযম, দান, শীলে ও ভাবনার মাধ্যমে মানুষেরা তার জীবনের উন্নতির দিকে ধাবিত করতে পারে। আর যেভাবে বুদ্ধ বর্ষাবাসের অযোগ্য স্থান নিধার্রন করেছেন তা থেকে বিরত থাকলে ভিক্ষুগণ দুক্কট অরপাধ থেকে পরিত্রাণ পাবে।
No comments
Post a Comment