পাহাড়ি ও বাঙালির দ্বন্দ্বের মূলহোতাদের খোঁজ মিলেছে

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালির দ্বন্দ্ব তৈরির জন্য দীর্ঘদিন থেকেই একটি চক্র কাজ করে চলেছে। এ চক্রটির পরিকল্পিতভাবে গত ৩ আগস্ট খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা থানার তাইন্দং ইউনিয়নে পাহাড়ি আদিবাসীদের ১১টি গ্রামে হামলা করে। এবার এ চক্রটির খোঁজ পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খাগড়াছড়ির তাইনন্দংয়ের ঘটনাস্থল সরেজমিন ঘুরে এসে দেশ টিভির রিপোর্টার ড্যানী দ্রং জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা থানার তাইনন্দং-ইউনিয়নে পাহাড়িদের ওপর হামলার ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই শুরু হয় পরিকল্পনা। ঘটনার কয়েকদিন আগে কথিত অপহৃত কামালের সঙ্গে এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম অপহরণ নাটক সাজানো নিয়ে আলোচনা করেন।
৩ আগস্ট পাহাড়িরা একজন বাঙালিকে অপহরণ করেছে—মসজিদের মাইকে এ ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় বাঙালিদের উত্তেজিত করে তোলে তারা। এরপর দলবল নিয়ে হামলা চালিয়ে ১১টি গ্রামের কয়েকশ বাড়িঘর ভাঙচুর এবং ৩০টির মতো বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। কয়েকটি মন্দিরেও ভাঙচুর চালান তারা।
স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালিদের অনেকেই বললেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
স্থানীয় এক বাঙালি বলেন, ‘একটি চক্র আছে, যারা পাহাড়কে অশান্ত করার জন্য পাহাড়ি-বাঙালির মাঝে দাঙ্গা সৃষ্টি করার জন্য সব সময় ওৎ পেতে আছে।’
এক পাহাড়ি বলেন, ‘ওরা (চক্র) তিনজনে আমার দোকানে মিটিং করে এই কাজটা করেছে।’
পরিকল্পিত এ হামলার মূল হোতা সিরাজ চেয়ারম্যান এবং কথিত অপহৃত কামালসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর এ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা বললেন, পাহাড়ী-বাঙালি দ্বন্দের মূলে যারা কাজ করছে তাদের কয়েকজনকে সনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘নেপথ্যে কারা আছে, কাদের উসকানি ছিল, এই ঘটনায় কারা কারা আছে, তাদেরকে আমরা মোটামুটি সনাক্ত করতে পেরেছি। যেহেতু আমি তদন্ত প্রতিবেদন সাবমিট করিনি, তাই আমি মনে করি নামগুলো এই মুহূর্তে বলা সমীচিন হবে না।’
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ-সামগ্রী দেয়া হয়েছে, নতুন বাড়ি তৈরি করে দেয়ার আশ্বাসও দেয়া হয়েছে। তবে ক্ষতির তুলনায় ক্ষতিপূরণ সীমিত বলে অভিযোগ পাহাড়ি নেতাদের।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা বলেন, ‘যে টাকা দেয়া হয়েছে সেগুলো প্রয়োজন অনুসারে এবং পুনর্বাসন অনুসারে অত্যন্ত নগন্য।’
ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান পাহাড়ি-বাঙালিরা।

সৌজন্যে দেশটিভি

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.