বৌদ্ধধর্মে অবিনশ্বর আত্মার অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়নি। মানুষ রুপ, বেদনা, সংজ্ঞা ,সংস্কার ও রিজ্ঞান এ পাঁচ উপাদানের সমন্বয়ে সৃষ্টি মাত্র । এই পাঁচ উপাদানের ভিতর ও বাহিরে অথবা উভয় অন্তবর্তী স্থানের কোথাও আত্মা নামে কোনো অজর, অমর, অক্ষয়, কোন বস্তু নেই। সুতরাং আত্মার জন্মান্তরবাদ ও বৌদ্ধ ধর্মে স্বীকৃত হয়নি। এতদসত্তেও বৌদ্ধ ধর্মে মানুষের পুনজন্ম স্বীকার করা হয়েছে। এখানে জন্মান্তর ও পুন্যজন্ম কথা দুইটি অর্থ সবিশেষ প্রাণিধান যোগ্য। জন্মান্তর কথার অর্থ এক অবিনাশ মৃত্যুহীন আত্মার জন্ম জন্মান্তরে দেহ থেকে দেহান্তরে পরিভ্রমণ করা। অর্থাৎ এক দেহ থেকে অন্য দেহ, এক জন্ম থেকে অন্য জন্মে হুবহু বা অবিকৃত অবস্থায় সংধাবিত ও সংসরিত হওয়া। আর পুন জন্ম কথার অর্থ হচ্ছে নিয়ত পরিবর্তনশীল একটি প্রবাহ দ্বারা পুনরায় জন্ম গ্রহন করা বা পুন্যরুপ উৎপন্ন হওয়া। সতত পরিবর্তন শীল রুপ , বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার ও বিজ্ঞান এই পাঁচ উপাদান ব্যতিত মানুষের ভিতর বা বাহিরে অন্য কোন শাশ্বত পদার্খ নেই। যাকে আত্মা বলে গ্রহন করা যেতে পানে। এরা অনিত্য এবং তাই দুঃখ দায়ক। ধর্মপদ গ্রন্থে বলা হয়েছে, সকল সংষ্কার অনিত্য, দুঃখময় ও সকলবস্তু অনাত্মা। বিশুদ্ধি মার্গের শিক্ষা হচ্ছে- এ সত্যতা যারা প্রজ্ঞা দ¦ারা দর্শন করে তারা আর দুঃখে আকৃষ্ট হন না।
রাজা মিলিন্দ যখন স্থবির নাগসেনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ভন্তে, আপনি কি নামে পরিচিত? নাগসেন উত্তরে বললেন, আমাকে সতীর্থগণ নাগসেন বলে ডাকে। কিন্তু ইহা নাম মাত্র। এর কোন অন্ত র্নিহিত অর্থ নেই। এটা ব্যবহারিক সংজ্ঞা মাত্র। যেমন, নাগসেন, সুরসেন, বীরসেন, বা সিংহ সেন ইত্যাদি ভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি রচিত হয়। কিন্তু তথাপি ইহা বাহ্যিক সংজ্ঞা মাত্র। এরূপ নামের কোন অন্তর্নিহিত অর্থ নেই। রাজা মিলিন্দ বললেন, যদি তাই হয়, তাহলে কে এই চীবর ও পিন্ডপাত গ্রহন করেছে? উত্তরে নাগসেন বললেন- এটাও পঞ্চস্কন্ধে সমষ্টি মাত্র। রাজা মিলিন্দ পুনরায় বললেন, ‘যদি আত্মাই না থাকে, তাহলে কে পুনজন্ম গ্রহণ করেছে? নাগসেন উত্তর দিলেন, নামরূপই পুনঃপুন জন্ম গ্রহন করেছে। নাম অর্থে চিত্তের চৈতসিক অবস্থা যেমন- বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার, ও বিজ্ঞান আর রূপ অর্থে, ক্ষিতি, অপ, তেজ মরুং এবং এই চার উপাদান থেকে যাবতীয় সৃষ্টি প্রত্যেক জীব নামরূপের অর্থাৎ নাম মহাভুতের সমষ্টি। এই নাম রূপ ও ক্ষণিক, মুহুর্তে মুহুর্তে পরিবর্তিত হচ্ছে। বরাবর এক রকম থাকে না।
বৌদ্ধ মতে এ জগতে স্থায়ী বা স্থির কোন কিছু নেই। অন্য কথায় প্রত্যক জিনিস অবিরাম পরিবর্তনশীল আইনের আওতাধীন। নদীর প্রতি বিন্দু জল সতত প্রবহমান। প্রতি মহুর্তে অন্তর মানুষের পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা একটি পরিবর্তনশীল জগতে বাস করছি এবং আমরা নিজেরা সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছি। বুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, সব্বে সংখরা অনিচ্চ- সমস্ত সংস্কারই অনত্যি। পরিবর্তন নিয়মে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- যদিও প্রত্যক কিছু পরিকর্তনীয় কোন কিছু নষ্ট বা ধ্বংস হয় না। শুধু এর আকৃতি পরিবর্তন হয়। কঠিন তরল এবং তরল বায়ুবীয়তে রুপান্তর হয়, কিন্তু কিছুই পুরোপুরি বিনষ্ট হয় না। পদার্থ হচ্ছে শক্তির প্রকাশ এবং তাই বিজ্ঞানের শক্তি সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী এটা নষ্ট বা ধ্বংস হয় না।
পরিবর্তন নীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বৈশিষ্ট হচ্ছে- এক অবস্থার সাথে পরবর্তী অবস্থার মধ্যে কোনো স্পষ্ট ও আলাদা সীমারেখা নেই। প্রত্যেকটি মুহুর্ত পরবর্তীতে রুপান্তরিত হচ্ছে। সমুদ্রের জল রাশি উত্থান পতনের মত। প্রত্যেকটি উত্থিত ঢেউয়ের পতন পরবর্তী ঢেউ উত্থানের সৃষ্টি করছে। প্রত্যক ঢেউ পরবর্তী ঢেউতে রুপান্তরিত হচ্ছে। এক ঢেউয়ের সাথে পরবর্তী ঢেউয়ের কোন সীমাবদ্ধ নেই। সৃষ্টির প্রত্যেকটি পরিবর্তনশীল ঘটনার বেলায়ও এ নিয়ম প্রযোজ্য। পরিবর্তন বা রুপান্তর একটি অবিরাম প্রক্রিয়া, একটি প্রবাহ- বর্তমানে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ধারায় সাথে পুরিপূর্ণ ভাবে সামঞ্জস্যপুর্ণ একটি ধারনা।
পুর্নজন্ম বিষয়ে সম্পৃক্ত অপর দুটি মৌলিক নীতি হচ্ছে- ঘটমান নীতি ও প্রবহমান নীতি। পরিবর্তন নীতি যখন বর্ণনা করছে অবিনশ্বও কিছু নেই। সর্বদা পরিবর্তন হচ্ছে, ঘটমান নীতি বর্ণনা করছে। প্রতিটি জিনিস, প্রতিটি মুর্হুত অন্য কিছু গঠন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত। ঘটমান নীতি বর্ণনা করছে পরিবর্তন নীতির সহায়ক বা স্বাভাবিক ব্যাপার। কখনও একই জিনিসের আবির্ভাব হচ্ছে না। অন্য একটি জিনিসের সৃষ্টি হচ্ছে। জগতে সমস্ত জিনিসের অবিরাম সৃষ্টি হচ্ছে জাগতিক নিয়ম। পরিবর্তন নিয়মে এটা অর্ন্তনিহিত বৈশিষ্ট। ঘটনার নীতির প্রবাহমান নীতি ঘটমান নিয়মের একটি অনুসিদ্ধান্ত বা স্বাভাবিক ব্যাপার। এক অবস্থা বা ঘটনা থেকে পরবর্তীতে কোন পার্থক্য সীমারেখা দেখা যায় না বলে ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়। এই নীতি নিয়মের আওতায় বৌদ্ধ মতে, পুনর্জন্ম হয়ে থাকে। এভাবে অবিনশ্বও ও শ্বাশত আত্মার অস্তিত্ব ছাড়াও এবং যতদিন পর্যন্ত তৃঞ্চার ক্ষয় প্রাপ্তি না হয়- ততদিন পর্যন্ত এই নামরূপ বা পঞ্চস্কন্ধ বিভিন্ন জন্মে ভিন্ন ভিন্ন যোনিতে পুনঃপুন জন্ম গ্রহণ করতে থাকে। তৃঞ্চার ক্ষয়প্রাপ্তি হলে পঞ্চস্কন্ধেরও ক্ষয় প্রাপ্তি ঘটে।
গৌতম বুদ্ধ তৃঞ্চা বা আসক্তিতে জন্মান্তরের কারণ বলেছেন। যেমন মুল উপাটিত না হলে বৃক্ষ ছিন্ন হলেও পুনরায় অঙ্কুরিত ও বর্ধিত হয়, তদ্রুপ তৃঞ্চা সম্পূর্ণ ছিন্ন না হলে পুনঃপুন দুঃখের আগমন হয়। এই তৃঞ্চা বিমুক্ত না হলে মানব ভব সাগর পার হতে পারে না। সুতরাং এই তৃঞ্চা মানবের নির্বাণ লাভের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে নির্বাণের পথে ধাবিত হতে হলে মানুষকে এই তৃঞ্চার হাত থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে। বুদ্ধ এই সংসারে পুনঃপুন জন্ম গ্রহণ করে অনেক সুখ দুঃখের সাথে পরিচিত হয়েছেন এবং অবশেষে বুদ্ধত্ব লাভের পর শান্তি লাভ করেছেন।
বৌদ্ধ ধর্মেও পুনজন্মবাদ কর্মবাদের উপরই প্রতিষ্ঠিত। বৌদ্ধ ধর্মে সংকল্পজাত কার্যাবলীকে কর্ম বলা হয়। এই সংকল্পজাত কার্যাবলী চিন্তায়, বাক্যে ও শারীরিক কার্যে প্রকাশ পায়। যা ভাল বা মন্দ যে কোনটি হতে পারে। সংকল্প বা ইচ্ছা উৎপন্ন হলে মানুষ কায়, বাক্য বা মনে তা সম্পাদন করে এবং তদনুযায়ী কাজের ফল ভোগ করে। প্রাণী জগতে এই কর্ম সম্পাদন ও এর ফল ভোগ অবিরাম গতিতে চলতে থাকে। ভাল কাজের পুরষ্কার বা মন্দ কাজের শাস্তি প্রদানের জন্য এখানে বাহিরে কোন অদৃশ্য শক্তি বা পক্ষের প্রয়োজন নেই। এই ভালমন্দ কাজের জন্য মানুষের অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিকর্তন অনিবার্য এবং পুরিপূর্ণভাবে নিজের ইচ্ছা কাজের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে অনেক ঘটনা শোনা যায় যে, কোনো কোনো শিশু তাদের পুর্বজন্ম কথা স্মরণ করতে পারে। পূর্বজন্মে কোথায় ছিল তা জানতে পারে এবং সেখানে যেতে ইচ্ছা হয়। আধুনিক কালের কিছু ভুতবিদ্যা, পিশাচবিদ্যা ও প্লানচেট হতেও পুনর্জন্ম স্বীকৃত হয়। ব্রাহ্মণ বংশের সন্তান ভিক্ষু বঙ্গীশ মৃতের খুলি স্পর্শ করে বলতে পারতেন মৃত ব্যক্তি কোথায় জন্ম গ্রহণ করেছে। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও এর কিছুটা পরিচয় পাওয়া যায়। কখনও কখনও আমরা এমন কোনো কোনো মানুষের সান্নিধ্যে আসি যাকে প্রথমবার দেখে মনে হয় তিনি পূর্বপরিচিত। ধম্মপদ গ্রন্থে ও অট্ঠকথায় এক পিতামাতার গল্প আছে যারা একদিন গৌতম বুদ্ধকে দেখে স্বীয় পুত্র বলে সম্বোধন করেছিলেন। বুদ্ধ তাদরে চিনতে পেরে বলেছিলেন, অতীতে বহুজন্মে তাঁর পিতা মাতা ছিলেন।
অবশ্যই একথা অনস্বীকার্য যে গর্ভধারণ মুর্হুতে মাতাপিতার মানসিক অবস্থা ভ্রƒণ সত্ত্বের চরিত্রের উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে এবং মাতার প্রকৃতি তার গর্ভস্থ সন্তানের চরিত্রে যথেষ্ট ছাপ ফেলে। কিন্তু শিশুর মানসিক ব্যক্তিত্বে অবিভাজ্য একত্ব কিছুতেই মাতাপিতা থেকে আসে না। এখানে উৎপাদনক্ষণ প্রকৃত কারণ অর্থাৎ পরবর্তী অবস্থার উৎপত্তির হেতুভূত পূর্বাবস্থা সম্বন্ধে ভূল করলে চলবে না। অবশ্য এর সাথে বহিরাগত সাহায্যকারী প্রভাব ও অবস্থার তথাও আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, যদিও সেগুলি কোনক্রমেই নবজাতকের উৎপত্তির কারণ নয়। কেবল মাত্র মাতাপিতার দ্বারাই যদি একটি অবিশ্লেষণীয় সামগ্রিক সত্তা হিসেবে নতুন শিশুর উৎপাদন সম্ভব হতো, তাহলে সন্তান মাত্রই মাতাপিতার চরিত্র ও গুনাবলী লাভ করতো। বাস্তব জগতে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়। যেমন মেধাবী শিশুর নিরক্ষর মাতাপিতার ঘরে জন্মায়। আবার শিক্ষিত ও উন্নত পরিবারের অসৎপ্রকৃতি ও অপরাধপ্রবণ সন্তানের জন্ম হতে দেখা যায়। বিশেষত জমজ শিশুদের মধ্যে প্রায়শ যে বিপরীত প্রবণতা দেখা যায়। তা কিছুতেই সম্ভব হতো না যদি কেবল মাত্র মাতাপিতাই তাদের জন্মের কারণ হতো।
আবার যদি কেই পূর্বজন্মে কায়, বাক্য ও মন দ্বারা অকুশল বা হীন কর্ম সস্পাদন করে এবং তাতে তার অবচেতন জীবন প্রবাহ বা ভবাঙ্গ ¯্রােত কলুষিত হয়, তাহলে পরবর্তী জন্মে যে সব কর্মেও যে ফল বা বিপাক প্রকাশ পাবে তার রুচিবিগর্হিত ও অকুশল হবে এবং ও দুঃখময় হবে। আর যদি কেহ পূর্বজন্মে কায়, মন ও বাক্য দ্বারা কুশল কর্ম সম্পাদন করে তাহলে তার কুশল কর্ম প্রভাবিত অবচেতন জীবন প্রবাহ পুন্য ও কুশলমন্ডিত হয়ে পরবর্তী জন্মে ঐ সব সুকৃতি সুফল ভোগ করবে এবং তার চরিত্র ও নতুন কর্মসমুহও সুন্দর ও আনন্দময় হয়।
সুতরাং দেখা যায় আমাদের তথাকথিত বর্তমান জীবন হচ্ছে অতীত জীবনের বর্তমান কর্মসম্পৃক্ত প্রতিফলন আর ভবিষ্যৎ জীবন হবে বর্তমান জীবনের ভবিষ্যৎ কর্মসম্পৃক্ত প্রতিফলন।
একটি স্বচ্ছ দর্পনে যেমন আমাদের মুখ সপরিবেশ হুবহু প্রতিফলিত হয়, শব্দ মাত্রই যেমন সপরিবেশ প্রতিধ্বনি হয় অথচ সেই প্রতিফলিত মুখে বা প্রতিধ্বনিত শব্দে যেমন মুখ বা শব্দ সংক্রমিত হয় না। তদ্রুপ পুনর্জন্ম চেতনায়ও এক জীবন থেকে পরবর্তী জীবনে কিছুই সংক্রমিত হয় না। বস্তুত মুহুর্তের পর মুহুর্ত, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর, জীবনের পর জীবন ধরে অবিচ্ছেদ্য উত্থান পতন, আগমন ও নির্গমন আদিকাল থেকে চলে আসছে এবং অনন্তকাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। এই নিয়ম পরিবর্তনশীলতাকে আমরা অবিদ্যা প্রভাবে বা মোহাচ্ছন্ন হয়ে ‘আমি” বা আত্ম বা জীব নামে অভিহিত করি। সমুদ্রপৃষ্টে যে ঢেউগুলি আপাতদৃষ্টিতে দ্রুততালে বেয়ে চলে সেগুলি বস্তুত প্রতিবারে শক্তি স্থানান্তরিতকরণের ফলে উদ্ভুত অবিরত সঞ্চরণশীল জলপিন্ডের উত্থান ও পতন ব্যতীত আর কিছুই নয়। ঐরুপ সুসম্পন্নভাবে চিন্তা করলে চরম অর্থে সংসার সমুদ্রে সঞ্চারণশীল কোনো স্থায়ী আত্ম পদার্থ দৃষ্ট হয় না। কেবলমাত্র বার বার জীবনের আকাঙ্খা ও উত্তেজনা তাড়িত শারীরিক ও মানসিক প্রক্রিয়ার অভিব্যক্তিই সংঘটিত হয়।
কর্মবাদ অনুসারে অষ্টাঙ্গিক মার্গ বা শীল ও প্রজ্ঞার পথ অনুশীলন করে অবিদ্যাজাত তৃঞ্চার বিনাশসাধন করে জন্মগতিকে নিরুদ্ধ করা যায়। জন্মগতি একবার নিরুদ্ধ হলে সঙ্গে সঙ্গে সকল প্রকার দুঃখের অবসান ঘটে। সেজন্য বুদ্ধ বলেছেন- অবিদ্যা বা অজ্ঞনতার অন্ধকার থেকে বিদ্যা বা প্রজ্ঞার আলোক আসে। এ অবদ্যিা হচ্ছে চতুরার্য সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞনতা। এজন্য বুদ্ধ বলেছেন, “হে ভিক্ষুগন! এ চতুরার্য সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞনতার জন্যই তোমার এবং আমি অসংখ্য জন্মজন্মান্তর ব্যাপী পুনঃপুন জন্ম গ্রহন করে অনেক দুঃখই ভোগ করেছি” বুদ্ধত্ব লাভ করার পর বুদ্ধ উদান গাথায় বলেন,
“হে তৃঞ্চা (গৃহকারক), এবার তোমকে দেখেছি।
তুমি দেহরূপ গৃহ নির্মাণ করতে পারবে না।
তোমার সমস্ত গৃহকুট, গৃহচুড়া ভগ্ন হয়েছে।
আমার চিত্ত সমস্ত তৃঞ্চা থেকে বিমুক্ত হয়েছে”
এভাবে বৌদ্ধ ধর্মে পুনর্জন্মবাদের ব্যাখ্যা প্রদান করে তা নিরোধ করার পন্থাও নির্দেশিত হয়েছে।
সাধনাজ্যোতি ভিক্ষু ( বি.এ (অনার্স), এম. এ (চবি), এম, এড (ডিআবি).
রাজা মিলিন্দ যখন স্থবির নাগসেনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ভন্তে, আপনি কি নামে পরিচিত? নাগসেন উত্তরে বললেন, আমাকে সতীর্থগণ নাগসেন বলে ডাকে। কিন্তু ইহা নাম মাত্র। এর কোন অন্ত র্নিহিত অর্থ নেই। এটা ব্যবহারিক সংজ্ঞা মাত্র। যেমন, নাগসেন, সুরসেন, বীরসেন, বা সিংহ সেন ইত্যাদি ভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি রচিত হয়। কিন্তু তথাপি ইহা বাহ্যিক সংজ্ঞা মাত্র। এরূপ নামের কোন অন্তর্নিহিত অর্থ নেই। রাজা মিলিন্দ বললেন, যদি তাই হয়, তাহলে কে এই চীবর ও পিন্ডপাত গ্রহন করেছে? উত্তরে নাগসেন বললেন- এটাও পঞ্চস্কন্ধে সমষ্টি মাত্র। রাজা মিলিন্দ পুনরায় বললেন, ‘যদি আত্মাই না থাকে, তাহলে কে পুনজন্ম গ্রহণ করেছে? নাগসেন উত্তর দিলেন, নামরূপই পুনঃপুন জন্ম গ্রহন করেছে। নাম অর্থে চিত্তের চৈতসিক অবস্থা যেমন- বেদনা, সংজ্ঞা, সংস্কার, ও বিজ্ঞান আর রূপ অর্থে, ক্ষিতি, অপ, তেজ মরুং এবং এই চার উপাদান থেকে যাবতীয় সৃষ্টি প্রত্যেক জীব নামরূপের অর্থাৎ নাম মহাভুতের সমষ্টি। এই নাম রূপ ও ক্ষণিক, মুহুর্তে মুহুর্তে পরিবর্তিত হচ্ছে। বরাবর এক রকম থাকে না।
বৌদ্ধ মতে এ জগতে স্থায়ী বা স্থির কোন কিছু নেই। অন্য কথায় প্রত্যক জিনিস অবিরাম পরিবর্তনশীল আইনের আওতাধীন। নদীর প্রতি বিন্দু জল সতত প্রবহমান। প্রতি মহুর্তে অন্তর মানুষের পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা একটি পরিবর্তনশীল জগতে বাস করছি এবং আমরা নিজেরা সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছি। বুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, সব্বে সংখরা অনিচ্চ- সমস্ত সংস্কারই অনত্যি। পরিবর্তন নিয়মে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- যদিও প্রত্যক কিছু পরিকর্তনীয় কোন কিছু নষ্ট বা ধ্বংস হয় না। শুধু এর আকৃতি পরিবর্তন হয়। কঠিন তরল এবং তরল বায়ুবীয়তে রুপান্তর হয়, কিন্তু কিছুই পুরোপুরি বিনষ্ট হয় না। পদার্থ হচ্ছে শক্তির প্রকাশ এবং তাই বিজ্ঞানের শক্তি সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী এটা নষ্ট বা ধ্বংস হয় না।
পরিবর্তন নীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বৈশিষ্ট হচ্ছে- এক অবস্থার সাথে পরবর্তী অবস্থার মধ্যে কোনো স্পষ্ট ও আলাদা সীমারেখা নেই। প্রত্যেকটি মুহুর্ত পরবর্তীতে রুপান্তরিত হচ্ছে। সমুদ্রের জল রাশি উত্থান পতনের মত। প্রত্যেকটি উত্থিত ঢেউয়ের পতন পরবর্তী ঢেউ উত্থানের সৃষ্টি করছে। প্রত্যক ঢেউ পরবর্তী ঢেউতে রুপান্তরিত হচ্ছে। এক ঢেউয়ের সাথে পরবর্তী ঢেউয়ের কোন সীমাবদ্ধ নেই। সৃষ্টির প্রত্যেকটি পরিবর্তনশীল ঘটনার বেলায়ও এ নিয়ম প্রযোজ্য। পরিবর্তন বা রুপান্তর একটি অবিরাম প্রক্রিয়া, একটি প্রবাহ- বর্তমানে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ধারায় সাথে পুরিপূর্ণ ভাবে সামঞ্জস্যপুর্ণ একটি ধারনা।
পুর্নজন্ম বিষয়ে সম্পৃক্ত অপর দুটি মৌলিক নীতি হচ্ছে- ঘটমান নীতি ও প্রবহমান নীতি। পরিবর্তন নীতি যখন বর্ণনা করছে অবিনশ্বও কিছু নেই। সর্বদা পরিবর্তন হচ্ছে, ঘটমান নীতি বর্ণনা করছে। প্রতিটি জিনিস, প্রতিটি মুর্হুত অন্য কিছু গঠন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত। ঘটমান নীতি বর্ণনা করছে পরিবর্তন নীতির সহায়ক বা স্বাভাবিক ব্যাপার। কখনও একই জিনিসের আবির্ভাব হচ্ছে না। অন্য একটি জিনিসের সৃষ্টি হচ্ছে। জগতে সমস্ত জিনিসের অবিরাম সৃষ্টি হচ্ছে জাগতিক নিয়ম। পরিবর্তন নিয়মে এটা অর্ন্তনিহিত বৈশিষ্ট। ঘটনার নীতির প্রবাহমান নীতি ঘটমান নিয়মের একটি অনুসিদ্ধান্ত বা স্বাভাবিক ব্যাপার। এক অবস্থা বা ঘটনা থেকে পরবর্তীতে কোন পার্থক্য সীমারেখা দেখা যায় না বলে ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়। এই নীতি নিয়মের আওতায় বৌদ্ধ মতে, পুনর্জন্ম হয়ে থাকে। এভাবে অবিনশ্বও ও শ্বাশত আত্মার অস্তিত্ব ছাড়াও এবং যতদিন পর্যন্ত তৃঞ্চার ক্ষয় প্রাপ্তি না হয়- ততদিন পর্যন্ত এই নামরূপ বা পঞ্চস্কন্ধ বিভিন্ন জন্মে ভিন্ন ভিন্ন যোনিতে পুনঃপুন জন্ম গ্রহণ করতে থাকে। তৃঞ্চার ক্ষয়প্রাপ্তি হলে পঞ্চস্কন্ধেরও ক্ষয় প্রাপ্তি ঘটে।
গৌতম বুদ্ধ তৃঞ্চা বা আসক্তিতে জন্মান্তরের কারণ বলেছেন। যেমন মুল উপাটিত না হলে বৃক্ষ ছিন্ন হলেও পুনরায় অঙ্কুরিত ও বর্ধিত হয়, তদ্রুপ তৃঞ্চা সম্পূর্ণ ছিন্ন না হলে পুনঃপুন দুঃখের আগমন হয়। এই তৃঞ্চা বিমুক্ত না হলে মানব ভব সাগর পার হতে পারে না। সুতরাং এই তৃঞ্চা মানবের নির্বাণ লাভের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে নির্বাণের পথে ধাবিত হতে হলে মানুষকে এই তৃঞ্চার হাত থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে। বুদ্ধ এই সংসারে পুনঃপুন জন্ম গ্রহণ করে অনেক সুখ দুঃখের সাথে পরিচিত হয়েছেন এবং অবশেষে বুদ্ধত্ব লাভের পর শান্তি লাভ করেছেন।
বৌদ্ধ ধর্মেও পুনজন্মবাদ কর্মবাদের উপরই প্রতিষ্ঠিত। বৌদ্ধ ধর্মে সংকল্পজাত কার্যাবলীকে কর্ম বলা হয়। এই সংকল্পজাত কার্যাবলী চিন্তায়, বাক্যে ও শারীরিক কার্যে প্রকাশ পায়। যা ভাল বা মন্দ যে কোনটি হতে পারে। সংকল্প বা ইচ্ছা উৎপন্ন হলে মানুষ কায়, বাক্য বা মনে তা সম্পাদন করে এবং তদনুযায়ী কাজের ফল ভোগ করে। প্রাণী জগতে এই কর্ম সম্পাদন ও এর ফল ভোগ অবিরাম গতিতে চলতে থাকে। ভাল কাজের পুরষ্কার বা মন্দ কাজের শাস্তি প্রদানের জন্য এখানে বাহিরে কোন অদৃশ্য শক্তি বা পক্ষের প্রয়োজন নেই। এই ভালমন্দ কাজের জন্য মানুষের অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিকর্তন অনিবার্য এবং পুরিপূর্ণভাবে নিজের ইচ্ছা কাজের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে অনেক ঘটনা শোনা যায় যে, কোনো কোনো শিশু তাদের পুর্বজন্ম কথা স্মরণ করতে পারে। পূর্বজন্মে কোথায় ছিল তা জানতে পারে এবং সেখানে যেতে ইচ্ছা হয়। আধুনিক কালের কিছু ভুতবিদ্যা, পিশাচবিদ্যা ও প্লানচেট হতেও পুনর্জন্ম স্বীকৃত হয়। ব্রাহ্মণ বংশের সন্তান ভিক্ষু বঙ্গীশ মৃতের খুলি স্পর্শ করে বলতে পারতেন মৃত ব্যক্তি কোথায় জন্ম গ্রহণ করেছে। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও এর কিছুটা পরিচয় পাওয়া যায়। কখনও কখনও আমরা এমন কোনো কোনো মানুষের সান্নিধ্যে আসি যাকে প্রথমবার দেখে মনে হয় তিনি পূর্বপরিচিত। ধম্মপদ গ্রন্থে ও অট্ঠকথায় এক পিতামাতার গল্প আছে যারা একদিন গৌতম বুদ্ধকে দেখে স্বীয় পুত্র বলে সম্বোধন করেছিলেন। বুদ্ধ তাদরে চিনতে পেরে বলেছিলেন, অতীতে বহুজন্মে তাঁর পিতা মাতা ছিলেন।
অবশ্যই একথা অনস্বীকার্য যে গর্ভধারণ মুর্হুতে মাতাপিতার মানসিক অবস্থা ভ্রƒণ সত্ত্বের চরিত্রের উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে এবং মাতার প্রকৃতি তার গর্ভস্থ সন্তানের চরিত্রে যথেষ্ট ছাপ ফেলে। কিন্তু শিশুর মানসিক ব্যক্তিত্বে অবিভাজ্য একত্ব কিছুতেই মাতাপিতা থেকে আসে না। এখানে উৎপাদনক্ষণ প্রকৃত কারণ অর্থাৎ পরবর্তী অবস্থার উৎপত্তির হেতুভূত পূর্বাবস্থা সম্বন্ধে ভূল করলে চলবে না। অবশ্য এর সাথে বহিরাগত সাহায্যকারী প্রভাব ও অবস্থার তথাও আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, যদিও সেগুলি কোনক্রমেই নবজাতকের উৎপত্তির কারণ নয়। কেবল মাত্র মাতাপিতার দ্বারাই যদি একটি অবিশ্লেষণীয় সামগ্রিক সত্তা হিসেবে নতুন শিশুর উৎপাদন সম্ভব হতো, তাহলে সন্তান মাত্রই মাতাপিতার চরিত্র ও গুনাবলী লাভ করতো। বাস্তব জগতে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়। যেমন মেধাবী শিশুর নিরক্ষর মাতাপিতার ঘরে জন্মায়। আবার শিক্ষিত ও উন্নত পরিবারের অসৎপ্রকৃতি ও অপরাধপ্রবণ সন্তানের জন্ম হতে দেখা যায়। বিশেষত জমজ শিশুদের মধ্যে প্রায়শ যে বিপরীত প্রবণতা দেখা যায়। তা কিছুতেই সম্ভব হতো না যদি কেবল মাত্র মাতাপিতাই তাদের জন্মের কারণ হতো।
আবার যদি কেই পূর্বজন্মে কায়, বাক্য ও মন দ্বারা অকুশল বা হীন কর্ম সস্পাদন করে এবং তাতে তার অবচেতন জীবন প্রবাহ বা ভবাঙ্গ ¯্রােত কলুষিত হয়, তাহলে পরবর্তী জন্মে যে সব কর্মেও যে ফল বা বিপাক প্রকাশ পাবে তার রুচিবিগর্হিত ও অকুশল হবে এবং ও দুঃখময় হবে। আর যদি কেহ পূর্বজন্মে কায়, মন ও বাক্য দ্বারা কুশল কর্ম সম্পাদন করে তাহলে তার কুশল কর্ম প্রভাবিত অবচেতন জীবন প্রবাহ পুন্য ও কুশলমন্ডিত হয়ে পরবর্তী জন্মে ঐ সব সুকৃতি সুফল ভোগ করবে এবং তার চরিত্র ও নতুন কর্মসমুহও সুন্দর ও আনন্দময় হয়।
সুতরাং দেখা যায় আমাদের তথাকথিত বর্তমান জীবন হচ্ছে অতীত জীবনের বর্তমান কর্মসম্পৃক্ত প্রতিফলন আর ভবিষ্যৎ জীবন হবে বর্তমান জীবনের ভবিষ্যৎ কর্মসম্পৃক্ত প্রতিফলন।
একটি স্বচ্ছ দর্পনে যেমন আমাদের মুখ সপরিবেশ হুবহু প্রতিফলিত হয়, শব্দ মাত্রই যেমন সপরিবেশ প্রতিধ্বনি হয় অথচ সেই প্রতিফলিত মুখে বা প্রতিধ্বনিত শব্দে যেমন মুখ বা শব্দ সংক্রমিত হয় না। তদ্রুপ পুনর্জন্ম চেতনায়ও এক জীবন থেকে পরবর্তী জীবনে কিছুই সংক্রমিত হয় না। বস্তুত মুহুর্তের পর মুহুর্ত, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর, জীবনের পর জীবন ধরে অবিচ্ছেদ্য উত্থান পতন, আগমন ও নির্গমন আদিকাল থেকে চলে আসছে এবং অনন্তকাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। এই নিয়ম পরিবর্তনশীলতাকে আমরা অবিদ্যা প্রভাবে বা মোহাচ্ছন্ন হয়ে ‘আমি” বা আত্ম বা জীব নামে অভিহিত করি। সমুদ্রপৃষ্টে যে ঢেউগুলি আপাতদৃষ্টিতে দ্রুততালে বেয়ে চলে সেগুলি বস্তুত প্রতিবারে শক্তি স্থানান্তরিতকরণের ফলে উদ্ভুত অবিরত সঞ্চরণশীল জলপিন্ডের উত্থান ও পতন ব্যতীত আর কিছুই নয়। ঐরুপ সুসম্পন্নভাবে চিন্তা করলে চরম অর্থে সংসার সমুদ্রে সঞ্চারণশীল কোনো স্থায়ী আত্ম পদার্থ দৃষ্ট হয় না। কেবলমাত্র বার বার জীবনের আকাঙ্খা ও উত্তেজনা তাড়িত শারীরিক ও মানসিক প্রক্রিয়ার অভিব্যক্তিই সংঘটিত হয়।
কর্মবাদ অনুসারে অষ্টাঙ্গিক মার্গ বা শীল ও প্রজ্ঞার পথ অনুশীলন করে অবিদ্যাজাত তৃঞ্চার বিনাশসাধন করে জন্মগতিকে নিরুদ্ধ করা যায়। জন্মগতি একবার নিরুদ্ধ হলে সঙ্গে সঙ্গে সকল প্রকার দুঃখের অবসান ঘটে। সেজন্য বুদ্ধ বলেছেন- অবিদ্যা বা অজ্ঞনতার অন্ধকার থেকে বিদ্যা বা প্রজ্ঞার আলোক আসে। এ অবদ্যিা হচ্ছে চতুরার্য সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞনতা। এজন্য বুদ্ধ বলেছেন, “হে ভিক্ষুগন! এ চতুরার্য সত্য সম্বন্ধে অজ্ঞনতার জন্যই তোমার এবং আমি অসংখ্য জন্মজন্মান্তর ব্যাপী পুনঃপুন জন্ম গ্রহন করে অনেক দুঃখই ভোগ করেছি” বুদ্ধত্ব লাভ করার পর বুদ্ধ উদান গাথায় বলেন,
“হে তৃঞ্চা (গৃহকারক), এবার তোমকে দেখেছি।
তুমি দেহরূপ গৃহ নির্মাণ করতে পারবে না।
তোমার সমস্ত গৃহকুট, গৃহচুড়া ভগ্ন হয়েছে।
আমার চিত্ত সমস্ত তৃঞ্চা থেকে বিমুক্ত হয়েছে”
এভাবে বৌদ্ধ ধর্মে পুনর্জন্মবাদের ব্যাখ্যা প্রদান করে তা নিরোধ করার পন্থাও নির্দেশিত হয়েছে।
সাধনাজ্যোতি ভিক্ষু ( বি.এ (অনার্স), এম. এ (চবি), এম, এড (ডিআবি).
No comments
Post a Comment