বিশ্বের প্রথম আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ে 'মানবতাবাদী' পুরস্কারে ভূষিত হলেন নোবেল বিজয়ী দালাই লামা

তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার বলেছেন, কৃষ্ণাঙ্গ অধিকারী সকল ব্যক্তিকে এবং সমাজের নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের উপর নিকৃষ্টতা দূর করা উচিত এবং সবাইকে সম্মান করে হাতে হাত রেখে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

৮২ বছর বয়সী এই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ভুবনেশ্বর ভারতে ওড়িশায় বিশ্বের প্রথম ‘আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয়’ মানব-সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস (KISS) প্রতিষ্ঠানে 'মানবতাবাদী বা হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড' এ ভূষিত হওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।এসময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুরস্কার তুলে দেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অচ্যুত সামন্ত ।

শিক্ষার্থীদের সমাবেশে বক্তৃতাদানকালে তিনি বলেন, আমরা সবাই মানুষ, পৃথিবীতে সাদা-কালো সবধরণের মানুষ রয়েছে।
কেউ কালো বলে তাকে হেয় করব সেটা বিষয় নয়। আবার কেউ সাদা বলে তাকে অতিরিক্ত সম্মান করব সেটাও খারাপ বিষয়। কালো এবং সাদা উভয়ই রক্তে মাংসে গড়া মানুষ।আমাদের সকলে মস্তিষ্ক রয়েছে সেটা কালো বা সাদা হোক কোন মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। অতএব, ''কালো বা সাদা রঙের কারণে কাউকে নিকৃষ্ট মনে করা উচিত নয় "সাত বছর পর উড়িষ্যার দুই দিনের সফরে এসে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
দালাই লামা উদাহরণস্বরূপ উদ্ধৃত করে বলেছেন ,দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু কালো লোকের সাথে সাক্ষাত করেছেন, যাদের অধিকাংশ গায়ের ত্বক হীনমন্যতা কালো ছিল।"আমাদের আত্মবিশ্বাসের সাথে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসাথে এগিয়ে যেতে হবে''।সকল মানুষ সমান, ত্বকের রঙের ভিত্তিতে কোন মানুষকে নিকৃষ্টতা ভাবা উচিত নয়।
ভারতে বিভিন্ন স্থান থেকে অধ্যয়নরত ২৫ হাজারের বেশী গরীব অসহায় মেধাবী আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশে তিনি আরো বলেন অল্পবয়স্ক ছাত্রছাত্রীদের সুযোগের পাশাপাশি দায়িত্বও রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অলস হয়ে বসে থাকলে সাফল্য আসবেনা সেজন্য সাফল্য পেতে হলে পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজের দায়িত্বও পালন করতে হবে।

উল্লেখ্য ,বিশ্বের প্রথম আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে ওড়িশায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু ভারতেই নয়, সারা বিশ্বেই এটি প্রথম আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয় ৷ দৈর্ঘ্যের দিক থেকেও এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় ৷২৫ হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। সেখানে কিন্ডারগার্টেন থেকে স্নাতোকত্তর, সমস্ত বিভাগেরই পড়াশোনা করার ব্যবস্থা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হলেন অচ্যুত সামন্ত।

১৯৯২ সালে ১২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কেআইআইএস)। এটি এখন বিশ্বমানের একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৩ সালে তিনি চালু করেন কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স (কিস) বর্তমানে এটি বিশ্বের প্রথম আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত।

সূত্রঃ দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.