গণআতণ্কে আক্রান্ত ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৫ জন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি

খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলাধীন তৈ মাতাই নামক গ্রামে গণ আতণ্কে আক্রান্ত ১৫ জন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ রাত ৯টায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে আরও ৭৫ নারী-পুরুষ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল রবিবার গণআতঙ্কে আক্রান্ত হয় প্রত্যন্ত একটি ত্রিপুরা গ্রামের বাসিন্দারা। এদের মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা হচ্ছেন, বহেন ত্রিপুরা(১৪), তিপায়ন ত্রিপুরা (১১), মহন ত্রিপুরা(১৫), সনদিরাম ত্রিপুরা(৩৫), বানু বিথি ত্রিপুরা(৩০), দিনু ত্রিপুরা(২২), কলইমা ত্রিপুরা(১৭), সাগরিকা ত্রিপুরা(১০), কৃঞ বালা ত্রিপুরা(৩৫), কবিতা ত্রিপুরা(১২), বহি বালা ত্রিপুরা(১৭), দীকা ত্রিপুরা(১২), মায়া বালা ত্রিপুরা(২৬), খাজ বালা ত্রিপুরা(১৮) ও কলোইসা ত্রিপুরা(১৬) ভর্তি হয়।
রোগীর সাথে আসা এলাকাবাসী হতে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকে ঐ গ্রামের মানুষগুলো হঠাৎ করে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্না-কাটি ও পাগলামি শুরু করে এবং এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। রোগে আক্রান্ত ছয়জনকে ধরাধরি করে আনতে গিয়ে আরো আটজন গ্রামবাসী একই রোগে আক্রান্ত হয়। কয়েক বছর আগে একই ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়ে একটা গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।  তবে গত বারের রোগের লক্ষণ ছিল- কেউ এই রোগে আক্রান্ত প্রথমে তার মনে হয় গা কেমন কেমন করে উঠছে, পরক্ষণে চুলকানি বা সে রকম কিছু, তারপর লোকটি হয় চিৎকার করে কান্নাকাটি করে নতুবা উচ্চস্বরে অস্বাভাবিকভাবে হাসতে শুরু করে। গতবারের রোগীদের মাঝে সহিংসতা দেখা যায়নি। এবারের রোগের লক্ষণও অনেকটা একই ধরণের হলেও আরেক ধাপ এগিয়ে।  এবারের রোগিরা হাসি-কান্নার পাশাপাশি হাতের কাছে দা-লাথি-ঢিল যা কিছু পাওয়া যায় তা দিয়ে এলোপাতাড়ি অন্যের দিকে নিক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। ঘটনা পরিদর্শনে যাওয়া টিএসএফ-এর কর্মীরা সিরিয়াস রোগিকে ধরাধরি করে আনে। তাদের কর্মতৎপরতা দেখে তাদের সাথে হাত লাগায় গ্রামের শক্ত সমর্থ পুরুষেরা।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়ন ময় ত্রিপুরা ও কর্তব্যরত আর এক ডাক্তার বলেন, সোমবার রাত নয়টা পর্যন্ত ১৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ রোগের নাম Mass Hysteria (ম্যাস হিস্টেরিয়া) বা একটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে উঠবে। এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। আগামীকালের মধ্যেই কয়েক জনকে বিদায় দেয়া সম্ভব হবে।
তথ্যসূত্র: আলোকিত পাহাড়,

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.