পিরোজপুরে একটি অত্যাধুনিক কিনিক দখলের উদ্যেশ্যে কিনিক মালিক পরিবার অপহৃত হওয়ার ৫দিন পর উদ্ধার
পিরোজপুরে একটি অত্যাধুনিক কিনিক দখলের উদ্যেশ্যে কিনিক মালিক পরিবার অপহৃত
হওয়ার ৫দিন পর ফিরে পেলেন কিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টক সেন্টার। শহরের বাইপাস
সড়কস্থ সার্জিকেয়ার কিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টক সেন্টারের মালিক ডাঃ বিজয় কৃষ্ণ
হালদার, তার মা, স্ত্রী ও কলেজ পড়–য়া কণ্যা গত ২১ মার্চ অপহৃত হন। এদিন
গভীর রাতে একদল দুর্বৃত্ত সিনেমার শ্যুটিং করার কথা বলে কিনিকে ঢুকে
তাদেরকে প্রথমে মারপিট করে পরে চোখ ও হাত-পা বেঁধে শহরতলীর একটি নির্জন
বাড়িতে রেখে আসে। পরে সেখানকার লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে শহরের পাল পাড়ায়
তাদের এক আত্মীয়ের বাসায় পৌছে দেয়। ইতোমধ্যে ওই কিনিক সহ ভবনের সম্পূর্ণ
মালিকানা দাবী করে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সম্পুর্ণ দখল করে নেয়। এ
মতাবস্থায় কিনিক মালিক হিন্দু সম্প্রায়ের বিধায় প্রান ভয়ে নিশ্চুপ থাকেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় এম,পি রবিবার পাল পাড়ার আত্মীয়ের বাসা থেকে
ডাঃ বিজয় ও তার পরিবারকে কিনিক ভবনের বাসায় ফিরিয়ে আনেন এবং ঘটনার ৫দিন পর
পুলিশ থানায় মামলা নেয়।
কিনিকটির মালিক বিজয় কৃষ্ণ হালদারের স্ত্রী পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী
কলেজের উপাধ্যক্ষ গীতা রাণী মজুমদার ও তার কলেজ পড়–য়া কন্যা অনন্যা হালদার
জানান, ২২ মার্চ রাত ২টার দিকে মুখে কাপড় বাঁধা ৪০ জনের একটি সসস্ত্র
সন্ত্রাসী বাহিনী হঠাৎ করে তাদের কিনিকের ৫ম তলার ঘরে প্রবেশ করে। এর আগে
কিনিকের দুই কর্মচারি ঘরের দরজা খুলে দিতে বলে তারা জানায় সিনেমার শুটিংয়ের
লোকেরা এসেছে, তাই ঘর খুলে দিতে হবে। এর আগেও সিনেমার নায়ক জায়েদ খান মনু
অভিনিত “অন্তরজালা” সিনেমার শুটিং হওয়ায় তাদের কথা বিশ্বাস করে দরজা খুলে
দেই। কিন্তু ভিতরে তারা অস্ত্রশস্ত্রসহ প্রবেশ করে আমাদের মার ধোর শুরু
করে। আমার বৃদ্ধ শাশুড়ি এবং আমাকেও মারে। আমার মেয়েকেও মারে। এরপর কালো
কাপড় দিয়ে বেঁধে শহর থেকে দুরে ঝাটকাঠি এলাকার একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে ফেলে
আসে। পরে সেখানকার লোকজন আমাদের উদ্ধার করে শহরের পাল পাড়ায় আমার ভাইয়ের
বাসায় দিয়ে যায়। এ সময় ওই বিভৎস ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে কন্যা অনন্যা বলেন,
ঘরে ঢুকে সন্ত্রাসীরা আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দুই হাত বেঁধে মারপিট করে
এবং শ্লীলতাহানির হুমকি দেয়। পরে চোখে কালো কাপড় বেঁধে গাড়িতে করে ওই
স্থানে ফেলে আসে। এই কিনিক আমার বাবার। বাবার জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে এ কিনিক
গড়া। লোন শোধ করতে না পারায় তাদের ওবায়দুল হক পিন্টুকে শেয়ার দেয়া হয়েছে।
আমার বাবাকে এর আগেও নির্যাতন করা হয়েছে। এখন সে অসুস্থ। সেই সুযোগে রাতের
অন্ধকারে পুরোটা দখলে নেয়ার এ নোংরা চেষ্টা তারা চালিয়েছে। এ বর্ননা দেয়ার
সময় অনন্যা তার ও মায়ের ওপর আঘাতের চিহ্ন গুলো সাংবাদিকদের দেখান। বাসায়
ফিরতে পারলেও আতঙ্ক কাটেনি ওই পরিবারটির। এখনও তারা আতঙ্কে ভুগছে। এদিকে এ
ঘটনায় জেলা মুক্তি যোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার সমীর কুমার বাচ্চু বলেন, এই
ভাবে মধ্য যুগীয় কাযদায় যে পরিবারটিকে উচ্ছেদের পায়তারা করা হলো। আমি এর
বিচার চাই।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ উজ
জামান বলেন, মামলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায়
অভিযুক্ত পিন্টু একজন ব্যবসায়ী। তার একভাই বাংলা সিনেমার নায়ক জায়েদ খান
মনু আরেক ভাই পুলিশের ওসি। এলাকায় কথিত আছে নায়ক মনুর পুলিশের অনেক উর্ধতন
কর্মকর্তাদের সঙ্গে রয়েছে সখ্য। এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে পিন্টু
সাংবাদিকদের বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। তাদের কেউ কিছু বলে নাই। নিজেদের
শরীরে নিজেরা আঘাত করে এখন সবাইকে দেখাচ্ছে। ২ কোটি টাকা দিয়ে এ কিনিকের
অর্ধেক মালিকানা আমি নিয়েছি। এর পরও প্রায় আরও ৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছি। মূলত
পুরো মালিকানা এখন আমার। তবে তিনি কেন এমডির রুম দখল করেছেন এবং নিজের নাম
ফলক লাগিয়েছেন সে বিষয়ে কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
No comments
Post a Comment