ভিক্ষুদের সামাজিক সৃষ্টিশীল কাজ নিয়ে আমার কিছু কথা
উপতিষ্য ভিক্ষু
মাদ্রাসায়
যে সব ছাত্র পড়ে তারা কট্টর ধর্ম বিশ্বাসী হয়, তাদের হুজুরের কমান্ডে
ধর্মের জন্য তারা নিজেদের জীবন দিয়ে আত্নঘাটি হামলা করে । খ্রীষ্টান চার্চে
যারা পড়ে তারাও ধর্ম এবং ফাদারের জন্য কি-না করতে পারে, খাওয়ার সময়ও
ঈশ্বরের নাম ছাড়া খায় না কিছুই। হিন্দুদের ক্ষেত্রে দেখেছি বিবেকানন্দ
আশ্রম বা এই জাতীয় ধর্মীয় আশ্রমে যারা পড়াশুনা করে তারাও ধর্ম এবং গুরুর
প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল থাকে । এমনকি ভাষার ব্যবহারেও যত্নশীল হয়, নিজস্ব
হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির প্রতি অগাধ বিশ্বাস রেখে কাজ করে । ব্যতিক্রম আমাদের
বৌদ্ধ আশ্রমের ক্ষেত্রে । আরও নির্দিষ্ট করে বললে বলতে হয় পার্বত্য
চট্টগ্রামের চাকমা ভান্তেদের অনাথ আশ্রমের ক্ষেত্রে । এখানে যারা পড়ে তারা
বৌদ্ধ ধর্ম ও ভান্তেদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরিবর্তেে উল্টা অসম্মান
বিরুদ্ধাচরণ করে!! শুধু তাই নয় আশ্রয় দাতার বিরুদ্ধে ইচ্ছামত দুর্নাম রটিয়ে
উক্ত প্রতিষ্ঠান বেদখলের অপচেষ্টায় রত হয় কেউ কেউ!! শুরু থেকেই যারা
এধরনের ধর্ম ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধাচরণ করে এসেছে তাদের সাথে
গলায় গলায় ভাব জমিয়ে স্বার্থগত ঐক্য গড়ে তোলে এই বৌদ্ধ আশ্রমেই বড় হওয়া বা
কোন না কোনভাবে জড়িয়ে থেকে একসময়ের জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলো ।
তাতে তারা অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয় । বেদখলকৃত ঐসব প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতা গ্রহণের পর দেখা যায়, যে ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ সন্যাসীরা ঐসকল মানবিক আশ্রম গড়ে তুলেছে সেসকল বয়োকনিষ্ঠ ভান্তেদের উপর খবরদারী ও অবজ্ঞার সুরে কথা বলে । অথচ যে সকল বাস্তবতা বিবর্জিত ও ভাবসর্বোচ্চ ভিক্ষু এসব বিরোধিতা করে বা করেছে তাদের মিথ্যা মহিমা কীর্তনকারীদের সাথে সুর মিলিয়ে নিজের অসহায়ত্বের সময় সহায় পাওয়ার ইতিহাসকে অস্বীকার করে । এভাবে দেখা যায় একসময়ের গেরুয়া আদর্শের ধর্ম ভিত্তিক আশ্রমগুলো পরিণত হয়ে যাচ্ছে তথাকথিত সেক্যুলার প্রতিষ্ঠানে যেখানে বৌদ্ধ ধর্মাদর্শের বালায় নেই । এভাবেই বৌদ্ধাদর্শের প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠিত কর্মযজ্ঞ ও নব উদ্যোগগুলো নব্য সুশীল, গণতান্ত্রিক, উদারমনা ও সেক্যুলার জুম্মদের দ্বারা বিরাশ্রমকরণ চলছে । বিরাশ্রমকরণ এই জন্য বলছি যে অধিকাংশ আশ্রমে এখন আর অসহায়, গরীব এতিমদের ঠাঁই হয় না অর্থাভাবে । যারা পয়সা দিতে পারে শুধু তারা পড়তে পারে ।
এতে করে আশ্রমের যে মূল বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ এতিম, গরীব ও ছিহ্নমূল শিশুদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সেটা আর অবশিষ্ট নেই । এসব দেখে উদীয়মান উদ্যোগী তরুণ ভিক্ষুরা মর্মাহত হচ্ছে এবং এর ফলে তারা এরকম সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে দিন দিন উৎসাহ হারাচ্ছে । আর আমাদের সমাজে সেরকম উদ্যোক্তার অভাবে একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা হতদরিদ্র মানুষের সন্তানদের উঠে আসার উপায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । অথচ একটা সময় ছিল যখন এই অবহেলিত শ্রেণী থেকে অনেক মেধাবী ছাত্র উঠে এসেছেে আশ্রমের মাধ্যমে পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে । তারা এখন দশ জনের একজন হয়ে সমাজ, জাতি তথা দেশকে সেবা করে যাচ্ছে । অনেক ছাত্র বিদেশে পারি জমিয়েছে এই অনাথ আশ্রমকে কেন্দ্র করে । প্রশ্ন জাগে বর্তমানের মত অবস্থা যদি তখন সেই সময়ে হত এই সব ছাত্র কি উঠে আসতে পারত? অবশ্য কিছু মানুষের সমস্যা হয়েছে আশ্রমের কল্যাণে এসব মেধাবী ছাত্র উঠে আসায় । তাতে তাদের কর্তৃত্বের জায়গা সংকুচিত হয়েছে । কিস্তু এভাবে তো চলতে পারে না । আমাদের নেটিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ত্যাগ করা দরকার ।
ভান্তেদের কাজ ভান্তেদের করতে দিতে হবে । একজন ভিক্ষু যখন জীবনের পুরো সময় ব্যয় করে তিল তিল করে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তখন সেই প্রতিষ্ঠানের উপর তার যে মমত্ববোধ জেগে ওঠে সেটা পুত্রের প্রতি পিতার ভালোবাসার মতই । স্রষ্টা যে রকম তার সৃষ্টির গুরুত্ব বোঝেন সেরকম আর কেউ বুঝে না, বুঝতে পারেন না । তাছাড়াও সৃষ্টির উপর যদি স্রষ্টার অধিকার নিশ্চিত না হয় তাহলে পরবর্তীতে সৃষ্টিশীল কাজে মানুষ আর উৎসাহবোধ করে না । ফলে সমাজের পরিবেশ ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রতিকূল হিসেবে কাজ করে যা গতিশীল সমাজের জন্য কাম্য হতে পারে না । আমাদের অবশ্যই এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে ।
তারিখ- ১৬-১০-২০১৪ইং
তাতে তারা অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয় । বেদখলকৃত ঐসব প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতা গ্রহণের পর দেখা যায়, যে ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ সন্যাসীরা ঐসকল মানবিক আশ্রম গড়ে তুলেছে সেসকল বয়োকনিষ্ঠ ভান্তেদের উপর খবরদারী ও অবজ্ঞার সুরে কথা বলে । অথচ যে সকল বাস্তবতা বিবর্জিত ও ভাবসর্বোচ্চ ভিক্ষু এসব বিরোধিতা করে বা করেছে তাদের মিথ্যা মহিমা কীর্তনকারীদের সাথে সুর মিলিয়ে নিজের অসহায়ত্বের সময় সহায় পাওয়ার ইতিহাসকে অস্বীকার করে । এভাবে দেখা যায় একসময়ের গেরুয়া আদর্শের ধর্ম ভিত্তিক আশ্রমগুলো পরিণত হয়ে যাচ্ছে তথাকথিত সেক্যুলার প্রতিষ্ঠানে যেখানে বৌদ্ধ ধর্মাদর্শের বালায় নেই । এভাবেই বৌদ্ধাদর্শের প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠিত কর্মযজ্ঞ ও নব উদ্যোগগুলো নব্য সুশীল, গণতান্ত্রিক, উদারমনা ও সেক্যুলার জুম্মদের দ্বারা বিরাশ্রমকরণ চলছে । বিরাশ্রমকরণ এই জন্য বলছি যে অধিকাংশ আশ্রমে এখন আর অসহায়, গরীব এতিমদের ঠাঁই হয় না অর্থাভাবে । যারা পয়সা দিতে পারে শুধু তারা পড়তে পারে ।
এতে করে আশ্রমের যে মূল বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ এতিম, গরীব ও ছিহ্নমূল শিশুদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সেটা আর অবশিষ্ট নেই । এসব দেখে উদীয়মান উদ্যোগী তরুণ ভিক্ষুরা মর্মাহত হচ্ছে এবং এর ফলে তারা এরকম সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে দিন দিন উৎসাহ হারাচ্ছে । আর আমাদের সমাজে সেরকম উদ্যোক্তার অভাবে একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা হতদরিদ্র মানুষের সন্তানদের উঠে আসার উপায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । অথচ একটা সময় ছিল যখন এই অবহেলিত শ্রেণী থেকে অনেক মেধাবী ছাত্র উঠে এসেছেে আশ্রমের মাধ্যমে পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে । তারা এখন দশ জনের একজন হয়ে সমাজ, জাতি তথা দেশকে সেবা করে যাচ্ছে । অনেক ছাত্র বিদেশে পারি জমিয়েছে এই অনাথ আশ্রমকে কেন্দ্র করে । প্রশ্ন জাগে বর্তমানের মত অবস্থা যদি তখন সেই সময়ে হত এই সব ছাত্র কি উঠে আসতে পারত? অবশ্য কিছু মানুষের সমস্যা হয়েছে আশ্রমের কল্যাণে এসব মেধাবী ছাত্র উঠে আসায় । তাতে তাদের কর্তৃত্বের জায়গা সংকুচিত হয়েছে । কিস্তু এভাবে তো চলতে পারে না । আমাদের নেটিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ত্যাগ করা দরকার ।
ভান্তেদের কাজ ভান্তেদের করতে দিতে হবে । একজন ভিক্ষু যখন জীবনের পুরো সময় ব্যয় করে তিল তিল করে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তখন সেই প্রতিষ্ঠানের উপর তার যে মমত্ববোধ জেগে ওঠে সেটা পুত্রের প্রতি পিতার ভালোবাসার মতই । স্রষ্টা যে রকম তার সৃষ্টির গুরুত্ব বোঝেন সেরকম আর কেউ বুঝে না, বুঝতে পারেন না । তাছাড়াও সৃষ্টির উপর যদি স্রষ্টার অধিকার নিশ্চিত না হয় তাহলে পরবর্তীতে সৃষ্টিশীল কাজে মানুষ আর উৎসাহবোধ করে না । ফলে সমাজের পরিবেশ ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রতিকূল হিসেবে কাজ করে যা গতিশীল সমাজের জন্য কাম্য হতে পারে না । আমাদের অবশ্যই এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে ।
তারিখ- ১৬-১০-২০১৪ইং
No comments
Post a Comment