খাগড়াছড়ি সদরে বেতছড়ি মধ্য পাড়ায় সেটেলার কর্তৃক পাহাড়িদের ভূমি দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিশিল
খাগড়াছড়ি সদরে কমলছড়ি ইউনিয়নে ভূয়াছড়ি মৌজা মধ্য বেতছড়িতে ভূমি দস্যুদের
হামলার প্রতিবাদে গতকাল ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও
গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম বিক্ষোভ মিছিল করেছে|পিসিপি নেতা বিনয়ন চাকমা
সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন-পিসিপি ঢাকা শাখার সভাপতি ত্রিশঙ্কু চাকমা ও
গনতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাইকেল চাকমা।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাধীন কমলছড়ি ইউনিয়নের মধ্য বেতছড়িতে আজ ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার
সকাল ৮টার দিকে ভুয়াছড়ি গুচ্ছগ্রামের সোবহানের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একদল
সেটলার মধ্য বেতছড়িতে পাহাড়িদের ভোগদখলীয় জায়গার উপর জঙ্গল কাটতে যায়। তারা
নীতিময় চাকমা(৩৫) পিতা মক্কাপেদা চাকমার বাড়ি ও জুমক্ষেতের পার্শ্ববর্তী
স্থান থেকে জঙ্গল কাটা শুরু করে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় পাহাড়িরা সংঘবদ্ধ
হয়ে সেটলারদের প্রতিরোধ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ
সময় সেটলাররা নীতিময় চাকমার বাড়িটি ভেঙে দেয়। এক পর্যায়ে পাহাড়িদের
প্রতিরোধের মুখে সেটলাররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।ইতিপূর্বে উক্ত জায়গায় দুই দিন যাবৎ সেটেলার বাঙ্গালিরা জঙগল পরিষ্কার করে।
গ্রামবাসীরা পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় আর্মী ক্যা্ম্পে অভিযোগ করে কিন্তু
তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করে বলে সেটেরাররা জঙ্গল কাটতে গেলে তোমারা
তাদেরকে ধরে বেঁধে রাখাবে। প্রসাশন যদি যথা সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন
করতো তাহলে এরুপ ঘটনা ঘটত না।
এই বেতছড়ি এলাকায় সেটলারদের দ্বারা পাহাড়ি জমি বেদখলের ঘটনা নতুন নয়। গত
২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সেটেলাররা পাহাড়িদের জমি দখল করতে গেলে উভয়ের
মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং সেটলাররা পাহাড়িদের প্রায় ৫০ একর জায়গা জোরপূর্বক দখল
করে নেয়। এ ঘটনায় সেটলাররা উল্টো ৮ জন পাহাড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে
হয়রানি করে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ কমলছড়ির সবিতা চাকমার হত্যাকাণ্ডকে
কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনার জের ধরে বিনা উস্কানিতে সেটলাররা জমি দখলের
উদ্দেশ্যে উক্ত গ্রামের প্রায় ৪ কিলোমিটার পূর্বে “চৈত্য আদর্শ বৌদ্ধ
বিহারে” হামলা চালিয়ে বিহারের বুদ্ধমূর্তিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করে।
এছাড়া সেটলাররা পার্শ্ববর্তী গ্রাম বেতছড়ি মুখ পাড়ায় মৃত স্বর্ণ মোহন
চাকমার ছেলে চিগন চান চাকমার (৫ একর), মৃত সাধনমনি চাকমার ছেলে রবিন্দ্র
লাল চাকমার (৪ একর), মৃত সেবেন্দ্র চাকমার ছেলে নিসু চাকমার (১ একর), মৃত
পবিত্র চাকমার ছেলে নব পত্র চাকমার (২ একর) ও সেবেন্দ্র চাকমার ছেলে
গজেন্দ্র চাকমা (২ একর) -- এই পাঁচ জন পাহাড়ি গ্রামবাসীর ১৪ একর ফলজ ও বনজ
বাগান জোরপূর্বক দখল করে নেয়। বেদখলকারী সেটলাররা হলেন মো ইব্রাহিম সেট
পিতা অজ্ঞাত, রোখেয়া বেগম, স্বামী মোঃ সাম্যা, পিতা আব্দুল খালেক, মোঃ
ইব্রাহিম শেঠ ও উমর আলী, পিতা মৃত মোঃ সুরমাল আলী, মোঃ অমর শেখ, পিতা মোঃ
আব্দুল রহমান। ভূমি মালিকরা স্থানীয় আর্মী ক্যাম্প ও থানায় এর প্রতিকার
চেয়েও কোন সুবিচার পায়নি।
এভাবে কতিপয় সেটলার প্রতিনিয়ত পাহাড়িদের জায়গাজমি দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এই ভূমি বেদখলে তারা স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসনকেও তাদের পাশে রাখার চেষ্টা করে থাকে। বেতছড়ি রিসসো কোসেই কাই-এর জমিও তারা এভাবে বেদখলের জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই জমি ১৯৯২ সালের আগ পর্যন্ত বেতছড়ি বৌদ্ধ মন্দিরের আওতাধীন থাকলেও জমির বন্দোবস্তী সংক্রান্ত দলিলপত্র ছিল না। দলিল না থাকার কারণ হলো তখন তার প্রয়োজন পড়তো না। এখনো বহু পাহাড়ি বাপদাদার আমল থেকে জমি ভোগ দখল করে আসলেও তার মালিকানার দলিল নেই। তাছাড়া সরকার এক সময় জমি বন্দোবস্তী প্রদান বন্ধ করে দেয়। এই সুযোগে এক শ্রেণীর সেটলার জমির ভূয়া দলিল তৈরি করে পাহাড়িদের প্রথাগত ভোগদখলকৃত জমি হাতিয়ে নিচ্ছে।
এভাবে কতিপয় সেটলার প্রতিনিয়ত পাহাড়িদের জায়গাজমি দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এই ভূমি বেদখলে তারা স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসনকেও তাদের পাশে রাখার চেষ্টা করে থাকে। বেতছড়ি রিসসো কোসেই কাই-এর জমিও তারা এভাবে বেদখলের জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই জমি ১৯৯২ সালের আগ পর্যন্ত বেতছড়ি বৌদ্ধ মন্দিরের আওতাধীন থাকলেও জমির বন্দোবস্তী সংক্রান্ত দলিলপত্র ছিল না। দলিল না থাকার কারণ হলো তখন তার প্রয়োজন পড়তো না। এখনো বহু পাহাড়ি বাপদাদার আমল থেকে জমি ভোগ দখল করে আসলেও তার মালিকানার দলিল নেই। তাছাড়া সরকার এক সময় জমি বন্দোবস্তী প্রদান বন্ধ করে দেয়। এই সুযোগে এক শ্রেণীর সেটলার জমির ভূয়া দলিল তৈরি করে পাহাড়িদের প্রথাগত ভোগদখলকৃত জমি হাতিয়ে নিচ্ছে।
No comments
Post a Comment