উখিয়া থেকে আটক দুই বৌদ্ধভিক্ষু জামিনে মুক্ত

গত ৯ জুলাই ২০১৪ কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার ১৭নং বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর চেক পোষ্টে বিজিবি জোয়ান কর্তৃক চোরাচালানের অভিযোগে আটক শাসন রক্ষিত ভিক্ষু ও সবিতা ভিক্ষু নামে দুই ধর্মীয় গুরু জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আটকের পর তাদেরকে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপার্দ করে তাদের বিরুদ্ধে ৭৪ (খ) ধারায় মামালা রজু করার পর কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। দীর্ঘ একমাসের অধিক সময় কারাগারে অন্তরীণ থাকার পর ভিক্ষুদ্বয় গত ২৫ আগস্ট সোমবার বিকালে জামিনে মুক্তি পান। এদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে ৮ সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল তাদের সাথে সাক্ষাত করেন।
শাসন রক্ষিত ভিক্ষু রাঙ্গামাটি জেলার, ট্রাইবেল আদাম এলাকার পরমী বৌদ্ধ বিহারে বিহার অধ্যক্ষ এবং সবিতা ভিক্ষু পরমী বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক ভিক্ষু হিসেবে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে শাসন রক্ষিত ভিক্ষু রাঙামাটি সদর থানার বালুখালী ইউনিয়নের বসন্তমোন গ্রামের বীর বাহু চাকমার ছেলে। ভিক্ষু হওয়ার আগে তিনি প্রকাশ চাকমা নামে পরিচিত ছিলেন।

ভিক্ষুদ্বয়ের সাথে ৮ সংগঠনের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাত
সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত ৮ সংগঠনের কনভেনিং কমিটির একটি প্রতিনিধি দল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন শেষে গত ২৫ আগস্ট বিকালে কক্সবাজার জেলা কারাগারের গেটে উক্ত ভিক্ষুদ্বয়ের সাথে দেখা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় পরমী বৌদ্ধ বিহারের বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় খীসা ও সাধারণ সম্পাদক নন্দ চাকমার সাথে দেখা হলে প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ তাদের সাথে ভিক্ষুদ্বয়ের বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
প্রতিনিধি দলের কাছে ভিক্ষুদ্বয় বলেন, তাদেরকে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে আটক করা হয়নি। তাদের কাছে চট্টগ্রাম থেকে আসা একটি টিকেট ছিলো এবং তারা উখিয়া থেকে একটা রির্জাভ সিএনজি নিয়ে কক্সবাজারের দিকে রওয়ানা হচ্ছিলেন। এ সময় বিজিবি জোয়ানরা তাদেরকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে ইয়াবা, ল্যাপটপ পাওয়া গেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্কিনটাচ মোবাইল ছাড়া তাদের কাছ থেকে আর কোন কিছুই পায়নি। তবে তাদের কাছে দায়কের দেওয়া ইউএসডি ডলার ১ টাকা এবং মালেশিয়ান রিঙ্গিয়িট ১টাকা ছিলে বলে তারা জানান।
তারা আরও জানান, কারাগারে নেয়ার পর তাদেরকে একটা সেলে রাখা হয়। সেখানে বৌদ্ধ ধর্মীয় মতে তাদের দেখাশোনা করেন বাঘাইছড়ির উপজেলার বঙ্গলতলীর বাসিন্দা কক্সবাজার কারাগারে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার সর্বোত্তম চাকমা। বাংলাদেশের প্রচলিত জেল ব্যবস্থাপনায় বৌদ্ধ ধর্মীয় অনুশাসন রক্ষা হওয়ার মতো কোন ব্যবস্থা নেই বলে তারা মন্তব্য করেন।
৮ সংগঠনের কনভেনিং কমিটির প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও কনভেনিং কমিটির সদস্য সচিব অংগ্য মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও কনভেনিং কমিটির সদস্য মাদ্রী চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কনভেনিং কমিটির সদস্য থুইক্যচিং মারমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও কনভেনিং কমিটির সদস্য কাজলী ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক এসিংমং মারমা ও সদস্য শুভ চাক।

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.