সুমনা : তোমার হাত ধরে আর একবার মানবতার জয় দেখতে চাই
আমরা
কত বিচিত্র শখে বিচিত্রভাবে অর্থের অপচয় করি !! সেই অর্থের সামান্যতম অংশ
যদি মানবতার পক্ষে, একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর গরিব ছাত্রীর জীবন বাচাতে
সহযোগিতা করি তাহলে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কি কোনো ব্যত্যয় ঘটবে? অবশ্যই
না, ঘটবে না। তাহলে আসুন আলো খুজতে গিয়ে অন্ধকার পথের যাত্রী হয়ে যাওয়া
বরকল উপজেলার দেওয়ানচর গ্রামের দরিদ্র দ্বিতীয় শ্রেণীর অগ্নিদগ্ধ ছাত্রী
সুমনা চাকমাকে বাচাতে হাতে হাত মেলাই, গেয়ে উঠি মানবতার জয়গান।
ঘটনা : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
দরিদ্র বাবা মা গেছেন কাজে। প্রতি দিনকার মতো ফিরতে ফিরতে হয়ে যায় সন্ধ্যা। তাই সেদিনও আলো আধারি সময়ে সুমনা চাকমা কেরোসিনের বাতিটা নিয়ে বসেছিল পড়তে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই কেরোসিন তার শরীরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন জ্বলে উঠে সুমনার শরীরে। তখন ছোট্ট দেহ থেকে আগুন নেভাতে পারলেও সুমনার শরীরের তলপেট থেকে হাটু পর্যন্ত দগ্ধ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় সুমনার বাবা মা এসে দেখেন তারে আদরের সোনামণিটির শরীরে থেকে পোড়াগন্ধ বের হচ্ছে। কিন্তু কী করবেন, ভগবান বা সৃষ্টি কর্তাকে ডাকা ছাড়া আর কোনো উপায় যে নেই। দুইদিন বাড়িতে রাখার পর সুমনা যখন অজ্ঞান হয়ে যেতে শুরু করেছে তখন কিছু আত্মীয় স্বজন টাকা পয়সা দিয়ে সুমনাকেসহ বাবা মা ও দাদীকে পাঠালেন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা চেষ্টা করলেন যথাসাধ্য। কিন্তু রাঙামাটি জেনালরল হাসপাতালে যে বার্ণ ইউনিট নেই। তাই চিকিৎসকরা সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। কিন্তু আবার সেই অর্থের প্রয়োজন হয়ে পড়ল। কোথায় টাকা পাওয়া যাবে। সম্ভব নয় অচেনা অজানা জায়গায় টাকা পয়সা ছাড়া অগ্নিদগ্ধ মেয়েকে নিয়ে যাওয়া।
ঘটনা: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
সুমনা চাকমা নামের দ্বিতীয় শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার ঘটনা জানতে পারে Blood Donor গ্রুপ উন্মেষ। উন্মেষের কিছু সদস্য প্রথম আলো রাঙামাটি বন্ধুসভারও সদস্য। তাই তারা বন্ধুসভার সদস্যদেরও বিষয়টি জানাল। এরপর সবাই হাসপাতালে গিয়ে সুমনাকে দেখলো। কথা বললো তার বাবা মার সঙ্গে। এরমধ্যে রাঙামাটির স্কাউট আন্দোলনের অন্যতম নতা আফসার ভাইও বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন। বন্ধুসভা ও উন্সেষ সদস্যরা জানতে পারে, সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তারা আরও জানতে পারল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া না হলে সুমনার জীবন যে কোনো মুহুর্তে বিপন্ন হয়ে পড়বে। এমন সময় আমাকে ফোন করা হলে আমি তাদের রাঙামাটির টিআইবির কার্যালয়ে আসতে বলি। ওই সময় আমরা রাঙামাটি সচেতন নাগরিক কমিটির কয়েকজন সদস্য একটি মিটিং করছিলাম। উন্মেষ ও বন্ধুসভার সদস্যরা বিষয়টি জানালে সবাই আমাকে কোনো একটা ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। তখন আমি রাঙামাটির সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ১০,০০০ (দশ হাজার টাকা) সাহায্যদানের অনুরোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান। এরপর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মি. নিখিল কুমার চাকমা মহোদয়কে জ্বালানি খরচসহ একটি অ্যম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করি। তিনিও সঙ্গে সঙ্গে রাজী হয়ে যান। এরমধ্যে বন্ধুসভার সদস্যদের অনুরোধে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বেশ কিছু টাকা তুলে দেন। আর সনাকের উপস্থিত সদস্যরাও তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়ান। কিন্তু সেদিন রাতে আর সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরদিন ভোরে আফসারভাই এবং বন্ধুসভা ও উন্মেষের সদস্য সুবিমল চাকমা বাবা মাকেসহ সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ৬ষ্ঠ তলার ৩৬ নং ওয়ার্ডের বার্ন ইউনিটের এফ-১৭ নম্বর বেডে ভর্তি করান। সুমনা চাকমা এখনো সেই স্থানে আছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রয়াজনীয় চেক আপের পর জানা গেল সুমনা চাকমার অগ্নিদগ্ধ স্থানে পচন ধরেছে। প্রতি দুই দিনে একবার করে ড্রেসিং করাতে হবে। প্রতিবার ড্রেসিং করাতে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার প্রয়োজন। শরীরের পুষ্টি পূরণে দেওয়া হয়েছে ব্যয়বহুল খাদ্য তালিকা। প্রতিদিন করতে হচ্ছে নানা পরীক্ষা। তবে প্রায় ৫-৭টা টেষ্ট করার পর সুমনা চাকমার বাচার সম্ভাবনার কথা জানতে পেরে বন্ধুসভা ও উন্মেষ সদস্যরা যেন আলোর রেখা খুজে পেল। কিন্তু সমস্যাটা যা দাড়াল তা হলো, অগ্নিদগ্ধ রোগীকে চিকিৎসায় যে এত খরচ তা তাদের জানা ছিল না। চিকিৎসায় ইতিমধ্যে ৪০ হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়ে গেছে। বন্ধুসভা ও উন্মেষ সদস্যরা সবাই ছাত্রছাত্রী। কেউ বাবা মার সামান্য টাকায় অথবা নিজে টিউশনি করে পড়ালেখা করছে। তাই সুমনাকে চিকিৎসার্থে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগানো তাদের পক্ষে অসম্ভব। আমি বন্ধুসভার উপদেষ্টা এবং প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টাার হিসেবে তাদের অভয় দিই, খরচ যে কোনোভাবে জোগার হবে। তোমরা কাজ চালিয়ে যাও। কিন্তু আমি নিজে সন্ধিহান। কারণ খোজ নিয়ে জেনেছি, সুমনা চাকমাকে পুরোপুরি সুস্থ করতে প্র্রায় দুই লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে।
সুমনা চাকমার চিকিৎসা খরচের ব্যাপারে যেন কোনো প্রশ্নের জন্ম না হয় সেজন্য বন্ধুসভার সহসভাপতি সুনেন্টু চাকমা দায়িত্ব নিয়েছে, প্রতিদিন কে সাহায্য দিলেন এবং কত টাকা দিলেন তা ফেসবুকের মাধ্যমে নিয়মিত জানাবে। আর চিকিৎসায় কত খরচ হচ্ছে তারও একটা হিসাব প্রকাশ করা হবে। আশার কথা ফেসবুকে সুমনার চিকিৎসার কথা জানানোর পর থেকে অনেক মানবতাবাদী ও হৃদয়বান ব্যক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন। আশা করছি, আমরা ব্যর্থ হবো না।
সুমনা চাকমা : আলোর পথের যাত্রী
আমাদের ছেলেমেয়েদের যেখানে প্রতিদিন গাড়িতে করে বিদালয়ে আনা নেওয়া, শিক্ষক ঠিক করে পড়াশোনার ব্যবস্থা করাসহ সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরও পড়াশোনায় মনযোগী করতে হিমশিম খেতে হয় সেখানে অক্ষরজ্ঞানহীন বাবা মার সন্তান দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সুমনা চকমা নিজে নিজে কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে প্রতিদিন পড়াশোনা করে। এই বয়সে সে বুঝতে শিখেছে পড়াশোনা করতে হবে। কিন্তু তার সেই উৎসাহ কাল হয়ে দাড়িয়েছে। কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা করে সুমনা আলোর পথের যাত্রী হতে গিয়ে যেন অন্ধকার তাকে ঘিরে ধরেছে। এখন সেই অন্ধকার দূর করতে, সুমনাকে আলোর পথের যাত্রী করতে আমাদের সবার সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। আমরা যদি সবাই মানবতার জয়গানে সুর মেলায় সুমনার জীবনে আলো আসবেই।
আমরা মানবতার জয় দেখেছি অনেক বার। একতার জয় অবশ্যম্ভাবী তা জানি। মানুষের একান্ত ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা বৃথা যায় না তাও জানি। সেই বিশ্বাস এবং মানুষের প্রতি, মানবতার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা থেকে সকল প্রবাসী ও দেশের বন্ধুদের কাছে অনুরোধ আসুন সুমনার হাত ধরে আমরা আরও একবার মানবতার জয়গানে মুখরিত হয়ে উঠি।
যোগাযোগ :
হরি কিশোর চাকমা, মোবাইল : ০১৫৫০৬০৯৩০৪/০১৭১৩১০৭২৮২
সুবিমল চাকমা, মোবাইল : ০১৮২০৩৫০১২৫
অমর চাকমা, মোবাইল : ০১৮৩৮৪৯২৫৫০
সাহায্য পাঠানোর বিকাশ নাম্বার : ০১৮১২০৬৬৯১০ (পার্সোনাল)
বিশেষ দ্রষ্টব্য :বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠানোর সময় ফোন করে নিশ্চিত হতে অনুরোধ করা গেল। প্রবাসী বন্ধুদের ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানোর অনুরোধ করা গেল।


ঘটনা : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
দরিদ্র বাবা মা গেছেন কাজে। প্রতি দিনকার মতো ফিরতে ফিরতে হয়ে যায় সন্ধ্যা। তাই সেদিনও আলো আধারি সময়ে সুমনা চাকমা কেরোসিনের বাতিটা নিয়ে বসেছিল পড়তে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই কেরোসিন তার শরীরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন জ্বলে উঠে সুমনার শরীরে। তখন ছোট্ট দেহ থেকে আগুন নেভাতে পারলেও সুমনার শরীরের তলপেট থেকে হাটু পর্যন্ত দগ্ধ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় সুমনার বাবা মা এসে দেখেন তারে আদরের সোনামণিটির শরীরে থেকে পোড়াগন্ধ বের হচ্ছে। কিন্তু কী করবেন, ভগবান বা সৃষ্টি কর্তাকে ডাকা ছাড়া আর কোনো উপায় যে নেই। দুইদিন বাড়িতে রাখার পর সুমনা যখন অজ্ঞান হয়ে যেতে শুরু করেছে তখন কিছু আত্মীয় স্বজন টাকা পয়সা দিয়ে সুমনাকেসহ বাবা মা ও দাদীকে পাঠালেন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা চেষ্টা করলেন যথাসাধ্য। কিন্তু রাঙামাটি জেনালরল হাসপাতালে যে বার্ণ ইউনিট নেই। তাই চিকিৎসকরা সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। কিন্তু আবার সেই অর্থের প্রয়োজন হয়ে পড়ল। কোথায় টাকা পাওয়া যাবে। সম্ভব নয় অচেনা অজানা জায়গায় টাকা পয়সা ছাড়া অগ্নিদগ্ধ মেয়েকে নিয়ে যাওয়া।
ঘটনা: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
সুমনা চাকমা নামের দ্বিতীয় শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার ঘটনা জানতে পারে Blood Donor গ্রুপ উন্মেষ। উন্মেষের কিছু সদস্য প্রথম আলো রাঙামাটি বন্ধুসভারও সদস্য। তাই তারা বন্ধুসভার সদস্যদেরও বিষয়টি জানাল। এরপর সবাই হাসপাতালে গিয়ে সুমনাকে দেখলো। কথা বললো তার বাবা মার সঙ্গে। এরমধ্যে রাঙামাটির স্কাউট আন্দোলনের অন্যতম নতা আফসার ভাইও বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন। বন্ধুসভা ও উন্সেষ সদস্যরা জানতে পারে, সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তারা আরও জানতে পারল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া না হলে সুমনার জীবন যে কোনো মুহুর্তে বিপন্ন হয়ে পড়বে। এমন সময় আমাকে ফোন করা হলে আমি তাদের রাঙামাটির টিআইবির কার্যালয়ে আসতে বলি। ওই সময় আমরা রাঙামাটি সচেতন নাগরিক কমিটির কয়েকজন সদস্য একটি মিটিং করছিলাম। উন্মেষ ও বন্ধুসভার সদস্যরা বিষয়টি জানালে সবাই আমাকে কোনো একটা ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। তখন আমি রাঙামাটির সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল মহোদয়কে বিষয়টি জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ১০,০০০ (দশ হাজার টাকা) সাহায্যদানের অনুরোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান। এরপর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মি. নিখিল কুমার চাকমা মহোদয়কে জ্বালানি খরচসহ একটি অ্যম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করি। তিনিও সঙ্গে সঙ্গে রাজী হয়ে যান। এরমধ্যে বন্ধুসভার সদস্যদের অনুরোধে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বেশ কিছু টাকা তুলে দেন। আর সনাকের উপস্থিত সদস্যরাও তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়ান। কিন্তু সেদিন রাতে আর সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়ে উঠেনি। পরদিন ভোরে আফসারভাই এবং বন্ধুসভা ও উন্মেষের সদস্য সুবিমল চাকমা বাবা মাকেসহ সুমনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ৬ষ্ঠ তলার ৩৬ নং ওয়ার্ডের বার্ন ইউনিটের এফ-১৭ নম্বর বেডে ভর্তি করান। সুমনা চাকমা এখনো সেই স্থানে আছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রয়াজনীয় চেক আপের পর জানা গেল সুমনা চাকমার অগ্নিদগ্ধ স্থানে পচন ধরেছে। প্রতি দুই দিনে একবার করে ড্রেসিং করাতে হবে। প্রতিবার ড্রেসিং করাতে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার প্রয়োজন। শরীরের পুষ্টি পূরণে দেওয়া হয়েছে ব্যয়বহুল খাদ্য তালিকা। প্রতিদিন করতে হচ্ছে নানা পরীক্ষা। তবে প্রায় ৫-৭টা টেষ্ট করার পর সুমনা চাকমার বাচার সম্ভাবনার কথা জানতে পেরে বন্ধুসভা ও উন্মেষ সদস্যরা যেন আলোর রেখা খুজে পেল। কিন্তু সমস্যাটা যা দাড়াল তা হলো, অগ্নিদগ্ধ রোগীকে চিকিৎসায় যে এত খরচ তা তাদের জানা ছিল না। চিকিৎসায় ইতিমধ্যে ৪০ হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়ে গেছে। বন্ধুসভা ও উন্মেষ সদস্যরা সবাই ছাত্রছাত্রী। কেউ বাবা মার সামান্য টাকায় অথবা নিজে টিউশনি করে পড়ালেখা করছে। তাই সুমনাকে চিকিৎসার্থে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগানো তাদের পক্ষে অসম্ভব। আমি বন্ধুসভার উপদেষ্টা এবং প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টাার হিসেবে তাদের অভয় দিই, খরচ যে কোনোভাবে জোগার হবে। তোমরা কাজ চালিয়ে যাও। কিন্তু আমি নিজে সন্ধিহান। কারণ খোজ নিয়ে জেনেছি, সুমনা চাকমাকে পুরোপুরি সুস্থ করতে প্র্রায় দুই লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে।
সুমনা চাকমার চিকিৎসা খরচের ব্যাপারে যেন কোনো প্রশ্নের জন্ম না হয় সেজন্য বন্ধুসভার সহসভাপতি সুনেন্টু চাকমা দায়িত্ব নিয়েছে, প্রতিদিন কে সাহায্য দিলেন এবং কত টাকা দিলেন তা ফেসবুকের মাধ্যমে নিয়মিত জানাবে। আর চিকিৎসায় কত খরচ হচ্ছে তারও একটা হিসাব প্রকাশ করা হবে। আশার কথা ফেসবুকে সুমনার চিকিৎসার কথা জানানোর পর থেকে অনেক মানবতাবাদী ও হৃদয়বান ব্যক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন। আশা করছি, আমরা ব্যর্থ হবো না।
সুমনা চাকমা : আলোর পথের যাত্রী
আমাদের ছেলেমেয়েদের যেখানে প্রতিদিন গাড়িতে করে বিদালয়ে আনা নেওয়া, শিক্ষক ঠিক করে পড়াশোনার ব্যবস্থা করাসহ সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরও পড়াশোনায় মনযোগী করতে হিমশিম খেতে হয় সেখানে অক্ষরজ্ঞানহীন বাবা মার সন্তান দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সুমনা চকমা নিজে নিজে কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে প্রতিদিন পড়াশোনা করে। এই বয়সে সে বুঝতে শিখেছে পড়াশোনা করতে হবে। কিন্তু তার সেই উৎসাহ কাল হয়ে দাড়িয়েছে। কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা করে সুমনা আলোর পথের যাত্রী হতে গিয়ে যেন অন্ধকার তাকে ঘিরে ধরেছে। এখন সেই অন্ধকার দূর করতে, সুমনাকে আলোর পথের যাত্রী করতে আমাদের সবার সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। আমরা যদি সবাই মানবতার জয়গানে সুর মেলায় সুমনার জীবনে আলো আসবেই।
আমরা মানবতার জয় দেখেছি অনেক বার। একতার জয় অবশ্যম্ভাবী তা জানি। মানুষের একান্ত ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা বৃথা যায় না তাও জানি। সেই বিশ্বাস এবং মানুষের প্রতি, মানবতার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা থেকে সকল প্রবাসী ও দেশের বন্ধুদের কাছে অনুরোধ আসুন সুমনার হাত ধরে আমরা আরও একবার মানবতার জয়গানে মুখরিত হয়ে উঠি।
যোগাযোগ :
হরি কিশোর চাকমা, মোবাইল : ০১৫৫০৬০৯৩০৪/০১৭১৩১০৭২৮২
সুবিমল চাকমা, মোবাইল : ০১৮২০৩৫০১২৫
অমর চাকমা, মোবাইল : ০১৮৩৮৪৯২৫৫০
সাহায্য পাঠানোর বিকাশ নাম্বার : ০১৮১২০৬৬৯১০ (পার্সোনাল)
বিশেষ দ্রষ্টব্য :বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠানোর সময় ফোন করে নিশ্চিত হতে অনুরোধ করা গেল। প্রবাসী বন্ধুদের ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানোর অনুরোধ করা গেল।

অগ্নিদগ্ধ সুমনা চাকমা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুমনা চাকমা ও তার বাবা মি. তপন চাকমা

No comments
Post a Comment