দুই বিহারের হামলা ও ভাংচুর; ৩৯৫টি পরিবার বাস্তুচ্যুত খাগড়াছড়িতে সাজানো নাটকে।

মনুদাস পাড়া বৌদ্ধ বিহারের ক্ষতিগ্রস্থ বৃহৎ বুদ্ধমূর্তি অপহরণের সাজানো নাটকে এবার বিহারে হামলা হলো পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা তাইন্দঙে মোটর সাইকেল চালক মো. কামাল উদ্দীন (৩২)এর অপহরনের পূর্ব পরিকল্পিত সাজানো নাটকে গত শনিবার পার্বত্য জেলার বহিরাগত সেটলার বাঙালি কর্তৃক আদিবাসী বৌদ্ধ গ্রামে হামলা, বাড়ি ঘরে আগুন ও লুট পাটের সাথে দুটি বিহারেও ভাংচুর-লুটপাট করা হয়েছে।(খবর বিডিনিউ২৪.কম) ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার বিহার দুটি হচ্ছে সর্বেশ্বরপাড়া জনশক্তি বৌদ্ধ বিহার ও মনুদাস পাড়া বৌদ্ধ বিহার। হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ ও লুটপাট হওয়া সর্বেশ্বরপাড়া জনশক্তি বৌদ্ধ বিহার স্থানীয় চাকমা বৌদ্ধদের মাঝে ঐতিহ্যের প্রতীক ছিল। ১৯৭৩ সালে এ বিহারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া মনুদাস পাড়া বৌদ্ধ বিহারের বৃহৎ বুদ্ধমূর্তির ডানহাত ভেঙ্গে দিয়েছে দুবৃত্তরা। স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ জানায়, মোটর সাইকেল চালক কামাল অপহরণ ছিল সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। ইতিমধ্যে সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ সুপার শেখ মিজানুর রহমান। উল্লেখ্য গত শনিবার দুপুরে মোটরসাইকেল চালক মো. কামাল উদ্দীনকে (৩২) অপহরণের গুঞ্জন শুরু হলে সেটেলার বাঙালি দুর্বৃত্তরা আদিবাসী বৌদ্ধদের উপর হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।এসময় প্রাণ বাঁচাতে এলাকার হেডম্যানপাড়ার ১৪৩, বাত্তি টিলার ২৩, পোড়াবাড়িপাড়ার ৫৯ ও লাইপো কার্বারিপাড়ার ১৭০টি পরিবার পানছড়ি উপজেলার নবরত্ন কার্বারিপাড়া,রহিন্দ্রপাড়া, প্রফুল্লপাড়া ও জিরানীহলা মারমাপাড়াসহ সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রয় নেয়। এ ঘটনায় চারটি আদিবাসী গ্রামের ৩৯৫টি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। গত শনিবার খাগছড়িতে সংগঠিত এই ঘটনায় বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ছিল নিশ্চুপ। সরকারের পক্ষ থেকেও কোন মন্তব্য ও তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় নি। পর্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধদের উপর সাম্প্রদায়িকতার নামে হত্যা,অগ্নি সংযোগ,লুটপাট, ধর্ষণ নিয়মিত ঘটনা হলেও সরকারের অবস্থান অনেকটা অন্য কোন দেশের হঠাৎ সংগঠিত কোন ঘটনার পররাষ্ট্র নীতির ন্যায়। আমরা ধম্মইনফোও আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে বার বার চেষ্টা করেও সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেনি। বৌদ্ধ বিহারে হামলা, ভাংচুর ও শত শত বৌদ্ধ পরিবার বাস্তুচ্যুত হওয়ায় ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি ও বাস্তুহারা পরিবাগুলোর পুনর্বাসন এবং বিহার দুটি সংস্কার এবং পুনর্নির্মাণে সরকারি সহযোগিতা হিলচাদিগাং কামনা করছে।

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.