যুদ্ধ হলে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অস্ত্র প্রয়োগ এবং বিপুল ধ্বংসলীলা

যুক্তরাষ্ট্র যদি তার এশিয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে সঙ্গে নিয়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর চড়াও হয় তাতেও যুদ্ধ জয় অনেকটাই অসম্ভব।
এমনকি মনে করা হচ্ছে, যুদ্ধ যদি শুরু হয়েই যায়; মানব ইতিহাসে অস্ত্রের সর্বোচ্চ প্রয়োগের পাশাপাশি বিপুল ধ্বংসলীলা দেখবে বিশ্ব। তাতে যে শুধু উত্তর কোরিয়াই ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয়। সমানভাবে ক্ষতির শিকার হবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররাও।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এ অঞ্চলে অবলীলায় পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। কেননা, উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু বোমা ব্যবহার করলে সমানভাবে ক্ষতির শিকার হবে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বন্ধুরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া এবং বিশ্বের অন্যতম সুপারপাওয়ার চীন। কিন্তু সেই ঝুঁকি নেই উত্তর কোরিয়ার সামনে! অবশ্য, এরই মধ্যে বিকল্পও চিন্তা করে রেখেছে মার্কিনিরা।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সাং এর ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে শক্তির গভীরতা এরই মধ্যে দেখিয়েছে দেশটি, যা বিবিসিতে লাইভ পর্যন্ত করা হয়। নর্থ কোরিয়ার স্বাভাবিকতায় যা বিরল। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদেরকে নিজশক্তির জানান দিতেই নর্থ কোরিয়ার এত আয়োজন।
দেশটির হাতে রয়েছে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালাস্টিক মিসাইল, যা কিনা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় লক্ষ্যবস্তুকে টার্গেট করতে সক্ষম। এ ছাড়াও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে পারমাণবিক আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষুদ্র সংস্করণের নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড অর্জনের দাবি করে রেখেছে দেশটি। তাই মার্কিনিদের আশঙ্কাও কিন্তু কম নয়।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, নর্থ কোরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। পারমাণবিক পরীক্ষার পরবর্তী পদক্ষেপ যদি নেয় উত্তর কোরিয়া তাহলে যুক্তরাষ্ট্র প্রচলিত অস্ত্র দিয়েই এ হামলা চালাবে।
কানাডাভিত্তিক গ্লোবাল রিসার্চ এক প্রতিবেদনে বলেছে, উত্তর কোরিয়া ও ইরানে ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এমওএবি-র (মাদার অব অল বোম্বস) চেয়ে বড় বোমা তৈরি করেছে।
পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে, গত সোমবার উত্তর কোরিয়ার জলসীমা অভিমুখে যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা সম্পন্ন নৌবহর পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। জাপানি যুদ্ধজাহাজও এই বহরের সঙ্গে যোগ দেবে এমন ঘোষণাও এসেছে।
এর মধ্যেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স প্রথমবারের এশিয়া সফরে রবিবার দক্ষিণ কোরিয়া আসছেন।
বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছে উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্র চীন। তারা এরই মধ্যে সৃষ্ট সংকট নিরসনে সহযোগিতা চেয়ে রাশিয়ার দ্বারস্থ হয়েছে। 
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ অনলাইন ১৬ এপ্রিল, ২০১৭ ১৫:০২


No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.