১৪টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ
বরগুনার তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চন্দনতলা গ্রামের ১৪টি
হিন্দু পরিবারকে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যুবলীগের এক
নেতা ও তাঁর বড় ভাই সন্ত্রাসীদের দিয়ে এসব পরিবারকে উচ্ছেদ করেছেন বলে
অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের কর্তাব্যক্তিরা হলেন চন্দনতলা গ্রামের হরেন কান্ত, নিলা রানী সরকার, যাদব চন্দ্র সরকার, ধীরেন সরকার, মাধব সরকার, সুভাষ চন্দ্র সরকার, রমেশ চন্দ্র সরকার, বাবুল চন্দ্র সরকার, কার্তিক সরকার, রিপন সরকার, জিতেন্দ্র সরকার, সুমন্ত সরকার, রণজিৎ সরকার ও শ্যামল সরকার। পেশায় তাঁরা কৃষক ও ক্ষুদ্রব্যবসায়ী। একই স্থানে পাশাপাশি বসবাসকারী এসব পরিবারের বাড়ির জমিসহ প্রায় ৪০ একর কৃষি জমি রয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৩ সালের শুরুতে সুমন্ত সরকার, রণজিৎ সরকার ও শ্যামল সরকার ভিটা ছেড়ে বরগুনা শহরে আশ্রয় নেন। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে জিতেন সরকার ও বাবুল রায়ের পরিবার ভিটাছাড়া হয়। গত ১২ মার্চ গ্রামের অন্য নয়জনের পরিবারও এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এর মধ্যে সাতটি পরিবার বরগুনা শহরে ও দুটি পরিবার তালতলীর ছোটবগি আবাসন প্রকল্পে আশ্রয় নিয়েছে। ১৩ মার্চ নয়টি পরিবারের ঘরদোর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল ও গাছপালা লুট করা হয়। ২৩ মার্চ এ ঘটনায় যাদব চন্দ্র সরকার আবদুর রশিদ আকনকে প্রধান আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে তালতলী থানায় একটি মামলা করেন। ওই দিনই রশিদ আকনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ১২ মার্চ রাতে নয়টি পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার পর ১৩ মার্চ সকালে আবদুর রশিদ, যুবলীগের নেতা জাকির হোসেন সরদার ও তাঁর ভাই আবদুস সালাম সরদারের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল পরিবারগুলোর বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয় এবং সব মালামাল লুট করে। সন্ত্রাসীরা বাড়ির বড় বড় গাছও কেটে নিয়ে যায়।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পাশাপাশি বসবাসকারী ১৪টি হিন্দু পরিবারের বসতভিটা শূন্য পড়ে আছে। শূন্য ভিটার ওপর মাটির তৈজসপত্র, রান্নার চুলা ও কিছু মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
ভুক্তভোগী শেফালী রানী (৫০) বলেন, ‘ওরা আমাগো সব কাইড়্যা নিয়া নিঃস্ব করছে। এহন খালি মোগো জীবনটা ছাড়া কিছু নাই। এমন জীবন দিয়া আমরা কি করমু।’
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ বরগুনা জেলা যুবলীগের সহসভাপতি পরিচয়দানকারী জাকির হোসেন ও আবদুস সালাম এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আবদুর রশিদ ও তার বাহিনীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব হিন্দু পরিবারের সদস্যদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিলেন।
জানতে চাইলে বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান মহারাজ প্রথম আলোকে বলেন, জাকির হোসেন আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও জেলা যুবলীগের কমিটির কেউ নন। পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম পাটোয়ারি বলেন, ‘জাকির সরদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন সন্ত্রাসী। জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। ওই নেতাদের সম্মানার্থেই জাকিরকে সংগঠনের সদস্য পদ দিয়েছিলাম।’
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘পুরো বিষয়টিতে আমরা মর্মাহত।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাকির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মূল দরজা তালাবদ্ধ। আবদুস সালামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সুসজ্জিত দোতলা পাকা বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুঁলছে। প্রতিবেশীরা জানান, ২৩ মার্চের পর থেকে তাঁরা ঘরে তালা লাগিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। মুঠোফোনে জাকির হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘আবদুর রশিদের কোনো দোষ নাই। কারণ, হিন্দুরা নিজেরাই ঘরবাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছে।’
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার মূল হোতাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এর পেছনে আরও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, হিন্দু পরিবারগুলোকে তাদের নিজ ভিটায় ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের কর্তাব্যক্তিরা হলেন চন্দনতলা গ্রামের হরেন কান্ত, নিলা রানী সরকার, যাদব চন্দ্র সরকার, ধীরেন সরকার, মাধব সরকার, সুভাষ চন্দ্র সরকার, রমেশ চন্দ্র সরকার, বাবুল চন্দ্র সরকার, কার্তিক সরকার, রিপন সরকার, জিতেন্দ্র সরকার, সুমন্ত সরকার, রণজিৎ সরকার ও শ্যামল সরকার। পেশায় তাঁরা কৃষক ও ক্ষুদ্রব্যবসায়ী। একই স্থানে পাশাপাশি বসবাসকারী এসব পরিবারের বাড়ির জমিসহ প্রায় ৪০ একর কৃষি জমি রয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৩ সালের শুরুতে সুমন্ত সরকার, রণজিৎ সরকার ও শ্যামল সরকার ভিটা ছেড়ে বরগুনা শহরে আশ্রয় নেন। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে জিতেন সরকার ও বাবুল রায়ের পরিবার ভিটাছাড়া হয়। গত ১২ মার্চ গ্রামের অন্য নয়জনের পরিবারও এলাকা ছেড়ে চলে যায়। এর মধ্যে সাতটি পরিবার বরগুনা শহরে ও দুটি পরিবার তালতলীর ছোটবগি আবাসন প্রকল্পে আশ্রয় নিয়েছে। ১৩ মার্চ নয়টি পরিবারের ঘরদোর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল ও গাছপালা লুট করা হয়। ২৩ মার্চ এ ঘটনায় যাদব চন্দ্র সরকার আবদুর রশিদ আকনকে প্রধান আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে তালতলী থানায় একটি মামলা করেন। ওই দিনই রশিদ আকনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ১২ মার্চ রাতে নয়টি পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার পর ১৩ মার্চ সকালে আবদুর রশিদ, যুবলীগের নেতা জাকির হোসেন সরদার ও তাঁর ভাই আবদুস সালাম সরদারের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল পরিবারগুলোর বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয় এবং সব মালামাল লুট করে। সন্ত্রাসীরা বাড়ির বড় বড় গাছও কেটে নিয়ে যায়।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পাশাপাশি বসবাসকারী ১৪টি হিন্দু পরিবারের বসতভিটা শূন্য পড়ে আছে। শূন্য ভিটার ওপর মাটির তৈজসপত্র, রান্নার চুলা ও কিছু মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
ভুক্তভোগী শেফালী রানী (৫০) বলেন, ‘ওরা আমাগো সব কাইড়্যা নিয়া নিঃস্ব করছে। এহন খালি মোগো জীবনটা ছাড়া কিছু নাই। এমন জীবন দিয়া আমরা কি করমু।’
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ বরগুনা জেলা যুবলীগের সহসভাপতি পরিচয়দানকারী জাকির হোসেন ও আবদুস সালাম এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আবদুর রশিদ ও তার বাহিনীকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব হিন্দু পরিবারের সদস্যদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিলেন।
জানতে চাইলে বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান মহারাজ প্রথম আলোকে বলেন, জাকির হোসেন আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও জেলা যুবলীগের কমিটির কেউ নন। পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম পাটোয়ারি বলেন, ‘জাকির সরদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন সন্ত্রাসী। জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। ওই নেতাদের সম্মানার্থেই জাকিরকে সংগঠনের সদস্য পদ দিয়েছিলাম।’
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘পুরো বিষয়টিতে আমরা মর্মাহত।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাকির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মূল দরজা তালাবদ্ধ। আবদুস সালামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সুসজ্জিত দোতলা পাকা বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুঁলছে। প্রতিবেশীরা জানান, ২৩ মার্চের পর থেকে তাঁরা ঘরে তালা লাগিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। মুঠোফোনে জাকির হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘আবদুর রশিদের কোনো দোষ নাই। কারণ, হিন্দুরা নিজেরাই ঘরবাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছে।’
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার মূল হোতাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এর পেছনে আরও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, হিন্দু পরিবারগুলোকে তাদের নিজ ভিটায় ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো,|
আপডেট: ০২:০৩, মার্চ ৩০, ২০১৫
| প্রিন্ট সংস্করণ
No comments
Post a Comment