রাউজানে বৌদ্ধ ও হিন্দু পরিবারে নির্বিচারে গণডাকাতিঃ নিহত ১ আহত ৯

রাউজানে বৌদ্ধ ও হিন্দু পরিবারে নির্বিচারে গণডাকাতিঃ নিহত ১ আহত ৯

নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গল, ১৮ নভেম্বর, ২০১৪
রাউজানে গণডাকাতির ঘটনায় ডাকাতের গুলিতে সুমন দাশ (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। গণডাকাতির সময় ছুরির কোপে ও লাঠিপেটায় আহত হয়েছে আরো ৯ নারী পুরুষ যার মধ্যে ৪ জন বৌদ্ধ।  সোমবার  দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল এখান থেকে লুট করে নিয়ে গেছে পরিবারের সদস্যদের হাতে,গলায় থাকা আনুমানিক আট ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন।
এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পূর্ব বিনাজুরী গ্রামের হিন্দু ও বড়ুয়া পাড়ায় আধঘন্টার ব্যবধানে। ডাকাতের গুলিতে নিহত সুমন দাশ ওই পাড়ার মৃত ঝুনু দাশের পুত্র।
ডাকাত আক্রান্ত গ্রামের লোকজন জানিয়েছে ডাকাত দল প্রথমে হানা দেয় পূর্ব বিনাজুরীর বড়ুয়া পাড়ার বিরেন্দ্র মুন্সির বাড়ির কল্যাণ বড়ুয়ার ঘরে। এখান থেকে এসে গণ ডাকাতির ঘটনা ঘটায় আনুমানিক তিন’শ গজ দুরে দাশ পাড়ায় যোগেশ চৌকিদারের বাড়ীতে।
যেভাবে ঘটে ডাকাতি-হত্যাঃ প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছে, ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্য ছিল মূখোশধারী। তাদের পড়নে ছিল হাফ প্যান্ট, সংখ্যায় ছিল ১০/১৫জন। ডাকাত দলটি দাশ পাড়ার ডুকে প্রথমে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে সুমন দাশের ঘরে। এসময় গৃহকর্তা সুমন দাশ বাঁধা দিতে গেলে তাকে কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে আহত করার পর ঘরের ভিতর গুলি করে হত্যা করে। এরপর তারা একে একে গোটা বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। তারা এখানে প্রায় একঘন্টা তাণ্ডব চালানো কালে বাড়ির নারী পুরুষদের চিৎকার থামাতে ব্যাপক হারে মারধর করে। ফাঁকে ফাঁকে নারী সদস্যদের হাতে, গলায় থাকা আনুমানিক ছয়-সাত ভড়ি স্বর্ণালংকার, নগদ ছয় হাজার টাকা ও কয়েকটি মোবাইল ফোন লুটে নেয়। এই বাড়িতে ডাকাত দলে চুরিকাঘাত ও পিটুনীতে আহত হয় মনমোহন দাশ, জয় মোহন দাশ, ঝুন্টু দাশসহ আরো কয়েকজন। ডাকাত আক্রান্ত পরিবার সমূহ হচ্ছে মনমোহন দাশ, জয় মোহন দাশ, দিলিপ দাশ, নেপাল দাশ, মন্টু দাশ, ঝুন্টু দাশ, টুনটু দাশের পরিবার।
এলাকার লোকজন বলেছে গণডাকাতির এই ঘটনার আধঘন্টা আগে ডাকাতদলটি প্রায় তিন’শ গজ দুরের বড়ুয়া পাড়ার কল্যাণ বড়ুয়ার ঘরে ডাকাতি করে এসেছিল। ওই ঘরের বেড়া কেটে প্রবেশ করে ডাকাতি করেছিল তারা। ঐ বাড়িতে সদস্যরা জানায় তড়িঘড়ি করে প্রবেশের পর পরিবারের সদস্যদের জিম্মী করে ফেলে ডাকাতদল। ওই ঘটনায় গৃহস্থের লোকজন ডাকাতদের প্রতিরোধ করার চেষ্টায় চিৎকার করতে থাকলে ডাকাতরা তাদেরকেও লাঠি পেটা ও ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এতে আহত হয় কল্যাণ বড়ুয়া (৭০), লিটু বড়ুয়া (২৬), পুষ্পা বড়ুয়া (৪৫) ও সুবর্ণা বড়ুয়া (২২) নামের ৪ জন। ডাকাত দল এই পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ তিন হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ সময় তারা এক রাউণ্ড ফাঁকা গুলিও ছোঁড়ে।
http://www.banglapostbd.com/wp-content/uploads/2014/11/149-300x179.jpg
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডাকাতির দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুলাহ ও সহকারি পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) আ.ফ.ম.নিজাম উদ্দিন। থানা পুলিশ ডাকাতের গুলিতে নিহত সুমন দাশের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে দুটি ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কারন অনুসন্ধানে পুলিশ ও এলাকাবাসীঃ এদিকে, পূর্ব বিনাজুরী গ্রামের হিন্দু ও বৌদ্ধ পাড়ায় গত ১৭ নভেম্বর রাতে সংঘটিত দুটি ডাকাতির ঘটনার নেপথ্যে কারণ বিশ্লেষণে নেমেছে এলাকার লোকজন ও পুলিশ। স্থানীয়রা বলেছে রাউজানের সর্বত্র দীর্ঘদিন যাবত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে সম্প্রতির ভাব অতীতের চাইতে সুদৃঢ় অবস্থায় আছে। এলাকাবাসীর ধারণা এই পরিবেশকে বিনষ্ট ও এখানে আতংক সৃষ্টিতে সংঘবদ্ধ চক্র এই ঘটনা ঘটাতে পারে।
স্থানীয়দের অনেকেই আবার মনে করছেন, যে বাড়ি গুলোতে ডাকাতদল হানা দিয়ে গণডাকাতির তাণ্ডব চালিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে সেসব বাড়ির আসে পাশের অনেক সচ্ছল পরিবারের বাড়ি ঘর ছিল। ডাকাতদল সম্পদ লুটে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঘটনা ঘটাতে এলে কেন ডাকাতির জন্য অসচ্ছল পরিবার সমূহ (ধোপী পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের বাড়ি) বেঁচে নিল এই জিজ্ঞাসা সবার মনে ঘুরেফিরে আসছে। অনেকের মনে আবার প্রশ্ন কেনই বা সামান্য প্রতিরোধের শিকার হয়ে যুবক সুমনকে এলোপাতারি কোপিয়ে আহত করার পরও গুলি করে হত্যা করা হলো। খুনের ঘটনা ঘটিয়ে কেনই বা ডাকাত দলের সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে নারী পুরুষের উপর হামলা বজায় রেখে লুটপাট করেছিল গণহারে। হত্যাকাণ্ডের শিকার সুমনের বড় ভাই মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী হলেও দুর্বল ছিল অর্থনৈতিক ভাবে। প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী সুবর্ণা দাশ বলেছেন সুমন ফটিকছড়ি এলাকায় ধোপা (ধোপী) দোকানী ছিল। মাস খানেক আগে দোকান ছেড়ে এসে ওমান যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সুমন। আগামী মাসে তার ওমানে চলে যাওয়ার কথা। এলাকার ইউপি সদস্য টুনু বড়ুয়া জানান, সুমন অবিবাহিত ছিলেন। তিনি এলাকায় ভাল ছেলে হিসাবে পরিচিত। কোনো রাজনীতি দলের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন না।
সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের লাশ সামনে রেখে তার মা নিলু রানী পুত্রকে জড়িয়ে ধরে আহজারি করছে। সাথে চলছে স্বজনদের আহজারি। ডাকাত আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা ঘটনা বর্ণণা দিতে গিয়ে বলেছেন, এটি কোনো ডাকাতির ঘটনা বলে তাদের মনে হচ্ছে না। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্যকোনো কারণ থাকতে পারে বলে তাদের সন্দেহ। এলাকার অপর একটি সূত্র জানিয়েছে বড়ুয়া পাড়ায় ডাকাতির সময় শোরগোল ছিল। ফাঁকা গুলির শব্দও শুনা গেছে। আধঘন্টার ব্যবধানে মাত্র চার’শ গজের মধ্যে হিন্দু পাড়ায়(দাশ পাড়ায়) গণডাকাতি চলাকালে মারধর ও গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই পাড়ায় আক্রান্ত নারী পুরুষের হৈছৈ অনেকদুর পর্যন্ত শোনা যায়। কিন্তু পার্শ্ববর্তী এলাকা ছিল নিরব নিস্তব্ধ। এই গণডাকাতির ঘটনার নেপথ্যে রহস্য উদঘাটন করতে এখন মাঠে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ জানান, কেন ডাকাত দল অসচ্ছল লোকজনের বাড়িতে হানা দিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটালো তা বিশ্লেষন করে দেখা হচ্ছে। দ্রুত এর কারণ উদঘাটন করে দায়িদের গ্রেফতার করা হবে।
ডাকাতের গুলিতে নিহত সুমন দাশের স্বজনদের আহাজারী: নিহত সুমন দাশের মাতা লিলু রাণী দাশ বিলাপ করতে করতে বলেছেন, আমার সব সহায় সম্বল নিয়ে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও। আমি আর কিছু চাই না। সুমনকে চাই। একই ভাবে দেখতে আসা স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তারা ডাকাতদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
- See more at: http://dhammainfo.com/news/bangladesh/1913#sthash.cGknS4jN.dpuf
রাউজানে গণডাকাতির ঘটনায় ডাকাতের গুলিতে সুমন দাশ (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। গণডাকাতির সময় ছুরির কোপে ও লাঠিপেটায় আহত হয়েছে আরো ৯ নারী পুরুষ যার মধ্যে ৪ জন বৌদ্ধ।  সোমবার  দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল এখান থেকে লুট করে নিয়ে গেছে পরিবারের সদস্যদের হাতে,গলায় থাকা আনুমানিক আট ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন।

এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পূর্ব বিনাজুরী গ্রামের হিন্দু ও বড়ুয়া পাড়ায় আধঘন্টার ব্যবধানে। ডাকাতের গুলিতে নিহত সুমন দাশ ওই পাড়ার মৃত ঝুনু দাশের পুত্র।

ডাকাত আক্রান্ত গ্রামের লোকজন জানিয়েছে ডাকাত দল প্রথমে হানা দেয় পূর্ব বিনাজুরীর বড়ুয়া পাড়ার বিরেন্দ্র মুন্সির বাড়ির কল্যাণ বড়ুয়ার ঘরে। এখান থেকে এসে গণ ডাকাতির ঘটনা ঘটায় আনুমানিক তিন’শ গজ দুরে দাশ পাড়ায় যোগেশ চৌকিদারের বাড়ীতে।

যেভাবে ঘটে ডাকাতি-হত্যাঃ প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছে, ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্য ছিল মূখোশধারী। তাদের পড়নে ছিল হাফ প্যান্ট, সংখ্যায় ছিল ১০/১৫জন। ডাকাত দলটি দাশ পাড়ার ডুকে প্রথমে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে সুমন দাশের ঘরে। এসময় গৃহকর্তা সুমন দাশ বাঁধা দিতে গেলে তাকে কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে আহত করার পর ঘরের ভিতর গুলি করে হত্যা করে। এরপর তারা একে একে গোটা বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। তারা এখানে প্রায় একঘন্টা তাণ্ডব চালানো কালে বাড়ির নারী পুরুষদের চিৎকার থামাতে ব্যাপক হারে মারধর করে। ফাঁকে ফাঁকে নারী সদস্যদের হাতে, গলায় থাকা আনুমানিক ছয়-সাত ভড়ি স্বর্ণালংকার, নগদ ছয় হাজার টাকা ও কয়েকটি মোবাইল ফোন লুটে নেয়। এই বাড়িতে ডাকাত দলে চুরিকাঘাত ও পিটুনীতে আহত হয় মনমোহন দাশ, জয় মোহন দাশ, ঝুন্টু দাশসহ আরো কয়েকজন। ডাকাত আক্রান্ত পরিবার সমূহ হচ্ছে মনমোহন দাশ, জয় মোহন দাশ, দিলিপ দাশ, নেপাল দাশ, মন্টু দাশ, ঝুন্টু দাশ, টুনটু দাশের পরিবার।

এলাকার লোকজন বলেছে গণডাকাতির এই ঘটনার আধঘন্টা আগে ডাকাতদলটি প্রায় তিন’শ গজ দুরের বড়ুয়া পাড়ার কল্যাণ বড়ুয়ার ঘরে ডাকাতি করে এসেছিল। ওই ঘরের বেড়া কেটে প্রবেশ করে ডাকাতি করেছিল তারা। ঐ বাড়িতে সদস্যরা জানায় তড়িঘড়ি করে প্রবেশের পর পরিবারের সদস্যদের জিম্মী করে ফেলে ডাকাতদল। ওই ঘটনায় গৃহস্থের লোকজন ডাকাতদের প্রতিরোধ করার চেষ্টায় চিৎকার করতে থাকলে ডাকাতরা তাদেরকেও লাঠি পেটা ও ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এতে আহত হয় কল্যাণ বড়ুয়া (৭০), লিটু বড়ুয়া (২৬), পুষ্পা বড়ুয়া (৪৫) ও সুবর্ণা বড়ুয়া (২২) নামের ৪ জন। ডাকাত দল এই পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ তিন হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ সময় তারা এক রাউণ্ড ফাঁকা গুলিও ছোঁড়ে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে ডাকাতির দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুলাহ ও সহকারি পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) আ.ফ.ম.নিজাম উদ্দিন। থানা পুলিশ ডাকাতের গুলিতে নিহত সুমন দাশের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে দুটি ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

কারন অনুসন্ধানে পুলিশ ও এলাকাবাসীঃ এদিকে, পূর্ব বিনাজুরী গ্রামের হিন্দু ও বৌদ্ধ পাড়ায় গত ১৭ নভেম্বর রাতে সংঘটিত দুটি ডাকাতির ঘটনার নেপথ্যে কারণ বিশ্লেষণে নেমেছে এলাকার লোকজন ও পুলিশ। স্থানীয়রা বলেছে রাউজানের সর্বত্র দীর্ঘদিন যাবত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে সম্প্রতির ভাব অতীতের চাইতে সুদৃঢ় অবস্থায় আছে। এলাকাবাসীর ধারণা এই পরিবেশকে বিনষ্ট ও এখানে আতংক সৃষ্টিতে সংঘবদ্ধ চক্র এই ঘটনা ঘটাতে পারে।

স্থানীয়দের অনেকেই আবার মনে করছেন, যে বাড়ি গুলোতে ডাকাতদল হানা দিয়ে গণডাকাতির তাণ্ডব চালিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে সেসব বাড়ির আসে পাশের অনেক সচ্ছল পরিবারের বাড়ি ঘর ছিল। ডাকাতদল সম্পদ লুটে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ঘটনা ঘটাতে এলে কেন ডাকাতির জন্য অসচ্ছল পরিবার সমূহ (ধোপী পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের বাড়ি) বেঁচে নিল এই জিজ্ঞাসা সবার মনে ঘুরেফিরে আসছে। অনেকের মনে আবার প্রশ্ন কেনই বা সামান্য প্রতিরোধের শিকার হয়ে যুবক সুমনকে এলোপাতারি কোপিয়ে আহত করার পরও গুলি করে হত্যা করা হলো। খুনের ঘটনা ঘটিয়ে কেনই বা ডাকাত দলের সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে নারী পুরুষের উপর হামলা বজায় রেখে লুটপাট করেছিল গণহারে। হত্যাকাণ্ডের শিকার সুমনের বড় ভাই মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী হলেও দুর্বল ছিল অর্থনৈতিক ভাবে। প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রী সুবর্ণা দাশ বলেছেন সুমন ফটিকছড়ি এলাকায় ধোপা (ধোপী) দোকানী ছিল। মাস খানেক আগে দোকান ছেড়ে এসে ওমান যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সুমন। আগামী মাসে তার ওমানে চলে যাওয়ার কথা। এলাকার ইউপি সদস্য টুনু বড়ুয়া জানান, সুমন অবিবাহিত ছিলেন। তিনি এলাকায় ভাল ছেলে হিসাবে পরিচিত। কোনো রাজনীতি দলের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন না।

সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের লাশ সামনে রেখে তার মা নিলু রানী পুত্রকে জড়িয়ে ধরে আহজারি করছে। সাথে চলছে স্বজনদের আহজারি। ডাকাত আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা ঘটনা বর্ণণা দিতে গিয়ে বলেছেন, এটি কোনো ডাকাতির ঘটনা বলে তাদের মনে হচ্ছে না। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্যকোনো কারণ থাকতে পারে বলে তাদের সন্দেহ। এলাকার অপর একটি সূত্র জানিয়েছে বড়ুয়া পাড়ায় ডাকাতির সময় শোরগোল ছিল। ফাঁকা গুলির শব্দও শুনা গেছে। আধঘন্টার ব্যবধানে মাত্র চার’শ গজের মধ্যে হিন্দু পাড়ায়(দাশ পাড়ায়) গণডাকাতি চলাকালে মারধর ও গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই পাড়ায় আক্রান্ত নারী পুরুষের হৈছৈ অনেকদুর পর্যন্ত শোনা যায়। কিন্তু পার্শ্ববর্তী এলাকা ছিল নিরব নিস্তব্ধ। এই গণডাকাতির ঘটনার নেপথ্যে রহস্য উদঘাটন করতে এখন মাঠে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ জানান, কেন ডাকাত দল অসচ্ছল লোকজনের বাড়িতে হানা দিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটালো তা বিশ্লেষন করে দেখা হচ্ছে। দ্রুত এর কারণ উদঘাটন করে দায়িদের গ্রেফতার করা হবে।

ডাকাতের গুলিতে নিহত সুমন দাশের স্বজনদের আহাজারী: নিহত সুমন দাশের মাতা লিলু রাণী দাশ বিলাপ করতে করতে বলেছেন, আমার সব সহায় সম্বল নিয়ে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও। আমি আর কিছু চাই না। সুমনকে চাই। একই ভাবে দেখতে আসা স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। তারা ডাকাতদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
সূত্র : ধম্মইনফো

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.