‘সংশোধিত বন আইন পাস হলে অধিকার হারাবে আদিবাসীরা’

দৈনিক প্রথম আলো : ৩০/০৬/২০১৩

জাতীয় সংসদে বিল আকারে উত্থাপিত সংশোধিত বন আইন পাস হলে বনের ওপর নির্ভশীল আদিবাসীরা অধিকার হারাবে। গত রোববার রাঙামাটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের নেতারা।

স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের সভাপতি গৌতম দেওয়ান। প্রস্তাবিত ‘অধিকতর সংশোধনকল্পে আনিত বন আইন (সংশোধন) বিল ২০১২’ জনবিরোধী আখ্যা দিয়ে এটি স্থগিত করার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, আন্তমন্ত্রণালয় সভার সুপারিশ অনুসারেই পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইনের সংশোধন আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে যে ১৩ দফা সংশোধনীর কথা বলা হয়েছে, আইনের ধারায় তা অবিকল রাখতে হবে। এসবসহ ছয় দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপিও পেশ করেন নেতারা।

গৌতম দেওয়ান বলেন, ১৬ জুন জাতীয় সংসদে তোলা বন আইন (সংশোধনী) বিলের অনেক ধারা নিয়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রস্তাবিত বন আইনের সংশোধনীতে সংযোজিত বিভিন্ন ধারা বনের ওপর বন বিভাগের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করবে। ফলে আইনের অপব্যবহার, বন উজাড় এবং বনবাসী ও আদিবাসীদের বনের ওপর অধিকার খর্ব হবে।

আন্তমন্ত্রণালয় সভায় গৃহীত ১৩ দফা সংশোধনী যথাযথভাবে প্রতিস্থাপন ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৩ পাস করা হলে ভূমি সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে আরও জটিল হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে উত্থাপিত ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, আদিবাসী ও বননির্ভর জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী ও প্রথাগত মালিকানাধীন ভূমি অধিগ্রহণ বন্ধ করা, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় গ্রামীণ সাধারণ বনসহ জনসাধারণ কর্তৃক সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনের আইনি স্বীকৃতি, প্রাকৃতিক বনে সামাজিক বনায়ন বন্ধ করা এবং আদিবাসী ও বনবাসীদের ঐতিহ্যগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে বন রক্ষা আইন প্রণয়ন করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শক্তিপদ ত্রিপুরা, ভবতোষ দেওয়ান, সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.